Tribute to ‘Father of Indian Cytology’

শতবর্ষে ভারতীয় ‘সাইটোলজির জনক’কে শ্রদ্ধা, তাঁর ঘরে গড়ে উঠল বিশেষ সংগ্রহশালা

পদ্মভূষণ এবং শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারপ্রাপ্ত সাইটোজেনেটিস্ট ছিলেন অরুণকুমার শর্মা। চলতি বছরে তাঁর বয়স ১০০ পূর্ণ হতে চলেছে। শতবর্ষে শ্রদ্ধা জানাতেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তায় বালিগঞ্জ ক্যাম্পসে তাঁর কক্ষটিকে জীবনীমূলক সংগ্রহশালা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

Advertisement

অরুণাভ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ১৮:০২
Share:

প্রতীকী চিত্র।

বরেণ্য উদ্ভিদ গবেষক অরুণকুমার শর্মার কক্ষটি হয়ে উঠল জীবনীমূলক সংগ্রহশালা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ ক্যাম্পাসের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে তিনি আন্তর্জাতিক ভাবে সমাদৃত হয়েছিলেন। পদ্মভূষণ এবং শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারপ্রাপ্ত সাইটোজেনেটিস্টের শতবর্ষে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তায় তাঁর কক্ষটিকে জীবনীমূলক সংগ্রহশালা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

Advertisement

বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রীতা কুণ্ডু বলেন, “অধ্যাপক অরুণকুমার শর্মার মতো শিক্ষক শুধু বাংলায় নয়, সারা দেশেই বিরল। তাঁর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শুধু আলোচনাসভার আয়োজন নয়, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তাঁর বিভিন্ন নথি, লেখা, ব্যবহৃত সামগ্রী নিয়ে সংগ্রহশালা তৈরি করা হবে। এ ভাবেই তাঁকে যথাযথ শ্রদ্ধা জানানো হবে, যাতে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা দেশে জীববিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে ওঁর অবদানের কথা জানতে পারেন।”

উদ্ভিদ গবেষক অরুণকুমার শর্মার কক্ষটি হয়ে উঠল জীবনীমূলক সংগ্রহশালা। নিজস্ব চিত্র।

ভবানীপুর মিত্র ইনস্টিটিউশনে পড়াশোনা। ১৯৪৩ সালে আশুতোষ কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ে স্নাতক এবং ১৯৪৫ সালে স্নাতকোত্তর যোগ্যতা অর্জন করেন অরুণকুমার শর্মা। এর পরে বটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এবং তার পরে ১৯৪৮ সালে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে যোগদান করেন তিনি। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে অসামান্য গবেষণার জন্য ডিএসসিতে ভূষিত করা হয়।

Advertisement

উদ্ভিদ গবেষক অরুণকুমার শর্মার কক্ষটি হয়ে উঠল জীবনীমূলক সংগ্রহশালা। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর দীর্ঘ চার দশকের কর্মজীবনে ১৯৬৯ সালে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক শর্মা। ১৯৬৯ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি স্যার রাসবিহারী ঘোষ চেয়ার প্রফেসার হিসাবে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত কাজ করেছেন ইনশা গোল্ডেন জুবিলি রিসার্চ প্রফেসর হিসেবে।

১৯৬৭ সালে শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার এবং ১৯৮৩ সালে পদ্মভূষণে ভূষিত হন অরুণকুমার। এখানে উল্লেখযোগ্য, ২০১৩ সালে আয়োজিত ১০০তম সায়েন্স কংগ্রেসে উদ্ভিদ ক্রোমোজোম গবেষণার উপর তাঁর দীর্ঘ ৫০ বছরের কাজ নিয়ে একটি ডেটাবেস প্রকাশিত হয়। সাইটোজেনেটিক্স, সাইটোকমিস্ট্রি এবং সেল বায়োলজিতে অসামান্য অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্মান পেয়েছেন তিনি।স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারতে ক্রোমোজোম গবেষণায় অধ্যাপক শর্মার অবদানের জন্য তাঁকে ভারতীয় ‘সাইটোলজির জনক’ হিসাবে ভূষিত করা হয়েছিল।

উদ্ভিদ গবেষক অরুণকুমার শর্মার কক্ষটি হয়ে উঠল জীবনীমূলক সংগ্রহশালা। নিজস্ব চিত্র।

নবনির্মিত সংগ্রহশালায় রয়েছে অধ্যাপকের ব্যবহৃত আরাম কেদারা, ক্লাস রুটিন, মাইক্রোস্কোপ, টাইপ রাইটার-সহ বেশ কিছু দুর্লভ ছবি এবং বিভিন্ন পুরস্কার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন তাঁর ১০০টি থিসিস এবং অসংখ্য গবেষণাপত্র পুনরুদ্ধার করে এই সংগ্রহশালায় প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement