নীতীশ কুমার এবং জিতনরাম মাঁঝি।—ফাইল চিত্র।
নাটকীয় পটপরিবর্তন বিহারে!
নির্ধারিত সময়ের আগেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাজি। বিহার মন্ত্রিসভার নীতীশ-ঘনিষ্ঠ দুই সদস্যকে বরখাস্ত করার সুপারিশও করেছিলেন। বরখাস্তের সেই সুপারিশ রাজ্যপাল মেনেও নেন। কিন্তু তার কিছু ক্ষণের মধ্যে খোদ জিতনরামকেই সংযুক্তে জনতা দল থেকে বহিষ্কার করা হল। যাঁর হাত ধরে বিহারের মসনদে বসেছিলেন জিতন, সেই নীতীশ কুমার নির্বাচিত হলেন পরিষদীয় দলের নেতা হিসেবে। অর্থাত্, আরও নাটকীয় কিছু না ঘটলে বিহারের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন নীতীশ কুমার।
জিতন ও নীতীশের গোষ্ঠীর সমর্থকদের মধ্যে শুক্রবার যে সংঘর্ষ বেধেছিল তার শেষটা যে এ রকম হতে পারে তা হয়তো কেউই আন্দাজ করতে পারেননি। অথচ, দলের শীর্ষস্তরের নির্দেশ মেনে শনিবার রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে নীতীশ কুমারের বাড়িতে যান জিতন। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন জেডি (ইউ) সভাপতি শরদ যাদবও। যদিও ঘণ্টা দুয়েকের সেই বৈঠকে কার্যকরী সূত্র মেলেনি বলেই জানা গিয়েছে। এর পরেই বিকেলে দলের বৈঠকে পরিষদীয় দলনেতা হিসেবে নির্বাচিত করা হয় নীতীশকে। এই বৈঠকে ছিলেন না জিতন।
প্রত্যাশামতোই বিহার পরিস্থিতির ফয়দা তুলতে আসরে নেমেছে বিজেপি। এ দিন নীতীশকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছে বিজেপি। দলীয় নেতা নন্দকিশোর যাদব মন্তব্য করেন, জিতনরামকে এ ভাবে সরানো বস্তুত, এক জন ‘মহাদলিত’-এর সঙ্গে ‘অবিচার’। এ দিন দিল্লিতে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলেন দলীয় নেতা তথা বিহারের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদি। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর সবিস্তার কথা হয়। বিজেপি সূত্রে দাবি করা হয়, বিহারের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তারা নজর রাখছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, জিতনরাম দিল্লি এসে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
নির্ধারিত সময়ের আগেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করে জিতনরাম তাঁর মন্ত্রিসভার যে বৈঠক ডেকেছিলেন সেই বৈঠকেই তিনি সংখ্যালঘু হয়ে যান। বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাবের পক্ষে সায় দেন সাত জন মন্ত্রী। কিন্তু বিপক্ষে ছিলেন নীতীশপন্থী ২১ জন মন্ত্রী। দলীয় সভাপতি শরদ যাদব রাজ্যপালকে এক চিঠি লিখে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ খারিজ করার আর্জি জানিয়েছেন।
২৪৩ সদস্যের বিধানসভায় জেডি (ইউ)-র সদস্যসংখ্যা ১১৫, বিজেপি-র ৮৮, আরজেডি ২৪, কংগ্রেস ৫, সিপিআই এক এবং নির্দল ৫। বাকি ৫টি আসন শূন্য রয়েছে।