মমতা-মুকুল সম্পর্কিত তথ্য সিবিআই-কে জানাতে চান কুণাল

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুকুল রায় সম্পর্কে এ বার আদালতের ভিতরেও সোচ্চার হলেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া এই সাংসদ এ দিন বলেন, দলের এই দুই নেতার সম্পর্কে তাঁর কাছে আরও দু’টি তথ্য আছে। তা তিনি সিবিআই-কে জানাতে চান। শুধু তা-ই নয়, জেলে গিয়ে সিবিআই যাতে তাঁকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার জন্য আদালতে আবেদন জানান তিনি। তাঁর এই আবেদনের ভিত্তিতে নগর দায়রা আদালতে সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক অরবিন্দ মিশ্র এই সাংসদের বয়ান রেকর্ড করার জন্য সিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ১৬:৪৪
Share:

আদালত চত্বরে কুণাল ঘোষ। সোমবার রণজিত্ নন্দীর তোলা ছবি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুকুল রায় সম্পর্কে এ বার আদালতের ভিতরেও সোচ্চার হলেন কুণাল ঘোষ।

Advertisement

তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া এই সাংসদ এ দিন বলেন, দলের এই দুই নেতার সম্পর্কে তাঁর কাছে আরও দু’টি তথ্য আছে। তা তিনি সিবিআই-কে জানাতে চান। শুধু তা-ই নয়, জেলে গিয়ে সিবিআই যাতে তাঁকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার জন্য আদালতে আবেদন জানান তিনি। তাঁর এই আবেদনের ভিত্তিতে নগর দায়রা আদালতে সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক অরবিন্দ মিশ্র এই সাংসদের বয়ান রেকর্ড করার জন্য সিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছেন।

এত দিন আদালতের বাইরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন কুণাল। কিন্তু এ দিন আদালতে দাঁড়িয়েই কুণাল বললেন, “সারদা মিডিয়ার সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” সরব হলেন দলের শীর্ষ নেতা মুকুল রায় এবং সারদা কাণ্ডে ধৃত মন্ত্রী মদন মিত্রের বিরুদ্ধেও।

Advertisement

এই দিন বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ কুণাল ঘোষকে বিচার ভবনে আনা হয়। তাঁর পরনে ছিল সাদা এবং ধুসর রঙের হাফহাতা জ্যাকেট, তার নীচে বেগুনি ফুলহাতা গেঞ্জি সঙ্গে ধুসর রঙের ট্র্যাকস্যুট, পায়ে সাদা স্নিকার। আদালতে এসে এই দিন কুণাল কোনও কথা বলেননি। শুধু সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে আদালতের ভিতরে ঢুকে যান। সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস-এর একটি মামলায় এ দিন সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখোপাধ্যায়, মনোজ নাগেল এবং কুণাল ঘোষকে আদালতে হাজির করানো হয়। এজলাসে প্রথমে মনোজ নাগেলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা তাঁর মক্কেলের কথা বিচারক অরবিন্দ মিশ্রের কাছে তোলেন।

তার পরেই কুণাল এজলাসে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে আছি। আমার নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলার আছে। আমি দেখছি একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি আদালতে দাঁড়িয়ে বলছেন। অথচ, আমার সঙ্গে কেন এই রকম করা হচ্ছে।” সিবিআই গ্রেফতার করার পরে আদালতে দাঁড়িয়ে নিজের হয়ে নিজেই সওয়াল করেছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র।

কুণাল এই দিন আদালতে জানান, এটা জীবন-মরণের সমস্যা। চার পাশ দেখে মনে হচ্ছে, যাঁদের হাতে টাকা আছে, রাজনৈতিক ক্ষমতা আছে, তাঁদের জন্য জেল এক রকম, বাকিদের জন্য অন্য রকম। এক জন তো হোটেলে আছেন। হাসপাতাল থেকে ফোনে কথা বলছেন। যে হাসপাতালে তিনি রোগী কল্যাণ সমিতির উচ্চ পদাধিকারী সেই হাসপাতালেই তাঁকে রাখা হচ্ছে। বিচারক তাঁকে বিষয়টি লিখিত দিতে বললে কুণাল জানান, কাউকে পুলিশ খাতির করে রাস্তা আটকে নিয়ে যাচ্ছে, আর আমি কথা বলতে গেলে আমায় মারছে।

এর পরেই কুণাল বলেন, “সারদা মিডিয়া থেকে যিনি সব চেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছেন তিনি এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। নিজেকে বাঁচানোর জন্য তিনি এই সব কাজ করছেন।” তাঁর দাবি, সারদার কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মদন মিত্র হোটেলে বসে আছেন। সেখান থেকেই সব জানতে পারছেন, পরে প্রভাব খাটাবেন।” এই মামলাগুলিকে আলাদা করে দেখার আর্জি জাানান তিনি।

এই মামলায় বিচারক সুদীপ্ত, কুণাল ও দেবযানীকে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মনোজ নাগেলের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, এই মামলায় তাঁর মক্কেলের নাম এফআইআরে নেই। অথচ তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। এই ব্যাপারে আগামী ২ জানুয়ারির মধ্যে সিবিআই-কে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement