—ফাইল চিত্র
দেশের কাঁধে আজ আঠেরোটা শবের ভার। বাংলায় এল দুই জওয়ানের মৃতদেহ। অন্যদের শবও পূর্ণ সামরিক সম্মানে পৌঁছচ্ছে পরিজনদের কাছে। শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। কিন্তু শোকেই কি এর সমাপ্তি? জবাব খুঁজছে গোটা জাতি।
সুদূর সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরা তাঁদের। দিন-রাত এক করে, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা ভুলে কর্তব্যে অটল। গিরি-কন্দর লঙ্ঘন করে ঢুকে পড়া যায় ভারতে, কিন্তু সীমান্তের এই সদাসতর্ক প্রাচীর দুর্লঙ্ঘ্য হয়ে ওঠে প্রতিপক্ষের জন্য। তাই বার বার মারণ আঘাতের নিশানা তাঁরাই।
পরিজনরা আজ সুবিচার দাবি করেছেন, ন্যায় চেয়েছেন। মৃত জওয়ানের পরিজনরা বলেছেন, এই হত্যালীলার চক্রীরা যেন রেহাই না পায় কোনও মূল্যেই। প্রধানমন্ত্রীও দৃঢ় স্বরে জানিয়েছেন, কারও রেহাই হবে না। কিন্তু ন্যায়ের দাবি আজ শুধু ওই ১৮ জওয়ানের পরিবারের নয়। গোটা দেশই পরিজন তাঁদের। সমগ্র জাতি আজ ন্যায় চাইছে। আঠেরোটা তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিল যে জঘন্য ষড়যন্ত্রীরা, তাদের উপযুক্ত পাওনা-গন্ডা বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি উঠছে।
চক্রীদের উপযুক্ত প্রাপ্য কোন পথে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে, তা দেশের নেতৃত্বই স্থির করুক। কিন্তু যে প্রশ্নগুলো উঠছে, সেগুলির জবাবও খোঁজা শুরু হোক।
প্রশ্ন উঠেছে গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে। উপত্যকায় অশান্তির সুযোগ নিয়ে হামলা হতে পারে, এমন সামগ্রিক সতর্কবার্তা হয়তো ছিল। কিন্তু জঙ্গি গতিবিধি সম্পর্কে আরও নিখুঁত তথ্যও তো থাকা উচিত ছিল। কেন ছিল না, সে জবাব কিন্তু আমাদের খুঁজতে হবে।
প্রশ্ন আরও রয়েছে। শুধু গোয়েন্দা ব্যর্থতাতেই কি লুকিয়ে রয়েছে বার বার রক্তাক্ত হওয়ার এই অভিশাপ? নাকি এর জন্য দায়ী আরও কোনও বিষ ছোবল? যদি সত্যিই কোনও বিষ ছোবলের অস্তিত্ব থাকে, তা হলে তার সমূল বিনাশের তোড়জোড় কিন্তু এখনই শুরু করতে হবে।