বিধানসভায় বিরোধী আসনেই বসল সেনা

হুমকি সত্যি করে বিরোধীদের জন্য নির্দিষ্ট আসনেই শেষমেশ বসলেন শিবসেনা বিধায়কেরা। সোমবার মহারাষ্ট্র বিধানসভায় তিন দিনের বিশেষ অধিবেশন বসে। নবনির্বাচিত বেশির ভাগ বিধায়কই এ দিন হাজির ছিলেন। তবে অধিবেশন শুরু হলেও স্পিকার নির্বাচন হবে আগামী বুধবার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৪ ১৭:০১
Share:

হুমকি সত্যি করে বিরোধীদের জন্য নির্দিষ্ট আসনেই শেষমেশ বসলেন শিবসেনা বিধায়কেরা। সোমবার মহারাষ্ট্র বিধানসভায় তিন দিনের বিশেষ অধিবেশন বসে। নবনির্বাচিত বেশির ভাগ বিধায়কই এ দিন হাজির ছিলেন। তবে অধিবেশন শুরু হলেও স্পিকার নির্বাচন হবে আগামী বুধবার। ওই দিন আস্থা ভোটের পরীক্ষাও দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে। কিন্তু প্রথম দিনই বিরোধী আসনে বসে বিজেপিকে ফের চাপে রাখল শিবসেনা। রবিবারই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বিজেপিকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন সেনা-প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। সেনা না এনসিপি কোন দলের সমর্থন নিয়ে তারা সরকার গড়তে চায়, বিজেপিকে তা জানাতে দু’দিন সময় দিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

বিজেপি যদিও গোড়া থেকেই এ বিষয়ে নীরব ছিল। শিবসেনার সঙ্গে বার বার আলোচনা করেও কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণে শিবসেনার ‘মুখ’ রাখতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সে আশাতেও জল ঢেলে দেন সেনা-প্রধান। অনিল দেশাইকে মন্ত্রী করা হবে বলে ডেকে পাঠানো হয় দিল্লিতে। কিন্তু বিমানবন্দর থেকেই তাঁকে ফের মুম্বই উড়িয়ে আনেন উদ্ধব। বিজেপি যদিও হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি। দলত্যাগী সুরেশ প্রভুকে বিজেপিতে এনে রেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁর হাতে। সেনার অন্য এক সদস্য অনন্ত গীতেকেও মন্ত্রিত্বে রেখে দেওয়া হয়েছে। সব দিক নজরে রেখে, প্রকাশ্যে না আনা সকল ‘দাবিদাওয়া’ থেকে সরে এসে রবিবার সন্ধ্যায় উদ্ধব বিজেপি-র কাছে শুধু একটি জবাবই দাবি করেন এনসিপি-র সমর্থন তারা নিচ্ছে কি? সেই জবাবের উপরই নির্ভর করবে সেনা-বিজেপি-র সম্পর্ক। তিনি জানিয়ে দেন, উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে মহারাষ্ট্রে তাঁরা বিরোধী পক্ষে বসবেন। উত্তর ‘না’ হলে সেটাও তাঁদের জানানো হোক বলে জানান সেনা-প্রধান। আর বিজেপি যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনও জবাব না দেয়, তা হলে শিবসেনা বিরোধী আসনেই বসবে এমন বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, ১২ ঘণ্টাও পেরোল না, সেই বিরোধী আসনকেই বেছে নিলেন উদ্ধব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি যদিও এটাকে সেনার সমস্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “কিছু সমস্যা ওদেরকেই মেটাতে হবে।”

নতুন মুখ্যমন্ত্রীকেও যে সেনা ভাল চোখে দেখছে না, তা কয়েক দিন আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। ‘বিদর্ভ’কে সময়মতো আলাদা রাজ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হবে, ফডণবীসের এমন মন্তব্যের বিরোধিতা করা হয় সেনার মুখপত্র ‘সামনা’য়। উদ্ধবও জানিয়ে দেন, রাজ্য ভাঙার চেষ্টা করলে সমর্থন করা হবে না। এ দিন ফডণবীসের আরও এক প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হয় ওই মুখপত্রে।। মুম্বই শহরের উন্নয়নের জন্য ‘মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক’ (সিইও)-এর একটি বিশেষ পদ তৈরি করা হবে বলে সম্প্রতি বিজেপি-র তরফ থেকে জানানো হয়। এই প্রস্তাবকে মহারাষ্ট্র ভাগের চক্রান্ত বলে সেনা অভিযোগ করে। তাদের দাবি, মুম্বই নিয়ে কোনও রকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। বিজেপি একক ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত যেন না নেয়, সেই হুমকিও দেওয়া হয়।

Advertisement

বুধবারের আস্থা ভোট কী ভাবে সামলাবে বিজেপি? ৬৩ জন শিবসেনা, নাকি ৪১ জন এনসিপি-র বিধায়ক? কাদের পাশে পেতে চায় তারা? তবে ‘ম্যাজিক সংখ্যা’ থেকে মাত্র ২৪টি আসনে পিছিয়ে থাকা বিজেপি, নির্দল ও অন্যান্য দলের (২০টি আসন) সাহায্যে যে সরকার গড়তে পারে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা সে সম্ভাবনাও কিন্তু উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement