স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে পঞ্চম স্থানাধিকারী শৌনক কর। সংগৃহীত ছবি।
বুধবার প্রকাশিত হল এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। প্রথম দশের মেধাতালিকায় এ বার রয়েছেন ৫৮ জন। মোট ১৫টি জেলার কৃতীরা রয়েছেন এই তালিকায়। এর মধ্যে ছাত্র ৩৫ জন, ছাত্রী ২৩ জন। জেলার এই নজরকাড়া সাফল্যের মধ্যেও পঞ্চম স্থান দখল করে নিয়েছে কলকাতা। বেশ কিছু বছরের ব্যবধানে মেধাতালিকায় আবারও জায়গা করে নিয়েছে কলকাতার দুই ঐতিহ্যবাহী স্কুল।
এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে কলকাতা থেকে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩২,০৭৬ জন। উত্তীর্ণ হয়েছেন ২৯,৫৫৩ জন। পাশের হার ৯২.১৩ শতাংশ। পাশাপাশি কলকাতা থেকে মেধাতালিকায় রয়েছেন পাঁচ জন। গত বার ছিলেন তিন জন।
মেধাতালিকায় যুগ্ম ভাবে পঞ্চম স্থানাধিকারী শৌনক কর। ঐতিহ্যবাহী স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের এই কৃতীর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯২ (৯৮.৪ শতাংশ)। তালিকার অষ্টম স্থানে রয়েছে উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী স্কুলের পড়ুয়ারা। ৪৮৯ নম্বর পেয়ে হিন্দু স্কুল থেকে এই স্থান দখল করে নিয়েছে অর্ঘ্যদীপ দত্ত। অর্থাৎ তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৯৭.৮ শতাংশ নম্বর। এর পর নবম স্থানাধিকারী কলকাতার আরও এক নামী স্কুল পাঠভবনের পড়ুয়া উজান চক্রবর্তী। প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮ (৯৭.৬ শতাংশ)। সবশেষে, যুগ্ম ভাবে দশম স্থানে রয়েছেন যোধপুর পার্কের পাথফাইন্ডার হাই স্কুলের তন্নিষ্ঠা দাস এবং টাকি হাউজ় মাল্টিপারপাস গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী শতপর্ণা মিল। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৭ (৯৭.৪ শতাংশ)। কৃতীদের পাশাপাশি তাঁদের সাফল্যে স্বভাবতই খুশি এবং গর্বিত স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
এক সময়ে প্রায় প্রতি বছরই মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলে জ্বলজ্বল করত হিন্দু, স্কটিশের পড়ুয়াদের নাম। বেশ কিছু বছর সেই রেওয়াজে ছেদ পড়লেও এ বছর আবারও স্কুলগুলি নিজেদের স্থান অর্জন করতে সফল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস সান্যাল বলেন, “বরাবরই স্কুলের সার্বিক ফল ভাল হয়। কিন্তু ২০১৬ সালের পর উচ্চ মাধ্যমিকে আবার এ বছর আমাদের স্কুল মেধাতালিকায় স্থান অধিকার করতে পারল, তার জন্য ভীষণ ভাল লাগছে। শৌনক নিজের প্রচেষ্টাতেই এই রেজ়াল্ট করে আমাদের স্কুলের নাম উজ্জ্বল করেছে।” বরাবর মোবাইল থেকে দূরে থাকতে ভালবাসে এই কৃতী। তাই বিভাস মনে করেন, শৌনকের একাগ্রতা, নিয়মানুবর্তিতা কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ই তাঁর সাফল্যের নেপথ্য কারণ।
তবে কেন আর আগের মতো বাংলা মাধ্যমের নামী স্কুলগুলিকে মেধাতালিকায় দেখা যায় না, সে প্রসঙ্গে হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত বলেছেন, “কোভিড অতিমারির সময়টা বাদ দিলে প্রায় এক দশক পর মেধাতালিকায় আমাদের স্কুল। এর জন্য ইংরেজি মাধ্যমের প্রতি মধ্যবিত্ত বাঙালির ঝোঁক এবং বিষয়-শিক্ষকের অপ্রতুলতাই দায়ী।’