প্রতীকী ছবি।
আর স্কুলের কাছে দরবার নয়, নিজের জমানো অর্থ সহজেই দেখতে পাবেন ও টাকা তুলতে পারবেন রাজ্যের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। আসন্ন অর্থবর্ষ থেকে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য অনলাইন জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড পোর্টাল (জিপিএফ) চালু হচ্ছে।
রাজ্যের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লক্ষের মতো। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারের এই অংশের কর্মীদের দাবি ছিল সরকারি কর্মচারীদের মতো তাঁদের জিপিএফ-এর ব্যবস্থা যেন সম্পূর্ণরূপে অনলাইন করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে এই মর্মে আন্দোলনও শুরু করে শিক্ষক সংগঠনগুলি। অবশেষে এই পোর্টাল চালু হতে চলেছে। সমস্ত প্রক্রিয়া প্রায় সম্পূর্ণ বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “অনলাইনে জিপিএফ ব্যবস্থা চালু করার দাবি ২০১৭ সাল থেকে আমরা করে আসছি। সরকারি কর্মচারীদের যদি অনলাইনে এই ব্যবস্থাপনা করা যায়, তা হলে শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা এই ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হবেন কেন? সরকার এই ব্যবস্থা চলেছে ঠিকই, কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছর সময় লাগিয়ে দিল।”
গত বছরের মাঝামাঝি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। গত বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাস থেকে প্রাথমিকের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্যও এই প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
এই পুরোও প্রক্রিয়াটা অর্থ দফতরের তৈরি পোর্টালের মাধ্যমে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ডিআই ও এসআই-দের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে নির্দেশ গিয়েছে অর্থ দফতরের পোর্টালে প্রবেশ করে স্কুলগুলিকে দ্রুত রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের সুদ-সহ অর্থ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের খাতে জমা পড়েছে তা এই পোর্টালে আপলোড করতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের টাকা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের নামে সরকার জমা করবে। স্কুলের রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হলে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা অনলাইনে জিপিএফের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ও লেনদেন করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অ্যাডভান্সড সোস্যাইটি ফর হেড মাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “সরকারি কর্মচারীদের এই সুবিধা বহুদিন ধরে ছিল। শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের ক্ষেত্রে এটি চালু করতে দেরি করল সরকার। অনলাইন পদ্ধতি না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। অনলাইন হওয়ায় এই দুর্নীতি রোধ করা যাবে।”
এই অনলাইন পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে যে যে সুবিধাগুলি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা পাবেন সেগুলি হল, লোনের ক্ষেত্রে আর স্কুলের মুখাপেক্ষী বা পরিচালন সমিতির সুপারিশের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। জিপিএফ-এর অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষকরা রাজনৈতিক মতাদর্শের শিকার হন, সেটাও আর হবেন না। সর্বোপরি বিভিন্ন স্কুল যে দীর্ঘদিন ধরে জিপিএফ-এর লেজার আপডেট করত না তা এ বার করতে বাধ্য হবেন তারা।