ফি বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদে অবস্থান আন্দোলনে এসএফআই নিজস্ব চিত্র।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক লাফে ১৯০ ও ৭১ শতাংশ ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাব ঘিরেই তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে। ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ক্যাম্পাস চত্বরে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেছে এসএফআই। তাদের দাবি, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরে মাত্রাতিরিক্ত ফি নেওয়া যাবে না।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএফআই-এর ইউনিট সেক্রেটারি বিতান ইসলাম বলেন, “পড়ুয়াদের উপর চাপিয়ে দেওয়া বর্ধিত ফি-র বোঝা আমরা মানছি না। কোনও কমিটির মাধ্যমে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সরাসরি কথা বলতে হবে পড়ুয়াদের সঙ্গে। রাজ্য এবং কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করতে হবে কর্তৃপক্ষকেই।”
গত ১৮ জুলাই, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ডিন অফ স্টুডেন্টস-এর নেতৃত্বে ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার রিভিউ কমিটির বৈঠক হয়। এক সপ্তাহ পরে, ২৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের বর্ধিত ফি কাঠামোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। আর তাতেই চক্ষু চড়কগাছ পড়ুয়াদের! এক দশক পরে এক লাফে সিমেস্টার ফি ১৯০ শতাংশ এবং স্নাতক স্তরে অ্যাডমিশন ফি ৭১ শতাংশ বৃদ্ধির খসড়া দেওয়া হয়েছে।
এত দিন পর্যন্ত প্রেসিডেন্সিতে স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে গেলে অ্যাডমিশন ফি বাবদ পড়ুয়াদের দিতে হত ৪,২০৫ টাকা। নয়া ফি কাঠামোয় সেই অঙ্ক বাড়িয়ে ৭,২০০ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বৃদ্ধির শতাংশের নিরিখে যা ৭১.৩। একই ভাবে স্নাতকোত্তর স্তরেও অ্যাডমিশন ফি ৪,৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৭,২০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে বৃদ্ধির শতাংশের হিসাব দাঁড়ায় ৬৭.৪।
শুধু অ্যাডমিশন ফি নয়, একই সঙ্গে বিএ, বিএসসি, এমএ, এমএসসির সিমেস্টার ফি বৃদ্ধিরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা কোথাও ১৯০ এবং কোথাও ১৬১ শতাংশ।
ব্যাচেলর অফ আর্টস (বিএ)-এ বর্তমানে প্রতি সিমেস্টারে দিতে হয় ১,১০০ টাকা। বর্ধিত ফি-র প্রস্তাবে তা করা হয়েছে ৩,২০০ টাকা। শতাংশের নিরিখে বৃদ্ধির হার ১৯০.৯১। ব্যাচেলর অফ সায়েন্স (বিএসসি)-এ সিমেস্টার পিছু দিতে হয় ১,১২৫ টাকা, প্রস্তাবে করা হয়েছে ৩,২০০ টাকা। শতাংশের নিরিখে বৃদ্ধির হার ১৬১.১। একই ভাবে স্নাতকোত্তরে মাস্টার্স অফ আর্টস (এমএ)-এ প্রতি সিমেস্টারে দিতে হত ১,২৬০ টাকা। যে অঙ্ক বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩,২০০ টাকা। শতাংশের নিরিখে বৃদ্ধির হার ১৫৩.৯৭। মাস্টার্স অফ সায়েন্স (এমএসসি)-এ ১,৩৩৫ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩,২০০। শতাংশের নিরিখে বৃদ্ধির হার ১৩৯.৮৫।
প্রসঙ্গত, ১৮ জুলাই রিভিউ কমিটি প্রবীণ অধ্যাপকদের নিয়ে ডিন অফ স্টুডেন্টসদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক হয়। সেখানেই ফি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। তার পরে রাতারাতি এত টাকা ফি বৃদ্ধির প্রস্তাবে হতবাক শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রছাত্রীদের একাংশের বক্তব্য, আর্থিক সচ্ছলতা আনতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীদের ঘাড়েই কেন বন্দুক রাখা হবে? আয় বৃদ্ধির বিকল্প ভাবনার পথ স্থির করতে হবে কর্তৃপক্ষকেই। এ বিষয়ে রাজ্যকেও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।