কান্নায় ভেঙে পড়েছে পিন্টু মণ্ডলের পরিবার।
মুর্শিদাবাদে খুন হলেন এক তৃণমূল কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে মুর্শিদাবাদের গুধিয়ার মোড়ল পাড়ায়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম পিন্টু মণ্ডল (৩০)। জমি বিবাদের জেরেই এই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে পুলিশ। তবে তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষের কারণেও এই খুন হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল। যদিও এই অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়ে বিধানসভার পরিষদীয় সচিব তথা মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সভাপতি চাঁদ মহম্মদ বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। নিছকই গ্রাম্য বিবাদের জেরে এক তৃণমূল কর্মীকে খুন করা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় পিন্টু মণ্ডলকে। খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁরই প্রতিবেশী আলি আসগর মণ্ডল ওরফে খাইরুনের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, খাইরুন আগে পিডিএসের সক্রিয় কর্মী ছিল। পরে তৃণমূলে যোগ দেয়। দীর্ঘ দিন ধরে খাইরুনের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত নানা বিষয়ে বিবাদ চলছিল পিন্টুর। তাঁর পরিবারের অভিযোগ ওই দিন রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় খাইরুন ও তাঁর দলের লোকেরা। নিহতের দাদা মৈনুদ্দিন বলেন, “গতকাল রাতে খাওয়ার সময় পিন্টুকে ডেকে নিয়ে যায় কয়েক জন। এর পরে বোমা ফাটার আওয়াজ পাই। প্রতিবেশীদের ডাকে বাইরে গিয়ে দেখি ভাই রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছে।” প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, পিন্টুকে রাস্তায় ফেলে এলোপাথাড়ি কোপাচ্ছিল কয়েক জন দুষ্কৃতী। বাসিন্দাদের দেখেই পালিয়ে যায় তারা। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মৃত্যকালীন জবানবন্দিতে খাইরুন ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আনেন পিন্টু। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে নিহতের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ আনে খাইরুন ও তাঁর দলের লোকেরা। তাঁদের দাবি, বোমা বাঁধতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে পিন্টুর।
তদন্তে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, পিন্টু কলকাতায় কাজ করতেন। গুধিয়ায় তাঁর নিজস্ব জমি ছিল। এই জমির দখল নিয়েই খাইরুনের সঙ্গে তাঁর বিবাদ চলছিল। মুর্শিদাবাদের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি মহম্মদ আলি বলেন, “পিন্টু দলের সক্রিয় কর্মী ছিল। পারিবারিক বিবাদের জেরেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে শুনেছি।”
ছবি: গৌতম প্রামাণিক।