পোর্টাল উদ্বোধন করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং অন্যান্য আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র।
অবশেষে চালু হল বহু প্রতীক্ষিত স্নাতক স্তরে ভর্তি প্রক্রিয়ার অভিন্ন পদ্ধতি। বার বার হোঁচট খাওয়ার পর চলতি বছর থেকে অভিন্ন পোর্টালের মাধ্যমে রাজ্যের স্নাতক স্তরের পড়ুয়ারাও ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। বুধবার একটি সাংবাদিক বৈঠক থেকে এই পোর্টাল আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, “স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতার অভিযোগ মিলেছে, তাই বিভিন্ন কলেজে শূন্য আসন থেকে গিয়েছে। সেই সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে স্বচ্ছ ভাবে পড়ুয়াদের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা লক্ষ্যেই এই ‘সেন্ট্রালাইজ়ড অ্যাডমিশন পোর্টাল’ চালু করা হল। এর মাধ্যমে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৬১টি সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজ এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া যাবে।”
সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নিজস্ব চিত্র।
আবেদনের শর্তাবলি:
উল্লেখ্য, নতুন পদ্ধতিতে প্রথমে পছন্দের কলেজে আবেদন জানাতে না পারলে পরবর্তী কালে পড়ুয়ারা নিজের পছন্দের কলেজে সহজেই ভর্তি হতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে পূর্বে ভর্তি হয়ে যাওয়া কলেজের ফি পড়ুয়ারা নতুন কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় ব্যবহার করতে পারবেন। তবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, সংখ্যালঘু কলেজ,-সহ স্বশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে ভর্তি হওয়ার অভিন্ন ভর্তি প্রক্রিয়ার নিয়ম প্রযোজ্য নেই। এ ছাড়াও যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে বিএড, আইন, ফাইন আর্টস অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টস, ক্রাফ্টস, নৃত্য, সঙ্গীত কোর্স পড়ানো হয়, সেই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রেও ‘সেন্ট্রালাইজ়ড অ্যাডমিশন পোর্টাল’ ব্যবহার করা যাবে না।
শিক্ষা দফতরের তরফে পোর্টাল চালু করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নিজস্ব চিত্র।
তবে অভিন্ন পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পরেও কলেজগুলিকে শূন্য আসন ভর্তি করার দায়িত্ব পালন করতে হবে। কেন্দ্রীয় পোর্টালটি পরিচালনা করবে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা সংসদ। এই মর্মে সমস্ত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠকও করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পোর্টালে প্রশিক্ষণমূলক ভিডিয়োর মাধ্যমে পড়ুয়ারা সহজেই ভর্তির আবেদন জানাতে পারবেন। এর জন্য সরকারের তরফে একটি হেল্পলাইন নম্বরও চালু করা হয়েছে। পড়ুয়ারা ১৮০০১০২৮০১৪ নম্বরে ফোন করে কিংবা নির্দিষ্ট ইমেল আইডিতে মেল করে সমস্ত বিষয় জেনে নিতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালে শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ব্রাত্য বসু। কিন্তু সেই সময়ে অভিন্ন পোর্টালের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি। এর পর দ্বিতীয় দফায় শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এই ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করার চেষ্টা ফের শুরু হয়। যদিও সে বারও তা নানাবিধ জটিলতায় বাতিল হয়ে যায়। অবশেষে এক দশক পর ২০২৪-এ এই অভিন্ন পোর্টাল চালু করা হল শিক্ষা দফতরের তরফে।