প্রতীকী ছবি।
রাজ্য জুড়ে বেশ কয়েক বছর ধরে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার অভিযোগ। পাশাপাশি, চলছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া। সেখানে দেখা গিয়েছে পাঁচ শতাংশেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলে যোগদান করেননি। এই সব কিছুর মাঝেই ফ্রেব্রুয়ারি থেকে শুরু মাধ্যমিক এবং মার্চে উচ্চ মাধ্যমিক। পরীক্ষা চলাকালীন সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন শিক্ষকের। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার কারণে অপ্রতুলতা তৈরি হয়েছে স্কুলগুলিতে । এই ঘাটতি রুখতে বেশ কয়েক বছর আগেই পাশের স্কুল থেকে শিক্ষক নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। কিন্তু সময়ের সঙ্গে নিয়োগ না হওয়ার ফলে অন্য স্কুল থেকে পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষক পাঠানো নিয়েও সমস্যায় পড়ছে স্কুলগুলি। এমনটাই অভিযোগ শিক্ষা মহলের একাংশের।
কলকাতার কালীধন ইনস্টিটিউশন-এর শিক্ষক বিশ্বরূপ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘নিয়মিত নিয়োগ না হলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। এতে যে স্কুলে সিট পড়ছে এবং যে স্কুল থেকে শিক্ষক নিয়ে আসা হচ্ছে, উভয়েরই পঠনপাঠনে সমস্যা থেকে যাবে।’’
প্রসঙ্গত, জানুয়ারি মাসের ২৯ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ প্রাথমিকে ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের তৃতীয় দফার কাউন্সেলিং। দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিংয়ে অনুমোদনপত্র হাতে পাওয়ার পরে পাঁচ শতাংশেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলে যোগদান করেননি। এরই মাঝে তৃতীয় দফা কাউন্সেলিংয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
শিক্ষক মহলের একাংশের অভিযোগ, অন্য স্কুল থেকে শিক্ষক নিয়ে নিলে সমস্যা তৈরি হয় সেই স্কুলের পঠনপাঠনে। এই সময়ে সরস্বতী পুজো, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও তার পরেই থাকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এই সব কিছুর পরেই স্কুলে স্কুলে শুরু হয় সামেটিভ পরীক্ষা। আবার বেশ কিছু সময়ে বিভিন্ন সরকারি সামাজিক প্রকল্পের জন্যও স্কুলগুলি নিয়ে নেওয়া হয়। ফলত এ সবের মধ্যে পড়ুয়াদের স্বাভাবিক পঠনপাঠন ব্যাহত হয়। কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকারের মতো সামাজিক প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে স্কুলগুলির মাঠ বা স্কুল প্রাঙ্গণ ব্যবহার করা হয়। সেই সময়েও পঠনপাঠন ব্যাহত হয়। তাই স্কুল চলাকালীন সময় বাদ দিয়ে অন্য সময়ে এই কর্মসূচি আয়োজন করলে ভাল।’’
অন্য দিকে আবার শিক্ষা মহলের একাংশ মনে করেন, পর্ষদ ও শিক্ষা সংসদের নিয়োগ অনুযায়ী পরীক্ষা চলাকালীন প্রত্যেকটি রুমে দু’জন করে পরীক্ষক রাখতেই হবে। যে সব স্কুলে শিক্ষক কম, তাঁদের এত সংখ্যক শিক্ষক গার্ড দেওয়া সমস্যার। তখনই অন্য স্কুল থেকে শিক্ষক নিতে হয়। এ প্রসঙ্গে দ্য পার্ক ইনস্টিটিউশনের অধ্যক্ষ সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, ‘‘মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি। কারণ প্রায় সমস্ত পড়ুয়াই রোজ পরীক্ষা দেয়। যা উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে নয়। তখন বিষয় ভিত্তিক পরীক্ষা দেয় শিক্ষার্থীরা। এই সমস্যা সমাধান নিয়ে দ্রুত সরকারের ভাবনাচিন্তা করা উচিত।’’