প্রতীকী ছবি।
কেটে গিয়েছে কালীপুজো, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বুধবার। আর এরই মধ্যে পড়ে গিয়েছে শিশুদিবস। আইসিএসসি, সিবিএসই-সহ রাজ্যের স্কুলগুলিতেও চলছে টানা ছুটি। ফলে শিশুদিবস এ বার স্কুলে উদ্যাপন করছেন না বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে সমাজমাধ্যমের রমরমার যুগে কচিকাঁচাদের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছে বহু স্কুলই। কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ছুটির পর স্কুল খুললে শিশুদিবস উদ্যাপন করা হবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
১৪ নভেম্বর শিশুদিবস উদ্যাপিত না হলেও পরে অনুষ্ঠান করার কথা ভেবেছেন স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল থেকে লোরেটো গার্লস হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ। লোরেটো গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা নন্দিনী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা শিশুদিবস পালন করব তবে স্কুল খোলার পর, ২৪ শে নভেম্বর। তার আগে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে শিশুদের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানো হয়েছে।’’
তবে ভাবে শিশুদিবস পালনে সায় নেই অনেকেরই। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া বা হোয়াটসঅ্যাপ কোন বিকল্প পথ নয়। শিশুদিবসে শিশুরা একসঙ্গে মিলিত হবে সেখানে আলোচনা, খাওয়া-দাওয়া, সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই দিনটির গুরুত্ব তুলে ধরা হবে। তেমনটা হওয়াই বাঞ্ছনীয়। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ব্যক্তিগত বার্তা পৌঁছে দেওয়া কোনও ভাবেই সামাজিক সম্মিলনের মতো অনুষ্ঠানের পর্যায়ে পড়ে না।”
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশুদিবস পালিত হয় বিভিন্ন সময়। ১ জুন পালিত হয় আন্তর্জাতিক শিশু দিবস। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু শিশুদের কাছে পরিচিত ছিলেন চাচা নেহরু নামেই। তিনি ছোটদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসতেন। তারঁ জন্মদিনটিই এ দেশে শিশুদিবস হিসাবে পালিত হয়।
প্রথমে ১৯৫৪ সালের ২০ নভেম্বর দিনটিকে শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিল রাষ্ট্রসঙ্ঘ। তবে ১৯৬৪ সালের ২৭মে জওহরলাল নেহরুর মৃত্যুর পর সিদ্ধান্ত হয় ১৪ নভেম্বর দিনটি ভারতে পালিত তবে শিশুদিবস হিসাবে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “আজকে ছুটি দেওয়া হল কেন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী একমাত্র পর্ষদ। উৎসবের ছুটির মধ্যে শিশুদিবস পড়ার কারণে হোয়াটসঅ্যাপে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হচ্ছে পড়ুয়াদের।”
শিক্ষাক্ষেত্র গুলিতে পড়াশোনার পরিবর্তে বিশেষ অনুষ্ঠান, কুইজ শো ইত্যাদির আয়োজন করা হয় শিশুদিবস উপলক্ষে। সেই সঙ্গে নেহরুর জীবনী ও ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করা হয় স্কুলগুলিতে।
শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, ‘‘অন্তর্জাল এখন একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে যেখানে কোন শারীরিক পরিশ্রম লাগে না। শিশুদের নিয়ে মৌখিক আড়ম্বর রয়েছে কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই। শিশুদিবসের শুভেচ্ছাবার্তা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এটা কোনও ভাবেই প্রাসঙ্গিক নয়”।
তবে শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, পুজো দেরি করে পড়ায় এবং সেই ছুটির মাঝে শিশুদিবস দিনটি পড়ে যাওয়ায় এই ধরনের বিকল্প পথ নিতে হয়েছে। ব্যবহৃত হয়েছে সমাজমাধ্যম। তা না হলে শিক্ষাক্ষেত্রে এই দিনটি গুরুত্ব দিয়েই পালন করা হয়