পাশাপাশি। সংসদের বাইরে ধর্নায় রাহুল গাঁধীর সঙ্গে সৌগত রায় এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
সাধ্বীর কুকথা কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না মোদী-সরকারের। সাংসদের ক্ষমা প্রার্থনা, সংসদের দুই কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি— কোনও কিছু করেই বিরোধীদের এককাট্টা মনোভাবকে টলাতে পারছে না সরকার। বিতর্কিত মন্তব্যের চার দিন পরে শুক্রবারও ধর্না আন্দোলনের পাশাপাশি সংসদ অচল রাখার চেষ্টাও জারি রাখল বিরোধী শিবির। আর এর জেরে বারবার মুলতুবি হল রাজ্যসভা।
শুক্রবার সকালে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী লোকসভার বাইরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ শুরু করেন কংগ্রেস-তৃণমূল এবং জনতা পরিবারের দলগুলি। তৃণমূলের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি না করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এ দিন দেখা যায়নি কোনও সিপিএম সাংসদকে। দলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্ত সাংসদের বরখাস্তের দাবিতে এই আন্দোলন চলবে। কিন্তু যে দল (তৃণমূল) প্রকাশ্যে আমাদের কমরেডদের খুনের হুমকি দেয়, যে দলের সাংসদ আমাদের সদস্যদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করে, তাদের সঙ্গে কোনও যৌথ কর্মসূচি করা সম্ভব না।”
তবে বামেরা না থাকলেও আন্দোলনে পাশাপাশি দেখা গেছে কংগ্রেস এবং তৃণমূল সাংসদদের। ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য্য। “সাধ্বীর পদত্যাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে আমাদের এই আন্দোলন চলবে”— বললেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। একই দাবি করলেন সাংসদ তাপস পালও। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো রাজ্যসভায় বিবৃতি দিয়েছেন। কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খার্গের দাবি, “শুধু বিবৃতি নয়, সাংসদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল তা-ও জানাতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।” কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধীর আবার দাবি, “গণতন্ত্র বিপন্ন। সংসদের ভিতরে বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না।”
বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার পর বিরোধীদের দাবি মেনে এ দিন লোকসভাতেও বিবৃতি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংসদে মোদী বলেন: “সংসদীয় বৈঠকে মন্তব্যের সমালোচনা করেছি। ব্যক্তিগত ভাবে আমি এই ধরনের মন্তব্য সমর্থনও করি না। সাংসদ নিজেও দুই কক্ষে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি গ্রাম থেকে এসেছেন এবং প্রথম বারের সাংসদ। সদস্যদের কাছে তাঁর ক্ষমা প্রার্থনা স্বীকার করে নিয়ে সংসদের কাজ চলতে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।” প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর স্পিকার জানিয়ে দেন এ বিষয়ে আর কোনও আলোচনা হবে না। শুরু হয় লোকসভার কাজ।
কিন্তু লোকসভার মতো রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যাধিক্য নেই। ফলে বিরোধী হট্টগোলে বারবার থমকে যায় সংসদের কাজ। বাধ্য হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করা হয়। পরে রাজ্যসভার কাজ শুরু হলেও বিরোধীদের হৈ হট্টগোলে তা ফের মুলতুবি করা হয় দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত।