প্রতীকী চিত্র।
বর্তমানে মাতৃভাষায় পঠনপাঠনের জন্য একের পর এক সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাজ্যে। বেসরকারি স্কুলগুলিতে বহু আগেই প্রায় অচল মাতৃভাষা। এ রকম পরিস্থিতিতে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)-এর নয়া বিজ্ঞপ্তি আশার আলো দেখাচ্ছে। শুক্রবার বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে সিবিএসই-র অধীনস্থ স্কুলগুলিকে প্রি-প্রাইমারি (প্রাক-প্রাথমিক) স্তর থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি-র পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষাতেও পড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্কুলগুলি পাঠ্যবই বা অন্যান্য সামগ্রীর জন্য অন্যান্য স্কুল এবং বিষয় বিশেষজ্ঞদেরও সাহায্য নিতে পারবে ।
বিজ্ঞপ্তিতে সিবিএসই-র তরফে জানানো হয়েছে, ২০২০-র জাতীয় শিক্ষানীতিতে মাতৃভাষায় পঠনপাঠনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আর তা বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক, ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি) এবং উচ্চশিক্ষা দফতরগুলি নানা পদক্ষেপ করছে। বোর্ডের তরফেও তাই স্কুলগুলিকে আর্জি জানানো হচ্ছে, প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত নিজেদের মাতৃভাষায় পঠনপাঠনের সুযোগ দিতে হবে পড়ুয়াদের।
তবে এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কী কী বাধা রয়েছে, তা বোর্ডের তরফে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথমত, বিভিন্ন বিষয় ইংরেজির পাশাপাশি বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় পড়ানোর জন্য দক্ষ শিক্ষকের অভাব। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন বিষয়ের জন্য উচ্চ মানের বহুভাষিক পাঠ্যবইয়ের অভাব। তৃতীয়ত, সরকারি স্কুলগুলিতে পড়ানোর ক্ষেত্রে সময়ের সীমাবদ্ধতা। এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য বোর্ড কী কী পদক্ষেপ করবে, তা-ও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, সংবিধানের তালিকাভুক্ত ২২টি আঞ্চলিক ভাষায় এনসিইআরটি যত দ্রুত সম্ভব পাঠ্যবই প্রস্তুত করবে। চেষ্টা করা হবে যাতে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ থেকেই পড়ুয়ারা এই বইগুলি ব্যবহার করতে পারে।
উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রেও ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ভাষায় শিক্ষাদান এবং পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় টেকনিক্যাল, মেডিক্যাল, ভোকেশনাল, আইন এবং অন্যান্য বিষয়ের পাঠ্যবইও এখন পড়ুয়ারা ব্যবহার করছে। এই পরিস্থিতিতে স্কুলগুলিরও উচিত বহুভাষিক শিক্ষার ভিত্তি গড়ে তোলা। এর ফলে স্কুল থেকে কলেজ অবধি সমস্ত স্তরেই পড়ুয়ারা ইংরেজি ছাড়াও মাতৃভাষায় শিক্ষালাভ করতে পারবে। সিবিএসই অধীনস্থ স্কুলগুলির ভূমিকা তাই এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।