রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দল ছাড়ার জল্পনা আরও জোরালো হল। কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের সহকারী নেতা এবং প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি পাঠালেন তিনি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাবকে ফ্যাক্স মারফত বুধবার চিঠি পাঠিয়ে পদ ছাড়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে দিয়েছেন রবিবাবু। সোহরাব বলেন, ‘‘রবিবাবুর চিঠি পেয়েছি। ওঁর সঙ্গে কথা বলেছি। বলেছি, ওঁকে কোনও ভাবেই এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না।’’ সোহরাবের কাছ থেকে পুনর্বিবেচনার আর্জি শুনে রবিবাবু বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। বিধানসভায় গত সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। তার পর থেকে আর বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দেননি। বরং, কাটোয়ায় স্থানীয় স্তরে সভা করে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মতামত সংগ্রহ করছিলেন। তার পরেই তাঁর এই পদ ছা়ড়ার সিদ্ধান্তে মনে করা হচ্ছে, তৃণমূলে রবির উদয় এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা!
পুরভোটে এ বার কাটোয়ায় তুমুল সংঘর্ষ বেধেছিল কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে। ভোটের দিন এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় সরাসরি খুনের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বিধায়ক রবিবাবুকে। তার আগে থেকেই অবশ্য প্রদেশ সভাপতি অধীরের সঙ্গে রবিবাবুর মনোমালিন্য চলছিল। খুনের মামলায় পুলিশ তাঁকে এবং কাটোয়ার কংগ্রেস কর্মীদের অহেতুক হেনস্থা করছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন রবিবাবু। তখনই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেন, শাসক দলে যোগ দেওয়ার কথা ভেবে দেখতে। কাটোয়ায় এ বার তৃণমূল ও কংগ্রেস ১০টি করে আসন পেলেও তাঁরা বিরোধী আসনে বসবেন বলে প্রথমেই জানিয়ে দিয়েছিলেন রবিবাবু। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কয়েক দিন পরেই তিন জন কংগ্রেস কাউন্সিলরের সমর্থনে কাটোয়ায় পুরবোর্ড গঠন করে তৃণমূল। এই গোটা ঘটনাপ্রবাহের জেরে কংগ্রেস শিবিরে চর্চা চলছিল, খুনের মামলায় জেরবার রবিবাবুকে ‘রেহাই’ দেওয়ার বিনিময়ে তাঁকে দলে টেনে নেবেন তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রদেশ সভাপতি অধীর বা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র, মানস ভুঁইয়ারা অবশ্য রবিবাবুকে বোঝানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু সে সবের পরেও বিধায়কের দলীয় পদ ছাড়ার চিঠি তাঁর দলত্যাগকে আরও আসন্ন করে তুলল বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর। শাসক দলের একটি সূত্রের দাবি, কয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলের পতাকা হাতে নেবেন বর্ষীয়ান ওই কংগ্রেস নেতা।