Taruner Swapna

আগের সমস্যা মেটার আগেই কি ফের পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা? নতুন করে তথ্য চাইল সরকার

যদি কোনও পড়ুয়া ট্যাবের টাকা না পেয়ে থাকে, তা দ্রুত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর যদি কারও টাকা অন্যর অ্যাকাউন্টে চলে যায়, তা এফআইআর করে জানাতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৪৪
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে! সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকা ঘিরে এই অভিযোগ উঠেছে আগেই। টাকা উদ্ধার বা কী করে এমন ঘটল, সে সব মীমাংসার আগেই এসেছে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে নতুন করে টাকা দেওয়ার নির্দেশ। সেই মতোই এ বার বিভিন্ন জেলার পড়ুয়াদের তথ্য চাইল স্কুলশিক্ষা দফতর। শুধু তা-ই নয়, সমস্ত জেলায় আর কত জন পড়ুয়ার কাছে এখন‌ও ট্যাব কেনার টাকা পৌঁছয়নি, তার তথ্যও চেয়ে পাঠিয়েছে বিকাশ ভবন। সোমবারের মধ্যে এই তথ্য জমা দিতে হবে রাজ্যের সমস্ত ডিআই-দের।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘তরুণের স্বপ্ন’র আওতায় পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় পুজোর আগে। রাজ্যের ১৮ লক্ষ পড়ুয়ার মধ্যে বেশ কিছু জেলার পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা ঢোকেনি বলে খবর আসে। কেন এল না এই টাকা? খোঁজ নিতেই জানা যায়, সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে না গিয়ে সে টাকা গিয়েছে ভিন্ন লোকের অ্যাকাউন্টে। যার ফলেই ওঠে একাধিক প্রশ্ন। তদন্ত শুরু হয়। শিক্ষা দরফতরের তরফে এফআইআর-ও করা হয়েছে ইতিমধ্যে।

এরই মধ্যে যে সব পড়ুয়ারা টাকা হাতে পায়নি, তাদের সেই টাকা দেওয়ার নির্দেশ পেয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বিকাশ ভবনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এখন‌ও পর্যন্ত যে পড়ুয়াদের টাকা তাদের নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে পড়েনি, তাদের নতুন করে টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে। সে কারণে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের কাছ থেকে সঠিক তথ্য যাতে দফতরের কাছে এসে পৌঁছয়, তাই এই নির্দেশ।”

Advertisement

শিক্ষা দফতরের এমন নির্দেশের পরেই ডিআই-দের তরফে রাজ্যের সমস্ত স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের নয়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও পড়ুয়া ট্যাবের টাকা না পেয়ে থাকে, তা দ্রুত জানানোর নির্দেশও এসেছে। আর যদি কারও টাকা যদি অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে যায়, তা এফআইআর করে জানাতে হবে।

এই ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের ডিআইয়ের পক্ষ থেকে চারটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করা হয়েছে। এই স্কুলগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, পড়ুয়াদের পরিবর্তে অন্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নম্বর আপলোড করা হয়েছে ওয়েবসাইটে। যা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে প্রধানশিক্ষকদের মধ্যে। প্রধানশিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “সাইবার ক্রাইমকে শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে না কেন? টাকার বদলে সরকারের উদ্দেশ্য সাইকেল, ব্যাগ, স্কুল ড্রেসের মতো এটাও পড়ুয়াদের হাতে কিনে দেওয়ার। অবিলম্বে সরকার যদি প্রধান শিক্ষকদের নামে এফআইআর প্রত্যাহার করুক। তা না হলে শিক্ষা বহির্ভূত সমস্ত কাজ থেকে আমরা সরে দাঁড়াব।”

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “এই ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের চারটি এবং পূর্ব বর্ধমানের দু’টি স্কুলের পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে না পড়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে।” শুধু পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে ৬৪ জন পড়ুয়া রয়েছে। পূর্ব বর্ধমানে রয়েছে ২০ জন। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করার জন্য ইতিমধ্যেই পুলিশে এফআইআর করেছি। তদন্তের পরেই বলা যাবে এটা হ্যাকিং, নাকি ভুল কোন‌ও তথ্য দেওয়া হয়েছে, যার ফলে অন্যের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গিয়েছে। এনআইসিই-ও বিষয়টি তদন্ত করছে, এখানে প্রযুক্তিগত কোন‌ও ত্রুটি আছে কি না। পাশাপাশি, অন্যান্য জেলায় বিভিন্ন স্কুলেও একই ঘটনা কমবেশি কোথাও ঘটেছে। সেই তথ্যগুলোই ডিআইদের মাধ্যমে পুনরায় জানতে চাওয়া হয়েছে স্কুলগুলির কাছে, যাতে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে পড়ুয়াদের হাতে ট্যাব কেনার টাকা পৌঁছে দেওয়া যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement