WB Schools Summer Vacation 2025

পঠনপাঠন বিঘ্নিত করে লম্বা ছুটি নয়, প্রয়োজনে ক্লাসের সময় বদলের ভাবনা সরকারের

চলতি বছরে রাজ্যের সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে মে মাসের ১২ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত গরমের ছুটি পড়ার কথা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:২৪
Share:
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

চৈত্রেই তীব্র দহন। তবে এখনই স্কুলগুলিতে লম্বা ছুটির পথে হাঁটছে না রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই স্কুলে স্কুলে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির সামেটিভ পরীক্ষা। এর পর শুরু উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টারের ক্লাস। তাই আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে চায় বিকাশ ভবন। গরমের ছুটি নিয়ে চটজলটি সিদ্ধান্তের বদলে জেলাভিত্তিক রিপোর্টের পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চান তাঁরা।

Advertisement

চলতি বছরে রাজ্যের সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে মে মাসের ১২ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত গরমের ছুটি পড়ার কথা। কিন্তু ইতিমধ্যেই গরম বাড়তে শুরু করেছে। আগামী ৯০ দিন বাংলার আবহাওয়া কেমন থাকবে, তার আভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।

মৌসম ভবনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে জুন মাসে পশ্চিমবঙ্গ-সহ আরও বেশ কিছু রাজ্য তীব্র গরমের কবলে পড়তে চলেছে। এ দিকে রাজ্যের স্কুলগুলিতে এপ্রিল, সেপ্টেম্বর এবং মে মাসে আয়োজিত পরীক্ষার ভিত্তিতেই পড়ুয়াদের সার্বিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে। যার মধ্যে এপ্রিলের পরীক্ষা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এই পরীক্ষা শেষে শুরু হবে উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টারের ক্লাস। এই পরিস্থিতিতে কী করে সমস্ত সিলেবাস শেষ হবে, তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ শিক্ষক থেকে সংগঠনগুলির।

Advertisement

শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “পরিকল্পনাহীন ছুটি নয়, পূর্বের ৮৫টি ছুটি ফিরিয়ে দিয়ে বাস্তবসম্মত ভাবে গরমের ছুটি বাড়ানো হোক। বিভিন্ন জেলার পরিস্থিতি অনুযায়ী বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ছুটি অথবা মর্নিং স্কুল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুক। না হলে পরিকল্পনাহীন ভাবে সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে গ্রীষ্মে প্রায় দু' মাস ছুটি অথচ বেসরকারি স্কুলগুলি চালু থাকলে পঠনপাঠন বিঘ্নিত হবে।”

একই সুর নারায়ণদাস বাঙ্গুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়ার গলাতেও, “স্কুলের সামেটিভ পরীক্ষা চলছে। তার পরই তৃতীয় সেমেস্টারের ক্লাস শুরু হবে। লম্বা ছুটি পড়লে ক্ষতি হবে পড়ুয়াদের।”

সামেটিভ পরীক্ষা চলাকালীন গরমের ছুটি নিয়ে সংগঠনগুলির উদ্বেগ প্রসঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “যাঁরা এই প্রশ্ন তুলছেন, তাঁরা আর যা-ই হোক ছাত্রছাত্রীদের কথা ভাবছেন না। এই তদ্বিরমূলক প্রশ্ন তুলে সংগঠনগুলির কতিপয় শিক্ষক অজুহাত খুঁজছেন স্কুল না যাওয়ার। পরবর্তী কালে পর্ষদের উপরই যাতে দায় চাপানো যায়, তার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।”

কোনও লিখিত ঘোষণা না হলেও সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গরমের জন্য এ বছর ১১ দিন ছুটি থাকার কথা স্কুলগুলিতে, যা শুরু ১২ মে থেকে। অর্থাৎ এখনও বহু দেরি স্কুল ছুটি পড়ার। গত বছর ৯ থেকে ২০ মে ছিল গরমের ছুটি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর ২১ এপ্রিলই ছুটি পড়ে যায় স্কুলগুলিতে। ছুটির মেয়াদ শেষ হয় ২ জুন। অর্থাৎ প্রায় দু’মাস ছিল গরমের ছুটি। শিক্ষকদের মত, ১০ দিনের গরমের ছুটি বাড়িয়ে প্রায় দু’মাস করে দেওয়ায় পড়ুয়াদের সারা বছরের পাঠ্যক্রম শেষ করা ভীষণ কঠিন হয়ে পড়ে।

‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “গ্রীষ্মপ্রধান দেশে ১০/১২ দিন গ্রীষ্মাবকাশ হাস্যকর! পরিকল্পনা করে ছুটির তালিকা তৈরি করা উচিত। বছরের গোড়ায় ৪৫ দিন গরমের ছুটি ধরে অন্য জায়গা থেকে ছুটি কমিয়ে ৯০ দিন ছুটির তালিকায় রাখা উচিত।”

ক্যালেন্ডারের পূর্ব নির্ধারিত ছুটির বাইরে আগে থেকেই ছুটি ঘোষণা করা হলে সবচেয়ে অসুবিধায় পড়বে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। পুজোর আগেই তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা। গরমের লম্বা ছুটি প্রসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা অতিরিক্ত ছুটির পক্ষে নই। সেমেস্টার পদ্ধতিতে অতিরিক্ত ছুটি থাকলে টিচিং-লার্নিং প্রসেসে সমস্যা হবে। সামনে উচ্চমাধ্যমিকের তৃতীয় সিমেস্টার। পরিস্থিতি বুঝে দুপুরের বদলে সকালে ক্লাস করাক স্কুলগুলি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement