সংগৃহীত চিত্র।
রেজিস্ট্রার নেই। নেই সহ-উপাচার্যও। এ ছাড়াও অর্থ আধিকারিক, শিক্ষক-শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে একাধিক শূন্যপদ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পদে নিয়োগ হচ্ছে না। এমনকি, বর্তমান উপাচার্যও অস্থায়ী পদে দায়িত্ব সামলেছেন। আধিকারিক এবং শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর এই অপ্রতুলতার কারণে সমাবর্তন থেকে প্রশাসনিক কাজকর্মে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যলয় কর্তৃপক্ষকে। সর্বোপরি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে টিচিং লার্নিং প্রসেস এবং গবেষণা। নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সংগঠনগুলি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বড় আধিকারিকদের একাধিক পদ ফাঁকা। অর্থ আধিকারিকের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি করেও স্থগিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের নিয়োগ হচ্ছে না। এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও কাজকর্ম চালানো কঠিন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের ক্ষতি হতে পারে আগামী দিনে।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ছাড়াও সহ-উপাচার্যের পদ রয়েছে দু’টি। ২০২৩ সালের শেষের দিকে চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য উপাচার্যের পথ থেকে সরে যাওয়ার পরে এখনও ওই পদে নতুন কেউ আসেননি। উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তও ভারপ্রাপ্ত। অন্য একটি পদে রয়েছেন অমিতাভ দত্ত।
সম্প্রতি রেজিস্ট্রার পদ থেকে অবসর নিয়েছেন স্নেহমঞ্জু বসু। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব সামলাচ্ছেন কলা বিভাগের সেক্রেটারি ইন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক স্তরে এই গুরুত্বপূর্ণ পদগুলিতে কবে আধিকারিক নিয়োগ হবে, তা এখনও জানা নেই কারও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এক সংগঠন আবুটা-র সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি বলেন, “এই অচলাবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। যত সময় গড়াচ্ছে, ততই অসুবিধার মুখে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়। এর জন্য রাজ্য সরকার এবং আচার্য- এই দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব দায়ী। একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন। ফলে ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা এবং গবেষণার।”
শুধু রেজিস্ট্রার বা সহ-উপাচার্যের পদ নয়, ফাঁকা রয়েছে লাইব্রেরিয়ানের পদও। ২০২৩ সালে অক্টোবর মাসে অর্থ-আধিকারিক গৌরকৃষ্ণ পট্টনায়ক অবসর নেওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত এই গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, এই পদে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তার পরে তা স্থগিত রাখা হয়। এর আগে থেকে যুগ্ম রেজিস্ট্রার-এর পদ ফাঁকা রয়েছে। পাঁচ বছর আগে এই পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন পার্থপ্রতিম লাহিড়ী।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলা, বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইনট্রাডিসিপ্লিনারি স্টাডিজের অ্যাকাডেমিক পোস্টের ডিন পদে কেউ নেই দীর্ঘদিন ধরে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ হচ্ছে না। বর্তমানে ছ’শোর বেশি শিক্ষক- শিক্ষাকর্মী রয়েছেন এই প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজন প্রায় ৯০০-র মতো। ফলে ৩০০-র বেশি শূন্যপদ রয়েছেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় গত বছরের মতো এ বছরও স্পেশাল সমাবর্তন করছে না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থাৎ ডিএসসি এবং ডিলিট দেওয়া হবে না। ২৪ ডিসেম্বর এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডিগ্রি দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। সূত্রের খবর, সেই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন লেখক অমিতাভ ঘোষ।