এখনই মুক্তি নয়। রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীদের সাজা মকুবের বিষয়টি আপাতত সাংবিধানিক বেঞ্চের উপরেই ছেড়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, হত্যাকারীদের মুক্তির ব্যাপারে তামিলনাড়ু সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেন্দ্র যে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে, সেই মামলার ফয়সালা করবে সাংবিধানিক বেঞ্চ। এই বিষয়ে বিবেচনা করার জন্য সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে সাতটি প্রশ্নও করেছে সর্বোচ্চ আদালত। আগামী তিন মাসের মধ্যে সাংবিধানিক বেঞ্চ তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তে যারপরনাই হতাশ দোষীদের পরিবার। অন্যতম অভিযুক্ত পেরারিবালনের মা অর্পুত্থামল বলেন, ‘‘আমি জানি না এখন কী বলব। আজ রায় শোনার জন্যই উদগ্রীব ছিলাম। আমাদের এই লড়াই ২৩ বছরের। জানি না আরও কত দিন লড়াইটা চালাতে হবে।’’ রায় নিয়ে হতাশা জানিয়েছে ডিএমকে-ও। দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা সেলভাগণপতি বলেন, ‘‘সংবিধানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত না হলেও মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে ঠেলায় আমরা হতাশ। এই বিষয়ে রায় দিতেই পারত সুপ্রিম কোর্ট।’’
১৯৯১-এ শ্রীপেরুমপুদুরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মারা যান ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। ঘটনার এগারো বছর পর শান্তন, মুরুগান ও পেরারিবালনকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এত বছরেও সেই আদেশ কার্যকর করে উঠতে পারেনি কেন্দ্র। দীর্ঘসূত্রিতার জন্য হত্যাকারীদের মধ্যে শান্তন, মুরুগান ও পেরারিবালনের ফাঁসির সাজা রদ করে চলতি বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদের যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনায় সুপ্রিম কোর্ট। এর পরেই ১৯ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নলিনী, রবার্ট পায়াস, জয়কুমার ও রবিচন্দ্রনের মুক্তির দাবি জানায় জয়ললিতা সরকার। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, কেন্দ্র দাবি না মানলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৫ ধারা প্রয়োগ করে রাজ্য সরকারই তাদের মুক্তি দেবে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নামমাত্র অনুমতি নেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে কেন্দ্র। এর পরেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি তামিলনাড়ু সরকারের সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।