ঋণ মকুবের দাবিতে রাজপথে কৃষকেরা। ছবি: রয়টার্স।
মহারাষ্ট্রে আবার বসন্তের বজ্রনির্ঘোষের ইঙ্গিত। আরও একবার কৃষকদের লম্বা মিছিল দেখল মু্ম্বই। মনে করিয়ে দিল এই মহারাষ্ট্রেরই সাম্প্রতিক কালের আরও এক বিরাট কৃষক পদযাত্রার কথা। যে পদযাত্রা নাড়িয়ে দিয়েছিল গ্রাম তথা নগর জীবনকে, ঈষৎ টলিয়েও দিয়েছিল মসনদকে। কৃষকদের অধিকাংশ দাবি সেই সময় মেনে নিয়েছিল সরকার।
প্রশ্নটা হল, তার পরে আবারও এই কৃষক মিছিলের সাক্ষী কেন হল মহারাষ্ট্র তথা গোটা দেশ? বস্তুত, বজ্রনির্ঘোষের ইঙ্গিত সেখানেই। বিরোধীদের তরফে বারবার অভিযোগ করে আসা হচ্ছে, মোদী জমানায় কৃষি তথা গ্রামীণ ক্ষেত্রে সরকারের নজর কম। অতএব প্রত্যাশা ও বঞ্চনার নানান অভিযোগ দানা বাঁধছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গুজরাত নির্বাচনেও এই ক্ষোভের আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। বস্তুত, আঁচ পাওয়া যাচ্ছে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো বিভিন্ন রাজ্যেও। ২০১৯ এর নির্বাচনের আগে বিজেপি সরকারের জন্য সেটা সু-ইঙ্গিত বাহী নয়।
আরও একটা বড় অভিযোগ, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর প্রচারের ঢক্কানিনাদে যত অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, তার একটা অংশও যদি কৃষকদের উন্নয়নের লক্ষ্যে খরচ করা হত, তাহলে হয়তো আজ মহারাষ্ট্রের এই বিরাট মিছিলকে দেখা যেত না।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
চকিত চমকের কিছু কৌশলী সমাধানের বদলে আসলে দরকার আশু এবং দীর্ঘস্থায়ী কিছু পরিকল্পনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছায়া-যুদ্ধে ব্যস্ত শাসক বাস্তবের এই দুনিয়ায় নজর দেওয়ার শিক্ষাটা পাচ্ছে কি না সেটা বলা কঠিন হয়ে পড়ছে। আশার কথা একটাই, এ দেশের গণতন্ত্রের ভিতটা এখনও যথেষ্ট মজবুত। সাধারণ মানুষ ভোটের বাক্সে তাঁদের পছন্দ অথবা অপছন্দটা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে আসতে পারেন। যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ গ্রাম ও কৃষি অর্থনীতির উপর নির্ভরশীল, সে দেশে যথাযোগ্য সমাধানের পথে না যেতে পারলে বিপদ কিন্তু শাসকেরই। বিধানসভা ভোটের সেমিফাইনালে আম-আদমির মনের প্রতিফলন পাওয়া যাবে। ফাইনালের আগে সরকার যথেষ্ট প্রস্তুত হতে পারবে তো?
আরও পড়ুন: ঋণমকুবের দাবি নিয়ে হাজার হাজার কৃষকের মিছিল মুম্বইয়ে
আরও পড়ুন: নোটবন্দি ধাক্কা দিয়েছে, মানল মোদীরই মন্ত্রক