প্রতীকী ছবি।
ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে বহু ছাত্রছাত্রীই স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করে থাকেন। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে মোট ১৫ লক্ষ শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভিন্ন শাখায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছেন। এবছরও এই রাজ্যের ৯৭ হাজারেরও বেশি পড়ুয়া জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়েছেন। সুতরাং, স্নাতকস্তরের আগ্রহী ইঞ্জিনিয়ারদের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। তাই যাঁরা স্নাতকোত্তর পর্বে পড়াশোনার কথা ভাবছেন, কিংবা যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা স্নাতকস্তরে পড়াশোনা করতে করতেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার চিন্তা ভাবনা করছেন, তাঁদের জন্য রইল এই বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
প্রথমেই জানা প্রয়োজন, কোন কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ইঞ্জিনিয়াররা বসতে পারেন।
১. গ্র্যাজুয়েট অ্যাপ্টিউট টেস্ট (গেট)
দেশজুড়ে সমস্ত স্নাতকোত্তীর্ণ কারিগরি (ইঞ্জিনিয়ার) এবং বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়াদের মাস্টার ডিগ্রি এবং পিএইচডি অর্জন করার প্রবেশিকা পরীক্ষা হল গেট। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া মানেই দেশের সেরা বিজ্ঞান এবং কারিগরি (ইঞ্জিনিয়ারিং) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মিলবে পড়াশোনার সুযোগ। অর্থাৎ স্নাতকোত্তর স্তরে যাঁরা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভিন্ন শাখার বিষয় নিয়ে পড়তে চান, তাঁদের জন্য এই পরীক্ষায় পাশ করাটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
২. ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস এগজ়াম (ইএসই/আইইএস)
স্নাতকস্তরের পড়াশোনার পর যাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারি ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ খোঁজেন, তাঁদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাটি। ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস এগ়জ়াম (ইএসই/আইইএস) নামে পরিচিত এই পরীক্ষাটি ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি) দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। যে সমস্ত পড়ুয়ারা সিভিল, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিকাল, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস বিষয়ে স্নাতকোত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁরাই এই পরীক্ষায় বসতে পারেন।
৩. কম্বমাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিসেস এগজ়ামিনেশন (সিডিএস)
ভারতীয় নৌ এবং বায়ু সেনায় যোগদান করার জন্য এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রয়োজন। আর এই দুই ক্ষেত্রে পরীক্ষায় বসার অনুমতি পান স্নাতকোত্তর ইঞ্জিনিয়াররা। সাধারণত, ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সি শিক্ষার্থীরাই এই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়ে থাকেন। এই পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রে দ্বাদশ শ্রেণিতে অঙ্ক এবং পদার্থবিদ্যা থাকা প্রয়োজন রয়েছে।
৪. এয়ার ফোর্স কমন অ্যাডমিশন টেস্ট (এএফসিএটি)
ভারতীয় বায়ু সেনায় সরাসরি যোগদান করার জন্য প্রয়োজন এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। দ্বাদশ শ্রেণিতে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং অঙ্ক থাকার পাশাপাশি, টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে কাজ করতে চাইলে স্নাতকস্তরে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি থাকা প্রয়োজন। এক মাত্র ইঞ্জিনিয়ার পড়ুয়াদেরই টেকনিক্যাল গ্রাউন্ড ডিউটি এবং ফ্লাইং ব্রাঞ্চ বিভাগে কাজ করার অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে।
৫. ইন্ডিয়ান নেভি এন্ট্রান্স টেস্ট (আইএনইটি)
ভারতীয় নৌবাহিনীতে যোগদানের ক্ষেত্রেও ইঞ্জিনিয়ার স্নাতকরা বাড়তি সুযোগ পেয়ে থাকেন। বছরে ২ বার এই পরীক্ষাটি হয়ে থাকে। গ্রাউন্ড এবং ফ্লাইং ডিউটি বিভাগের জন্য পরীক্ষাটি নেওয়া হয়ে থাকে। যে সমস্ত পড়ুয়ারা স্নাতকস্তরে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ন্যুনতম ৬০ শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকেন, তাঁরাই এই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়ে থাকেন। একইসঙ্গে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ইংরেজি ভাষাতেও ন্যুনতম ৬০ শতাংশ নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক।
তাই, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পাশাপাশি, নিজেদের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও সমান ভাবে প্রস্তুত করা প্রয়োজন রয়েছে। এতে আগামী দিনে পেশায় প্রবেশের সুযোগ পাওয়াটা একটু হলেও সহজ হয়ে উঠবে তাঁদের কাছে।