একটা জীবনাবসান হয়েছে। কেউ বলছেন, একটা যুগের অবসান। কেউ বলছেন, দীর্ঘ সান্নিধ্যের অবসান। কেউ বলছেন, অনুপ্রেরণার অবসান। আসলে একটা সুবিশাল প্রতিষ্ঠানের অবসান ঘটল।
ওম পুরী— আত্মনির্মিত এক প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বলিউডে তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয়ের এক অন্য ধারার সূচনা তাঁর হাত ধরে। কণ্ঠস্বরে, বাচনে, চলচ্চিত্রের পর্দায় আত্মউন্মোচনে তিনি যেন এক অন্য প্রবাহের উৎসস্থল ছিলেন।
তাঁর আকস্মিক প্রয়াণের পর অবশ্য শুধু অভিনেতা ওম পুরীকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। চর্চায় এখন মানুষ ওম পুরীও। দীর্ঘ দিনের সহকর্মীরা, বন্ধুস্থানীয়রা, তরুণ সহ-অভিনেতারা— সবার চোখেই তিনি আজ ভেসে উঠছেন এক অনন্য মানুষ হিসেবেও। ঔদার্য্যে, সাহসে, দ্বিধাহীনতায়, মুখোশহীনতায় ভাস্বর হয়ে উঠছে তাঁর নামটা।
তিক্ততাও ছিল হয়তো কোথাও। দাম্পত্য জীবনটা সরলরেখায় আর চলছিল না শেষ কয়েকটা বছর। কিন্তু অশ্রু আজ ভাসিয়ে নিয়েছে সেটুকুও।
ওম পুরীর মৃত্যুতে অনেক কিছুর অবসান দেখছি আমরা। আসলে কিন্তু ওম পুরীদের অবসান হয় না। প্রায় সাড়ে চার দশকের অভিনয় জীবনে পথের দু’ধারে যত মণিমুক্তো ছড়িয়ে গেলেন, সে সবের ঔজ্জ্বল্য চিরন্তন, চিরভাস্বর। ওম পুরীদের জন্ম হয়, মৃত্যু হয় না।
অদ্ভুত এক বৈপরীত্য বা এক বিপ্রতীপ সমাপতনের কথা বলতেই হয় এই প্রসঙ্গে। ওম পুরী নিজের জন্মের তারিখটা জানতেন না। মৃত্যুর তারিখটা কিন্তু চিরস্মরণীয় হয়ে গেল।