—প্রতীকী চিত্র।
প্রায় ছ’মাস পরে জনসমক্ষে এলেন যুবরানি কেট। মার্চে তিনি জানিয়েছিলেন, ক্যানসারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি চলছে তাঁর। এ বার রাজা চার্লসের আনুষ্ঠানিক জন্মদিন উপলক্ষে বাকিংহাম প্যালেসের বারান্দায় এসে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ ও বিমানের মহড়া দেখলেন তিনি। কেট জানিয়েছেন, ভাল-মন্দ মিশিয়ে দিন কাটছে। এখনও সব ঠিক হয়নি। ফিলিপ ট্রেসি হ্যাট আর বড় সাদা-কালো বো বাঁধা সাদা পোশাকে সেজে কেট জনতার দিকে তাকিয়ে হেসেছেন, হাত নেড়েছেন। রাজাও পাশেই ছিলেন, তাঁরও ক্যানসারের চিকিৎসা চলছে, তবে তাঁকে সুস্থই দেখিয়েছে। রাজা অবশ্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নর্ম্যান্ডিতে মিত্রবাহিনীর অবতরণের ৮০ বছর পূর্তিতেও উপস্থিত ছিলেন। অন্য দিকে, মার্চে যুবরাজের সঙ্গে শপিংয়ের সময় এক ঝলক দর্শন আর ভিডিয়োবার্তায় অসুস্থতার খবর দেওয়া ছাড়া, সেই ডিসেম্বর থেকে প্রকাশ্যে আসেননি কেট। কবে থেকে জনকল্যাণমূলক দায়িত্বগুলি পুরোদমে সামলাবেন, জানা নেই।
অভিবাদন: প্রাসাদের বারান্দা থেকে হাত নাড়ছেন রাজা তৃতীয় চার্লস এবং যুবরানি কেট।
দুঃসময় ও দুঃশাসন
বাংলার মন্বন্তর নিয়ে বিবিসির তথ্যবিবরণী থ্রি মিলিয়ন-এর দ্বিতীয় পর্বে শোনা গেল সুজ়ানা হারবার্টের কথা। প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের প্রাণঘাতী ১৯৪৩-এর মন্বন্তরের সময় বাংলার গভর্নর ছিলেন তাঁর ঠাকুরদা, জন হারবার্ট। সুজ়ানা এই বিপর্যয়ে ঠাকুরদার ভূমিকার বিষয়ে সম্প্রতি জেনেছেন। এই পরিবারের উত্তরাধিকারী হওয়ার জটিলতা মানতে কষ্ট হচ্ছে তাঁর। ১৯৪০-এর গ্রুপ-ছবিতে তাঁর ঠাকুরদা, তৎকালীন ভাইসরয় লিনলিথগো ও অন্য কর্তাব্যক্তিদের ছবি দেখিয়েছেন। ছবির ছোট্ট ছেলেটিই সুজ়ানার বাবা, ভারতে অতিবাহিত শৈশবের স্মৃতি বলতে যিনি হাতির পিঠে ফাদার ক্রিসমাসের গল্প শোনাতেন। ১৯৪৩-এ প্রয়াত জন ছিলেন সুবিস্তৃত ঔপনিবেশিক কাঠামোর অংশমাত্র। তিনি ছিলেন দিল্লির কর্তাদের অধীনে, তাঁরা আবার ছিলেন লন্ডনের কর্তৃপক্ষের অধীন। হাংরি বেঙ্গল-এর লেখক জনম মুখোপাধ্যায় বলেছেন, দুর্ভিক্ষের সঙ্গে জনের প্রত্যক্ষ যোগ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাঁর একটি নীতির জেরেই বাংলার হাজারো গ্রামে নৌকা আর চাল বাজেয়াপ্ত বা ধ্বংস করা হয়। জনের যুক্তি ছিল, এতে জাপানিরা আক্রমণ করলে স্থানীয় এলাকা থেকে রসদ পাবে না, ফলে বেশি দূর এগোতে পারবে না। সুজ়ানা জানিয়েছেন, তিনি যারপরনাই লজ্জিত। দুর্ভিক্ষ বিষয়ে লেখাপড়া করছেন, পারিবারিক নথিপত্র ঘাঁটছেন। বলেছেন, দুর্ভিক্ষের ক্ষয়ক্ষতির এই ব্যাপকতার জন্য ঠাকুরদার জারি করা নীতির যথেষ্ট ভূমিকা আছে। তাঁর দক্ষতা, পদমর্যাদা সবই ছিল। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের এক সুদূর প্রান্তে ৬ কোটি মানুষের জীবন পরিচালনার দায়ভার তাঁকে দেওয়াটাই ঠিক হয়নি। সুজ়ানা বলেছেন, “শৈশবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সঙ্গে নিজের যোগসূত্র পেয়ে গৌরবান্বিত হতাম। আজ আলমারিতে ঠাকুরদার পোশাকে ‘মেড ইন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া’-র ছাপ দেখলে, কেঁপে উঠি।”
শরণে হরে কৃষ্ণ মন্দিরে ঋষি সুনক।
কুরুক্ষেত্রে ঋষি সুনক
ব্রিটিশদের নির্বাচনী প্রচার মাঝরাস্তায়; ক্রমশ ক্লান্ত, একা হয়ে যাচ্ছেন ঋষি সুনক। তবু, শেষ না দেখে ছাড়বেন না। বলছেন, হিন্দু ধর্মবিশ্বাস তাঁকে কর্তব্য ও কর্মপথে অটল থাকতে এবং ফলাফল নিয়ে না ভাবতে শিখিয়েছে। স্পষ্টত, অনুপ্রেরণাটি এসেছে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা-য় অর্জুনকে বলা শ্রীকৃষ্ণের বাণী থেকে। সুনক বলেছেন, হিন্দু ধর্মে ফলাফলের আশা ছাড়াই কাজকে গুরুত্ব দেওয়ার এই শিক্ষা তাঁকে শক্তি জুগিয়েছে, চাপ সামলাতে শিখিয়েছে। তাই যা ঠিক, তিনি সেটুকু করেই সন্তুষ্ট। তবে, দল তুষ্ট নয়। দল চায় তিনি ফলাফলেই জোর দিন, কারণ জনমত সমীক্ষা বলছে তাঁদের ভোটে ধস নামবে। গদি হারানোর ভয়ে মন্ত্রীরা ঘোঁট পাকাচ্ছেন, ভোটের পর সুনকের বদলে কাকে দলনেতা বাছা যায়।
অনুবাদে বাংলা গল্প
বাংলা শব্দ ‘ন্যাকা’ বা তামিল ‘আইআইয়ো’-কে অন্য ভাষায় কী বলা যায়? বাংলা সাহিত্য ও কবিতার ইংরেজি অনুবাদ ভাল হয় না— কথাটা কতটা সত্যি? ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে জয়পুর সাহিত্য উৎসবের তাঁবুতে উঠল এই সব প্রশ্ন। বিভিন্ন সময়ে লেখা দুই বাংলার ছোট গল্পের অনুবাদের সঙ্কলন প্রকাশ উপলক্ষে আলোচনায় ছিলেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি লেখক তহমিমা আনম ও অনুবাদক অরুণাভ সিন্হা। অনুবাদক বললেন, সবচেয়ে শক্ত কবিতার অনুবাদ, বিশেষত যখন ছন্দোবদ্ধ ভাবেই ভাষান্তর করতে হয়। লন্ডনের মূলধারার শ্রোতাদের সামনে বাংলা সাহিত্য আলোচনার এমন সুযোগ বিরল।