NET Exam

নেট ও সেট, একই রকম হয়েও আলাদা দু'টি পরীক্ষা

কলেজে অধ্যাপনার জন্য কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান শাখার কিছু কিছু বিষয়ে জাতীয় স্তরে নেট ও রাজ্য স্তরে সেট পরীক্ষার আয়োজন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২০:৫৩
Share:

নেট ও সেট পরীক্ষা সংগৃহীত ছবি

এক জন শিক্ষকই পারেন শিক্ষার্থীদের সঠিক পথের দিশা দেখাতে। তাই কলেজ পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে অধ্যাপকদের ভূমিকা ও দায়িত্ব আরও অনেকখানি বেশি। কলেজে অধ্যাপনার জন্য কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান শাখার কিছু কিছু বিষয়ে জাতীয় স্তরে নেট ও রাজ্য স্তরে সেট পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিবেদনে পরীক্ষা দু'টির একটি তুলনামূলক আলোচনা করা হবে।

Advertisement

নেট ও সেট পরীক্ষা কী?

ইউজিসি নেট (ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট) পরীক্ষাটি একটি জাতীয় স্তরের যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা, যার মাধ্যমে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে 'অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর' ও 'জুনিয়র রিসার্চ ফেলো ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর' পদে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়। এই পরীক্ষাটি বর্তমানে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) দ্বারা আয়োজিত হয়। বছরে দু'বার এই পরীক্ষাটির আয়োজন করা হয়। এই বছর পরীক্ষা ৮২টি বিষয়ের উপর নেওয়া হয়। নেট পরীক্ষাটি অনলাইনে কম্পিউটারের মাধ্যমেই নেওয়া হয়। এ ছাড়া পরীক্ষাটি ইংরেজি ও হিন্দি মাধ্যমে নেওয়া হয়। যে সমস্ত পরীক্ষার্থী 'অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসসরশিপ' পদের জন্য পরীক্ষায় পাশ করবেন, তাঁরা আবার 'জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ' পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হবেন না। দু'টি ক্ষেত্রেই পরীক্ষার্থীদের যোগ্যতা নির্ভর করবে তাঁদের পরীক্ষার দু'টি পেপারে প্রাপ্ত মোট নম্বরের উপর।

Advertisement

অন্য দিকে সেট (স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট) পরীক্ষাটি একটি রাজ্য স্তরের যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা, যার মাধ্যমে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে 'অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর' পদে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়। এই পরীক্ষাটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশন (ডব্লিউবিসিএসসি)। এই পরীক্ষাটিও দু'টি পেপারের উপর নেওয়া হয়। মোট ৩৩টি বিষয়ের উপর সেট পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে এই পরীক্ষাটি অফলাইনে মাধ্যমেই নেওয়া হয়। এ ছাড়া বছরে এক বারই সেট পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমে পাওয়া যায়। দু'টি পেপারে প্রাপ্ত মোট নম্বরের ভিত্তিতে এই পরীক্ষার মাধ্যমেও 'অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর' পদে নিয়োগ করা হয়।

নেট ও সেটের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা

নেট পরীক্ষায় বসার জন্য অসংরক্ষিত ক্যাটেগরির পরীক্ষার্থীদের মাস্টার্স বা সমতুল পরীক্ষায় ৫৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির পরীক্ষার্থীদের মাস্টার্স বা সমতুল পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। যাঁরা মাস্টার্স পড়ছেন কিন্তু এখনও পাশ করেননি, তাঁরাও এই পরীক্ষায় বসতে পারবেন কিন্তু যদি পরীক্ষায় পাশ করেন, তা হলে নিয়োগের সময় তাঁর মাস্টার্স পরীক্ষার রেজাল্ট ও সার্টিফিকেটটি লাগবে। নইলে তাঁর নিয়োগ খারিজ হয়ে যাবে। যাঁদের পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট রয়েছে, তাঁরাও শর্তবিশেষে আবেদন জানাতে পারেন।

একই রকম ভাবে সেট পরীক্ষায় বসার জন্য পরীক্ষার্থীদের উপরোক্ত যোগ্যতাগুলি থাকা প্রয়োজন।

নেট ও সেটের জন্য নির্ধারিত বয়ঃসীমা

দুটি পরীক্ষার ক্ষেত্রেই 'অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর' পদের জন্য পরীক্ষার্থীদের বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা রাখা হয়নি। কিন্তু নেট পরীক্ষার মাধ্যমে যাঁরা 'জুনিয়র রিসার্চ ফেলো' পদে আবেদন জানাতে চান, সেই সব অসংরক্ষিত পরীক্ষার্থীর বয়স ৩১ বছরের বেশি হলে চলবে না। সংরক্ষিত ক্যাটেগরির পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে আরও পাঁচ বছর ছাড় দেওয়া হয়।

নেট ও সেট পরীক্ষা-কাঠামো

দু'টি পরীক্ষাই দু'টি পেপারে নেওয়া হয়, যার প্রথম পেপারে থাকে ১০০ ও দ্বিতীয় পেপারে থাকে ২০০ নম্বর। দু'টি পরীক্ষায় তিন ঘন্টা সময় ধরে চলে। প্রশ্নগুলি সবই এমসিকিউ ধরনের হয়। প্রশ্নের উত্তর ভুল হলে কোনও পরীক্ষাতেই কোনও নেগেটিভ মার্কিং করা হয় না।

নেট ও সেট পরীক্ষার আবেদনমূল্য

নেট পরীক্ষায় আবেদন জানানোর জন্য জেনারেল ক্যাটেগরির পরীক্ষার্থীদের ১১০০ টাকা, ইডাব্লিউএস/ ওবিসি-এনসিএল পরীক্ষার্থীদের ৫৫০ টাকা ও এসসি/ এসটি/ পিডব্লিউডি/ ট্রান্সজেন্ডার পরীক্ষার্থীদের ২৭৫ টাকা জমা দিতে হয়। অন্য দিকে সেট পরীক্ষায় আবেদন জানাতে গেলে জেনারেল ক্যাটাগরির পরীক্ষার্থীদের ১০০০ টাকা, ওবিসি/ ইডাব্লিউএস পরীক্ষার্থীদের ৫০০ টাকা এবং এসসি/ এসটি/ পিডব্লিউডি/ ট্রান্সজেন্ডার পরীক্ষার্থীদের ২৫০ টাকা জমা দিতে হয়।

নেট ও সেট পরীক্ষার বাছাই প্রক্রিয়া

নেট ও সেট পরীক্ষায় যে সব পরীক্ষার্থী পাশ করবেন, তাঁদের মধ্যে ৬ শতাংশ অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদের জন্য নির্বাচিত হবেন ও তাঁদের মধ্যে মাত্র ১ শতাংশ জেআরএফ-এর জন্য নির্বাচিত হবেন। তবে যে নির্দিষ্ট পাশ নম্বরের ভিত্তিতে স্থির করা হবে পরীক্ষার্থীরা বাছাই প্রক্রিয়ার অংশ হবেন কী না তা হল-- অসংরক্ষিত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দু'টি পেপার মিলিয়ে ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে এবং সংরক্ষিত ও ওবিসি প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

তাই দু'টি পরীক্ষার মধ্যে যে ছোট ছোট পার্থক্যগুলি রয়েছে, তা সঠিক ভাবে বুঝে নিয়ে এই পরীক্ষাগুলিতে আবেদন জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement