সুবিশাল ক্যানভাসে এম এফ হুসেনের আঁকা ছবি, ফুটে উঠেছে সফদর হাশমির হত্যাদৃশ্য। নলিনী মালানির রিমেম্বারিং টোবা টেক সিংহ শিল্পকর্মটির সঙ্গের ভিডিয়োয় পরমাণু বোমার ধ্বংসতাণ্ডব ও মৃত্যুলীলা, ভারতে দেশভাগ। দেখানো হচ্ছে ভারত-পাকিস্তানের পরমাণু বোমা পরীক্ষা, দেশভাগের দৃশ্য। অডিয়োতে চলছে সে সময়ের খবর। দু’পাশের দু’টি স্ক্রিনে ভারত ও পাকিস্তানের দুই মহিলা নীরবে শাড়ি ভাঁজ করছেন, তাঁদের ঘিরে চলছে ধ্বংসলীলা, বিস্ফোরণের আওয়াজ। মেঝেতে বারোটা টিন-ট্রাঙ্ক, শরণার্থীদের মালপত্রের প্রতীক। সব মিলিয়ে ধ্বংস, শিকড় হারানোর ছেঁড়া ছেঁড়া অনুভূতি তৈরি হচ্ছে। দিল্লির কিরণ নাদর মিউজ়িয়ম অব আর্টের সহযোগিতায় লন্ডনের বার্বিকান সেন্টারের দু’টি তল জুড়ে চলছে বিশাল প্রদর্শনী দি ইম্যাজিনারি ইনস্টিটিউশন অব ইন্ডিয়া: আর্ট ১৯৭৫-১৯৯৮। ভারতের জরুরি অবস্থা ও পারমাণবিক পরীক্ষার মধ্যবর্তী ভারতের প্রতিবাদ, দাঙ্গাবিধ্বস্ত অশান্ত বছরগুলিকে তুলে ধরেছে। অর্পিতা সিংহের মাই মাদার ছবিতে নব্বই দশকের সাম্প্রদায়িক হিংসার বিশৃঙ্খলা, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর আঁকা তৈয়ব মেহতার দুর্গা মহিষাসুরমর্দিনী ছবিতে দেবীর কাছে পরাজিত বিভেদের শঙ্কা। রুমান্না হুসেনের শিল্পকর্মে টেরাকোটার ভাঙা পাত্র, চার দিকে টুকরো। বাবরির ভগ্নাবশেষ ও তার পরে মুম্বইয়ের দাঙ্গার দ্যোতক। শিল্পীদের তালিকায় গিবে পটেল, ভিভান সুন্দরম, সুধীর পটবর্ধন, এন এন রিমজ়োন, ভূপেন খাখর। রয়েছেন শিবা ছাছি, পাবলো বার্থোলোমিউ প্রমুখ আলোকচিত্রী।
হত্যা: বার্বিকান সেন্টারে মকবুল ফিদা হুসেনের আঁকা সফদর হাশমির ছবি।
বায়ুসেনার দীপাবলি
বাকিংহামশায়ারের বিশাল হল্টন হাউসে জাঁকজমকের সঙ্গে প্রথম বার দীপাবলির অনুষ্ঠান করল রয়্যাল এয়ার ফোর্স। পার্টির থিম ছিল দুই বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের অবদান। বায়ুসেনা প্রধান বিশ্বযুদ্ধের ভারতীয় সৈন্যদের পাশাপাশি বর্তমানে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কর্মরত ভারতীয় বংশোদ্ভূতদেরও শ্রদ্ধা জানালেন। বিশেষ শ্রদ্ধা জানানো হল নুর ইনায়ত খানকে। নাচ, আতশবাজি, ভারতীয় খাবারে জমজমাট সন্ধ্যা, বায়ুসেনার ব্যান্ড বাজাল বলিউডের সঙ্গীতও। রথসচাইল্ড’দের এই হল্টন হাউস এখন বায়ুসেনা আধিকারিকদের বিশ্রামাগার। এখানে দ্য ক্রাউন, ব্রিজারটন (বলরুম দৃশ্য), ডাউনটন অ্যাবি ইত্যাদি সিরিজ়, প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস প্রভৃতি সিনেমার শুটিং হয়েছে।
মঞ্চে হানিফ কুরেশি
হানিফ কুরেশির উপন্যাস অবলম্বনে মঞ্চায়িত দ্য বুদ্ধ অব সাবার্বিয়া নাটকটির প্রথম রজনী-তে এলেন স্বয়ং লেখক-নাট্যকার! ২০২২-এর ২৬ ডিসেম্বর দুর্ঘটনার পর কুরেশি ঘাড়ের নীচ থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত। হুইলচেয়ারে এসে প্রেক্ষাগৃহের পিছনে চুপচাপ বসেছিলেন। নাটকটি পাকিস্তানি ছেলে করিমের গল্প। সত্তরের দশকের দক্ষিণ লন্ডনের শহরতলিতে সে পাকিস্তানি বাবা, বহু দিনের অসুস্থ ইংরেজ মায়ের সঙ্গে থাকে। পালাতে মরিয়া। পশ্চিমের লোকেদের আধ্যাত্মিকতা ও যোগ বেচার চেষ্টা করেন বাবা, এক ইংরেজ মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছেন। কৌতুকরস ও সহানুভূতিময় আখ্যানটি আংশিক আত্মজৈবনিক। ১৯৯০-এ প্রকাশিত গ্রন্থটি জিতেছিল শ্রেষ্ঠ প্রথম উপন্যাসের পুরস্কার হুইটব্রেড প্রাইজ়। সেটি নাট্যরূপে মঞ্চস্থ করছে রয়্যাল শেক্সপিয়র কোম্পানি। কুরেশির দু’হাত কাজ করে না। সহায়করা খাইয়ে দেন, পরিষ্কার করেন। দুর্ঘটনার পরে তাঁর স্মৃতিকথা শ্যাটারড-এর শ্রুতিলিখন হাসপাতালেই করেছেন ছেলে। কুরেশি বলেছেন, লেখা চালিয়ে যাবেন। শ্যাটারড এ সপ্তাহেই প্রকাশিত হল।
নাট্যকার: হানিফ কুরেশি।
ঋষির প্রস্থান
টোরিদের নতুন নেতা নির্বাচিত কেমি বাডনখ। অর্থাৎ, ঋষি সুনক পাকাপাকি ভাবে বিদায় নিলেন। সাধারণ সাংসদ হিসাবে পিছনের বেঞ্চে বসবেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধী নেতা হিসাবে শেষ বক্তৃতায় বলেছেন, এ বার আরও বেশি সময় কাটাতে পারবেন ‘বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জায়গা’ ইয়র্কশায়ারে। অপরূপ গ্রামগুলিতে লম্বা হাঁটা লাগাবেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দু’বছর আগে দীপাবলির দিনে দায়িত্ব নিয়েছিলেন সুনক, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে প্রদীপ জ্বেলেছিলেন। দীপাবলির ঠিক আগেই খোয়ালেন পদ। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তাঁর স্মৃতিও শিগগিরি নিবে যাবে।