সংগৃহীত চিত্র।
স্কুল ও কলেজের অভাব-অভিযোগ শোনার জন্য প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছিল রাজ্য সরকার। চলতি মাসের ৬ সেপ্টেম্বর চালু হয়েছিল নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর। আর সেখানেই অভাব-অভিযোগের সঙ্গে জমা পড়ল শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের মহার্ঘভাতা থেকে বেতন বৃদ্ধির দাবি।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আনুষ্ঠানিক ভাবে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছিলেন বিকাশ ভবন থেকে। কোনও অভিযোগ থাকলে দিনের যে কোনও সময়ে সেই নম্বরে জানানো যাবে, তা উল্লেখ করেছিলেন মন্ত্রী। এই নম্বর চালুর ১১ দিনের মধ্যেই স্কুল স্তরে ১,৪৮৪টি অভিযোগ জমা পড়ল। আর কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে অভিযোগ জমা পড়ল ৩,৩৯৯টি।
সূত্রের খবর, চালু হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে দিনপিছু ১৩৫টি করে অভিযোগ জমা পড়েছে স্কুল স্তরে। আর এই অভিযোগের পাহাড়ের মধ্যেও লুকিয়ে রয়েছে, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মহার্ঘভাতা থেকে বেতন বৃদ্ধির দাবি। যা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন বিকাশ ভবন এবং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতরের কর্তারা। শুধু তাই নয়, অভিযোগের তালিকাও লম্বা।
শিক্ষা দফরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “এই নম্বরে অভিযোগের ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের আকাল, লস্ট ইনক্রিমেন্ট সমস্যা, শিক্ষাকর্মীর অপ্রতুলতা, দীর্ঘদিনের বকেয়া এবং পরিকাঠামোগত খামতি-সহ নানা বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে। যার দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে আবার মহার্ঘ ভাতা ও বেতন বৃদ্ধির দাবিও জমা পড়েছে এই নম্বরে।” এ ছাড়া, শিক্ষিকাদের চাইল্ড কেয়ার লিভ নিয়ে সমস্যার কথাও জানিয়েছেন বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
সুষ্ঠু ভাবে সবটা পরিচালনায় স্কুলশিক্ষা দফতর ও কমিশনারেটের অফিসারদের নিয়ে একটি টিম তৈরি করা হয়েছে। যাতে যে কোনও অভাব অভিযোগ এলে তা দ্রুত জেলাস্তরে সমাধান করা যায়। এবং শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের সুযোগসুবিধা দেওয়া যায়।
শুধু যে স্কুল স্তরে অভিযোগ আসছে তা নয়, ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে অভিভাবকরাও পঠন-পাঠন সংক্রান্ত নানা অভিযোগ এই নম্বরে পাঠাচ্ছেন বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর। যে সমস্ত অভিযোগ গুরুত্ব অনুযায়ী বাছাই করে দ্রুত তার সমাধান করা হচ্ছে। স্কুল স্তরে এখনও পর্যন্ত ১,৪৮৪টি অভিযোগ জমা পড়েছে, যার মধ্যে ৬৮২টি অভিযোগের ইতিমধ্যেই সমাধান করা হয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, " আমাদের কাছে খবর আসছে শিক্ষক শিক্ষাকর্মীরা ডি আই অফিস কে এড়িয়ে সরাসরি গ্রিভান্স সেলে অভিযোগ করার জন্য তাদেরকে তিরস্কার করা হচ্ছে। বিকাশ ভবন এটার ও সমাধান করার ব্যবস্থা করুক ।"
একই ভাবে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন অভিযোগ জমা পড়েছে। ৩,৩৯৯টি অভিযোগের মধ্যে ৩,৩৩২টির সমাধান হয়েছে। বাকি ৬৭টি অভিযোগেরও দ্রুত সমাধান করা হবে বলে শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, যে সমস্ত ক্ষেত্রে অভিযোগের সমাধান শিক্ষা দফতরের হাতে রয়েছে বা সমাধান করা সম্ভব, সেগুলিতেই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্য দাবিগুলিকে আলাদা করে বাছাই করা হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়াটি ডিজিটালি নথিভুক্ত করা হচ্ছে। যে সমস্ত অভিযোগ গ্রহণ করা হচ্ছে, প্রত্যেককে প্রাপ্তিসূচক বার্তাও পাঠানো হচ্ছে দফতর থেকে।