কোবানেতে আইএস জঙ্গিদের ঠেকাতে মার্কিন বিমান হানা। ছবি: এএফপি
ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের হাতে পতনের মুখে সিরিয়ার কোবানে শহর। আইএসকে ঠেকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন কোবানের কুর্দ মিলিশিয়ারা। এই অবস্থায়ও একা কোনও ব্যবস্থা নেবে না বলে জানিয়ে দিল তুরস্ক। বৃহস্পতিবার তুরস্কের বিদেশমন্ত্রী মেভলুট কাভুসোগ্লু এ কথা জানিয়েছেন। তবে সিরিয়ার সীমান্ত ঘেঁষা অঞ্চলে আকাশপথে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তুরস্ক।
এ দিন তুরস্কের বিদেশমন্ত্রী ন্যাটোর প্রধান জোন্স স্টোলটেনবার্গের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি বৈঠক করেন। প্রথম থেকেই মার্কিন নেতৃত্বে আইএস বিরোধী জোটে যোগ দিতে তুরস্কের দ্বিধা রয়েছে। যুদ্ধের প্রয়োজনে নিজেদের ন্যাটোর ঘাঁটি ব্যবহার করতে দিতেও রাজি হয়নি তুরস্ক। কিন্তু কোবানের পরিস্থিতিতে আইএস-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তুরস্কের উপরে আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
তুরস্কের সীমান্ত ঘেঁষা সিরিয়ার কোবানে প্রধানত কুর্দদের বাস ছিল। আইএস-এর অভিযানে সেই অঞ্চল থেকে প্রাণ বাঁচাতে দলে দলে কুর্দরা তুরস্কে ঢুকতে থাকেন। এমনিতেই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে অনেক শরণার্থী তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে শরর্ণাথীদের চাপ বাড়ে। কিন্তু এর পাশাপাশি কুর্দদের সঙ্গে তুর্কদের দীর্ঘ সামাজিক সমস্যা রয়েছে। এ নিয়ে দীর্ঘ দিন গৃহযুদ্ধও চলেছে। ফলে কুর্দদের নিয়ে সর্বদাই তুরস্কের শাসকদের মধ্যে আশঙ্কা কাজ করে। তাই কোবানেতে এখনও হস্তক্ষেপ করতে রাজি নয় তুরস্ক। কিন্তু স্থলবাহিনী ছাড়া কোবানেকে রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে এর মধ্যে আমেরিকা ও ব্রিটেন জানিয়েছে। সে ক্ষেত্রে আইএস-এর মোকাবিলা করতে দ্রুত সেনা নামানো এক মাত্র তুরস্কের পক্ষেই সম্ভব। যদিও তুরস্ক সীমান্তে আরও ট্যাঙ্ক পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু এর মানেই কোবানেতে হস্তক্ষেপ নয় বলেও তুরস্ক পরিষ্কার করে দিয়েছে। পাশাপাশি কুর্দ মিলিশিয়াদের অস্ত্র সাহায্য করতেও তুরস্কের আপত্তি রয়েছে।
আমেরিকার নেতৃত্বে আইএস বিরোধী জোট কোবানেতে বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, কোবানের পূর্ব দিক থেকে ভারী অস্ত্র নিয়ে আইএস-এর জঙ্গিরা আক্রমণ চালাচ্ছে। তারা শহরের প্রায় কেন্দ্রে চলে এসেছে। অন্য দিকে, পেন্টাগনের মুখপাত্র রেয়ার অ্যাডমিরাল জন কিবরি জানিয়েছেন, ইরাকি সেনা, শিয়া মিলিশিয়া ও কুর্দরাই ইরাকে স্থলপথে আইএস-এর মোকাবিলা করবে। তবে এ ভাবে স্থলপথে আইএস-কে হঠাতে বেশ সময় লাগবে বলে তিনি মেনে নিয়েছেন। মার্কিন সেনার সেন্ট্রাল কম্যান্ড জানিয়েছে, এ দিন কোবানের দক্ষিণে মার্কিন যুদ্ধবিমান, বোমারুবিমান ও ড্রোন পাঁচ বার হামলা চালায়। এই হামলায় আইএস-এর প্রশিক্ষণ শিবির, একটি ঘাঁটি এবং কয়েকটি সাঁজোয়া গাড়ি ধ্বংস হয়েছে। কোবানের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেন্ট্রাল কম্যান্ড। এখনও মূল শহর কুর্দ মিলিশিয়াদের দখলে আছে বলে জানিয়েছে তারা।