বহু কাঠখড় পুড়িয়ে মিলল অনুমতি, কাঙ্ক্ষিত জায়গায় অমিত-ভাষণ

আদালতের নিয়োগ করা স্পেশাল অফিসারদের নির্দেশিত নকশা মেনেই ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভার তোড়জোড় শুরু করল বিজেপি। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কলকাতা পুরসভা এবং দমকলের দু’জন স্পেশাল অফিসার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভাস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁদের সাহায্য করার জন্য ছিলেন পুলিশ কমিশনারের এক প্রতিনিধি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৪ ১৮:১৫
Share:

সভার তোড়জোড় শুরু হল। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

আদালতের নিয়োগ করা স্পেশাল অফিসারদের নির্দেশিত নকশা মেনেই ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভার তোড়জোড় শুরু করল বিজেপি।

Advertisement

হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কলকাতা পুরসভা এবং দমকলের দু’জন স্পেশাল অফিসার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভাস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁদের সাহায্য করার জন্য ছিলেন পুলিশ কমিশনারের এক প্রতিনিধি। ছিলেন বিজেপি-র দুই প্রতিনিধি সদস্য। আদালতের হস্তক্ষেপে, স্পেশাল অফিসারদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ মেনে নিয়ে রবিবারের সভার ছাড়পত্র মিললেও স্বস্তি মেলেনি বিজেপি-র। ফের অন্য সংশয়ে ভুগছে বিজেপি। অনুমতির জন্য প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে গিয়ে সভার আয়োজনে খামতি থেকে গিয়েছে! দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলছেন, “অনুমতি পেতেই অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে। হাতে একটুও সময় না থাকায় যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারলাম না।”

এ দিন সকালে আদালতের নির্দেশ মেনে ওই দুই স্পেশাল অফিসার এবং পুলিশের প্রতিনিধির সঙ্গে সভাস্থলে পৌঁছন বিজেপি-র সহ-সভাপতি সুশান্তরঞ্জন পাল এবং অফিস সেক্রেটারি অলক গুহরায়। দলীয় দুই প্রতিনিধিকে সহায়তা করতে সভাস্থলে গিয়েছিলেন বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। আইন মেনে সভাস্থল কী ভাবে তৈরি করতে হবে, সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা দেন ওই অফিসারেরা। সেই নির্দেশিকা মেনে নেন বিজেপি নেতৃত্ব।

Advertisement

৩০ নভেম্বরের সভার জন্য গত ২২ জুলাই অনুমতি চেয়ে লালবাজারে আর্জি জানায় বিজেপি। পরে আরও দু’বার চিঠি দেওয়া হয় দলের তরফে। কিন্তু অনুমতি না মেলায় ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। এর পর আদালতের নির্দেশে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে তারা। কিন্তু ফল না মেলায় ফের আদালতে যান বিজেপি নেতৃত্ব। এর পর ২৮ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক শর্তসাপেক্ষে বিজেপি-কে ধর্মতলায় তাদের ঘোষিত জায়গায় সভা করার অনুমতি দেন। পাশাপাশি, তিনি ওই দুই স্পেশাল অফিসারকে নিয়োগ করেন।

রাজ্যে এমনিতেই বিজেপি-র একটা হাওয়া বইছে। তার মধ্যে, রবিবার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনের ওই সভায় প্রধান বক্তা বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। মোদী সরকার গঠনের পিছনে তিনিই যে নেপথ্যশিল্পী, তা আজ গোটা দেশে জানে। শুধু তাই নয়, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানাতেও একক ভাবে বিজেপি-র উত্থানের কারণও অনেকাংশে তিনি। দলের সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই যিনি পশ্চিমবঙ্গে এক কোটি নতুন সদস্য করবার জন্য লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেন। ঠারেঠোরে বুঝিয়েও দেন, তাঁর পাখির চোখ এখন এই রাজ্য। সম্প্রতি লোকসভায় একই ‘ইচ্ছে’র কথা জানিয়েছেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু। লোকসভায় বাবুল-সুরেন্দ্রর পর রাজ্য বিধানসভাতেও খাতা খুলেছে বিজেপি। উপনির্বাচনে জিতে আসা বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য একাই সেখানে নিজেদের গড় সামলাচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সব মিলিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে এখন শ্বাস ফেলছে বিজেপি। সেই কারণে নানা অছিলায়, অমিতের ওই সভা বানচালের চেষ্টা করে শাসক দল। ভিক্টেরিয়া হাউসের সামনে তাদের সভা করতে না দেওয়ার জন্য অনেক ভাবে আটকানোর চেষ্টা হয়। শেষমেশ বিজেপি-র গোঁ-এর কাছে হার মানল তৃণমূল। আদালতের নির্দেশে এ যাত্রা জয় এল বিজেপি-র পক্ষেই। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুলবাবু তাই এ দিনও এক বার বলে ফেললেন, “বিজেপি-র জয় নয়। এই জয় বিচারব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রের।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement