London Diary

লন্ডন ডায়েরি: ইতিহাসের অপেক্ষায় ঋষি সুনক ও এশীয়রা

ব্রিটেন কি ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী পেতে চলেছে? ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে মনে রাখার মতো ঘটনা হবে সে ক্ষেত্রে।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২২ ০৫:২৬
Share:

ব্রিটেন কি ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী পেতে চলেছে? ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে মনে রাখার মতো ঘটনা হবে সে ক্ষেত্রে। তবে ঋষি সুনকের রাস্তাটা সহজ নয়। শোনা যাচ্ছে, বরিস জনসন সমর্থকদের বলছেন, আর যে-ই হোন, ঋষি নন। বৈমানিকদের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, সুনককে মহাকাশে বোমায় উড়িয়ে দিতে চান। কারণ, জনসন তাঁকে বিশ্বাসঘাতক মনে করেন— তাঁকে সরাতে মাসের পর মাস ছক কষেছেন সুনক। জানা গিয়েছে, জনসনের ইস্তফার আগে থাকতেই, গত ডিসেম্বরে, ‘রেডি ফর ঋষি’ নামে নিজের ওয়েবসাইট নথিবদ্ধ করেন। তবে, মিমের রাজ্যে সম্ভাব্য ইতিহাসটিকে ইতিমধ্যেই উদ্‌যাপন করতে শুরু করেছেন ভারতীয়েরা। কোথাও দেখা যাচ্ছে দশ নম্বর বাড়ির বিখ্যাত কালো দরজায় আমপাতার মালা আর ডোরবেলের পাশে স্বস্তিকা আঁকা। আর একটিতে সামনের দরজার বাইরে জুতোর স্তূপ। বাড়ি ঢোকার আগে ভারতীয়েরা যেমন চটি-জুতো রাখেন আর কী! সব ক্যাপশনে লেখা ‘দশ নম্বরে এশীয় পরিবার’।

Advertisement

ভবিষ্যৎ?: মিমে ১০ নম্বর বাড়ির দরজার বাইরে জুতোর স্তূপ, (ডান দিকে) ঋষি সুনক

বানান বিভ্রাট

ঝকঝকে প্রচারের জন্য বিখ্যাত সুনকের টিম, তাঁদেরও চোখ এড়িয়ে গেল মস্ত ভুল। নেতা বক্তব্য রাখছেন, আর পিছনের পোস্টারে ‘ক্যাম্পেন’ বানানটাই দৃষ্টিকটু ভাবে ভুল। জনৈকের টুইট, “নতুন ভাষা তৈরি করলেন না কি? ভবিষ্যতের নেতার খুঁটিনাটির দিকে নজর দেওয়া উচিত।” ভুল অবশ্য তড়িঘড়ি শোধরানো হয়। প্রসঙ্গত, নামের আদ্যক্ষরের সৌজন্যে, নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় সব চাইতে স্মার্ট স্লোগান ছিল পেনি মরডন্টের— ‘পিএম ফর পিএম!’

Advertisement

পালাবার পথ নেই

নেতা বাছাইয়ের প্রচারে কনজ়ারভেটিভ এমপিদের খেয়োখেয়ি উপভোগ করছেন লেবার এমপি’রা। শেখ হাসিনার ভাইঝি লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, প্রথম ভোটের দিন তিনি পার্লামেন্টের ছোট্ট মিটিং ঘরে ফোন করতে যান। দেখেন, কোনায় চেয়ারের পিছনে লুকিয়ে আছেন প্রবীণ এক কনজ়ারভেটিভ এমপি। বিরক্ত মানুষটি জানান, নেতৃত্ব পদপ্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের এগারোটা ফোন এসেছে। অথচ তাঁদের কাউকেই তিনি সমর্থন করছেন না। সেটা বলার পরও ফোন থামছে না। বিচক্ষণ টিউলিপ ওই এমপির নাম প্রকাশ করেননি।

রাজপ্রাসাদের কাণ্ড

বিবিসি নিউজ়নাইট সাক্ষাৎকারে বাকিংহাম প্রাসাদে এমিলি মেটলিসের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু। সামনে ছিল জলের বোতল, আর দুটো গ্লাস। ভার্জিনিয়া জিওফ্রে অভিযোগ তোলেন, ১৭ বছর বয়সে তাঁর সঙ্গে যৌন ব্যভিচার করেছেন যুবরাজ। বিবিসির বিখ্যাত সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে প্রশ্নোত্তরের পর যুবরাজের পতন সুনিশ্চিত হয়। যুবরাজ অবশ্য বলেছিলেন যে, তিনি ভার্জিনিয়াকে চেনেন না। নাইটক্লাবে ভার্জিনিয়ার সঙ্গে নাচতে গিয়ে অ্যান্ড্রু ঘামছিলেন, সেই কথার উত্তরে তিনি বলেন, বিশেষ শারীরিক কারণে তাঁর তো ঘাম হয়ই না! গাড়ি দুর্ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা হয় ওই সাক্ষাৎকারকে। এর পরই অ্যান্ড্রুর রাজকীয় খেতাব যায়, জিওফ্রেকে ক্ষতিপূরণও দিতে হয়। এ বার এই সাক্ষাৎকার ও কী ভাবে তা বাস্তবায়িত হল, সে সব নাটকীয় নেপথ্য কাহিনি নিয়ে সিনেমা তৈরি হতে চলেছে। অ্যান্ড্রুর চরিত্রে থাকতে পারেন হিউ গ্রান্ট। অন্য দিকে, দ্য টাইমস-এ ধারাবাহিক ভাবে বার হচ্ছে টম বাওয়ারের নতুন বই রিভেঞ্জ। তার থেকে জানা গিয়েছে, প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্যের প্রস্তুতির সময় রানি ঘনিষ্ঠদের কাছে জোর গলায় পরিষ্কার বলেছিলেন, “মেগান আসছে না, বাঁচা গিয়েছে।” মেগান তখন সাত মাসের গর্ভবতী, তাই আসেননি। হ্যারি একাই এসেছিলেন। বেশ থমথমে পরিবেশে শেষকৃত্য হয়েছিল উইনসর কাস্‌ল-এর সেন্ট জর্জ’স চ্যাপেলে। রানি কালো মাস্ক পরে একা বসেছিলেন। বইটা নাকি প্রাসাদের ভিতরের লোকেদের কথা শুনে লেখা।

বিতর্ক: বিবিসি সাক্ষাৎকারে প্রিন্স অ্যান্ড্রু

এ বার লন্ডনে দাবানল?

লন্ডন আক্ষরিক অর্থেই পুড়ছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এত গরমের চোটে ঘরবাড়ি, খেতখামারে আগুন লেগে যাচ্ছে। দমকল বিভাগ জানিয়েছে, আগুন নেবাতে অনুরোধ করে মঙ্গলবার যত ফোন এসেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তত ফোন আসত। লস অ্যাঞ্জেলেস, স্পেনে যেমন দাবানল দেখা যায়, এখানেও কি সেটাই ভবিতব্য?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement