প্রতীকী ছবি।
বাঙালিদের মধ্যে দুই ধরণের পেশা বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। একটি হল চাকরি, দ্বিতীয়টি হল ব্যবসা। দ্বিতীয় শ্রেণির পেশাদার ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে শিক্ষার জগতটা সময়ের নিরিখে যথেষ্ট পরিবর্তিত হয়েছে। একটি ব্যবসাকে কী ভাবে সফল করে তোলা যেতে পারে, এবং সেই সফলতার সিঁড়ি বেয়ে আরও উন্নতি কেমন করে করা সম্ভব, এই সমস্ত খুঁটিনাটি এখন ক্লাসরুমের হোয়াইট বোর্ডে লিখে শেখানো হয়ে থাকে, যেটা আগে কাজ করতে করতে ব্যবসাদারেরা অভ্যাস করতেন।
এবার যে সমস্ত পড়ুয়ারা ব্যবসা, বাণিজ্য সম্পর্কে আগ্রহী, তাঁরা কী ভাবে এই বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেতে পারেন? সেক্ষেত্রে কী উচ্চ মাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগে পড়তেই হবে? নাকি অন্যান্য বিভাগের পড়ুয়ারাও পেতে পারেন সুযোগ? পড়াশোনা সম্পর্কিত এই প্রশ্নগুলির ভিত্তিতে রইল কিছু তথ্য, যা শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত নিতে খানিকটা সাহায্য করবে।
কারা পড়তে পারবেন এই বিষয় নিয়ে?
উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল্য বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, এমন শিক্ষার্থীরা এই বিষয় নিয়ে পড়তে পারবেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর রাখা প্রয়োজন রয়েছে।
কোন কোন ডিগ্রির অধীনে পড়াশোনা করার সুযোগ রয়েছে?
স্নাতক স্তরে ব্যাচেলর ইন বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ব্যাচেলর অফ ম্যানেজমেন্ট স্টাডিস— এই সমস্ত ডিগ্রি কোর্সে পড়ার সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা। স্নাতকোত্তর পর্বে মাস্টারস করার পাশাপাশি পিএইচডিও করতে পারবেন পড়ুয়ারা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাজ্যের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এই বিষয়টি পড়ানো হয়ে থাকে।
কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়?
কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়া বাধ্যতামূলক। কমন অ্যাডমিশন টেস্ট (ক্যাট), ম্যানেজমেন্ট অ্যাপটিউট টেস্ট (ম্যাট), ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স ম্যানেজমেন্ট অ্যাপটিউট টেস্ট (ডব্লুবি জেইম্যাট)-সহ বেশ কিছু সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে পড়াশোনা করতে চাইলে।
কাজের সুযোগ কেমন?
ব্যবসা ব্যবস্থাপনা তথা বিজ়নেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি নিয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর পর্বে পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে হতে থাকা ক্যাম্পাসিং-এর মাধ্যমে চাকরির সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি বহুজাতিক সংস্থার তরফেও শিক্ষানবিশি (ইন্টার্নশিপ)-এর সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়াও সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে বিজ়নেস অ্যাডভাইজার, বিজ়নেস অ্যানালিস্ট, বিজ়নেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার-সহ বিভিন্ন পদে নিয়মিত ভাবে নিয়োগ করা হয়ে থাকে।
বেতন:
এই বিষয়ে পেশাদারদের প্রাথমিক ভাবে চার অঙ্কের বেতন দিয়ে কর্মজীবন শুরু হলেও, পরবর্তীকালে পাঁচ থেকে ছয় অঙ্কের বেতন পাওয়ার সুযোগ থাকে। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্রজেক্টের ক্ষেত্রেও ‘বিশেষ’ ভাবে নিয়োগ করা হয়ে থাকে নবীন স্নাতকদের। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত বেতন পাওয়ার সুযোগও পেয়ে থাকেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্যায়, বলিউড অভিনেতা জন আব্রাহাম, রনদীপ হুডা-সহ আরও বহু কলাকুশলী এই বিষয় নিয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করেছেন। তাঁরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে যথেষ্ট সফল। তাই ব্যবসা নিয়ে ভবিষ্যতে পড়াশোনা পেশাদার হয়ে উঠতে সাহায্য যেমন করবে, তেমনই এই বিষয়টি নিয়ে নতুন সৃজনশীল ভাবনা বাড়িয়ে তুলবে ক্রমশ।