BJP

বিজেপি পিছিয়ে সব পঞ্চায়েতেই

তালড্যাংরা বিধানসভাকেন্দ্রের আওতায় থাকা ১৫টি পঞ্চায়েতের সব ক’টিতেই বড় ব্যবধানে এগিয়েছে তৃণমূল। দল সূত্রে জানা যায়, সব চেয়ে বেশি সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধান রয়েছে সিমলাপাল পঞ্চায়েতে।

Advertisement

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

তালড্যাংরা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৭
Share:

পঞ্চায়েত এলাকায় কেন কার্যত ধুয়েমুছে গেল পদ্মশিবির? —ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনে হারতে হয়েছিল, তবে কিছু জায়গায় আধিপত্য বজায় রাখতে পেরেছিল বিজেপি। উপনির্বাচনে সেটুকুও রইল না! ফলাফলে দলের ভরাডুবির কথা মানছেন বিজেপির জেলা নেতাদের অনেকে। হারের কারণ পর্যালোচনার পাশাপাশি হারানো জমি পুনরুদ্ধার নিয়ে আপাতত ভাবতে চাইছে গেরুয়া শিবির।

Advertisement

মাস ছয়েক আগেই হওয়া লোকসভা নির্বাচনে তালড্যাংরা বিধানসভা এলাকার তালড্যাংরা, হাড়মাসড়া, পাঁচমুড়া, ব্রজরাজপুর ও মণ্ডলগ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটপ্রাপ্তিতে তৃণমূলের চেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। উপনির্বাচনের ফলে দেখা যাচ্ছে, ওই সব এলাকায় ধরাশায়ী হয়েছে গেরুয়া শিবির। শুধু তাই নয়, তালড্যাংরা বিধানসভাকেন্দ্রের আওতায় থাকা ১৫টি পঞ্চায়েতের সব ক’টিতেই বড় ব্যবধানে এগিয়েছে তৃণমূল। দল সূত্রে জানা যায়, সব চেয়ে বেশি সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধান রয়েছে সিমলাপাল পঞ্চায়েতে। তিন হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধান রয়েছে ইঁদপুরের গৌরবাজার ও তালড্যাংরার খালগ্রাম পঞ্চায়েতে। পাঁচমুড়া, মণ্ডলগ্রাম, বিক্রমপুরের মতো পঞ্চায়েতেও বেড়েছে ব্যবধান।

পঞ্চায়েত এলাকায় কেন কার্যত ধুয়েমুছে গেল পদ্মশিবির? দলীয় সূত্রে খবর, শনিবার ফল প্রকাশের পরে রাতেই বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব উপনির্বাচন হওয়া ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রের নেতৃত্বের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠক করেন। সেখানে হারের কারণ নিয়ে আলোচনা হয়। দলের একাংশের দাবি, সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রী অনন্যা রায় চক্রবর্তীকে কর্মীদের অনেকে প্রার্থী হিসেবে মানতে পারেননি। নেতৃত্বস্থানীয় কারও কারও দাবি, রাজ্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে অন্য দলে ভোটে জিতে বিধায়ক হয়ে পরে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার হিড়িক দেখে অনেকে ক্ষুব্ধ। প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রীকে প্রার্থী করায় সেই আশঙ্কার কথাও ভোটারদের অনেকের মনে ছিল।

Advertisement

এ সব ‘তত্ত্ব’ অবশ্য মানেননি বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, “মানুষ যে কথা শুনতে চেয়েছেন, প্রচারে হয়তো আমরা তা বলতে পারিনি। প্রচার-কৌশলে কোথায় নতুনত্ব আনা দরকার, তা নিয়ে আলোচনা হবে। মানুষ কেন আমাদের উপরে আস্থা রাখলেন না, তা একেবারে নিচুস্তরে গিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

এ দিকে, ভোট প্রচারের শুরু থেকে কয়লা-বালি-পাথর পাচার থেকে শুরু করে আর জি কর-কাণ্ড, নারী নির্যাতনের মতো নানা বিষয়ে তৃণমূলের দিকে আক্রমণ শানিয়েছিল বিরোধীরা। তার পরেও রেকর্ড ব্যবধানে এই জয় কী ভাবে? তৃণমূলের তরফে জয়ের কান্ডারি হিসেবে বাঁকুড়ার সাংসদ তথা দলের জেলা (বাঁকুড়া সাংগঠনিক) সভাপতি অরূপ চক্রবর্তীকে তুলে ধরা হচ্ছে। ভোট ঘোষণার পরে থেকে প্রচার-কৌশল, কর্মীদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন থেকে শুরু করে সকলকে একজোট করে ভোটে নামাতে বিশেষ ভাবে সক্রিয় হন তিনি। তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী ফাল্গুনী সিংহবাবু বলেন, “অরূপদা যে ভাবে পরিশ্রম করেছেন, তা আমাদের কাছে শিক্ষণীয়।” তবে জয়ের কৃতিত্ব দলের কর্মী-সমর্থকদের জানিয়ে অরূপের দাবি, “জেলা থেকে বিজেপি যে কার্যত শিকড়-সহ উপড়ে গিয়েছে, এই ফলাফল তারই প্রমাণ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement