স্বাধীনতা আর দেশভাগ একই সঙ্গে আসে আয়ারল্যান্ডের দ্বীপভূমিতেও। ব্রিটিশ-অধিকৃত আয়ারল্যান্ড আগে ভাগ হয়, তার পরে স্বাধীন হয়। ১৯২১-এর ৩ মে আয়ারল্যান্ড দ্বীপটির আনুষ্ঠানিক বিভাজন হয়ে উত্তর আয়ারল্যান্ডের সৃষ্টি হয়। এই সপ্তাহে ব্রিটেনের আলাদা প্রদেশ হিসেবে জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন করবে উত্তর আয়ারল্যান্ড। আইরিশ জাতীয়তাবাদীরা প্রধানত ক্যাথলিক। তাঁরা ব্রিটিশ শাসনের অবসান চাইতেন। সংযুক্তিবাদীরা প্রধানত প্রটেস্টান্ট, থাকতে চাইতেন ব্রিটেনেই। দ্বীপটিতে এই নিয়ে চিরবিবাদ। কয়েক দশক ধরে জাতীয়তাবাদীরা ‘হোম রুল’-এর পক্ষে আন্দোলন করেন। ব্রিটেন দেশটিকে ভাগের সিদ্ধান্ত নেয়। তিন জনের প্যানেল আয়ারল্যান্ডের নতুন সীমান্তরেখা আঁকে।
১৯২২-এ দ্বীপের ছাব্বিশটা কাউন্টি নিয়ে তৈরি হল ‘আইরিশ ফ্রি স্টেট’, পনেরো বছর পরে যা পরিচিত হবে আয়ারল্যান্ড নামে। উত্তর-পূর্বের ছ’টা কাউন্টি নিয়ে তৈরি উত্তর আয়ারল্যান্ড রইল ব্রিটেনেরই সঙ্গে। এই দেশভাগ ছায়া ফেলেছে উভয়েরই ইতিহাসে, বৃহত্তর ব্রিটেনের ইতিহাসেও। নব্বই দশক পর্যন্ত সংঘর্ষে আন্দোলিত ছিল প্রদেশটি। উত্তরের আইরিশ রিপাবলিকান আর্মিই ভারতের শেষ ভাইসরয় ও রানির আত্মীয় লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে হত্যা করে। প্রদেশটির শতবর্ষে শান্তির বার্তা পাঠিয়েছেন রানি। বলেছেন, “নব্য প্রজন্মের নেতারা বিভেদের ঊর্ধ্বে পুনর্মিলনের কথা ভাবেন।” তবে ব্রেক্সিট-উত্তর যুগে শান্তি বড়ই ঠুনকো।
উদ্যাপন: উত্তর আয়ারল্যান্ডের শতবর্ষ উপলক্ষে পোস্টার পড়েছে বেলফাস্টে।
সাহায্য গেল দিল্লিতে
দিল্লির রাস্তায় অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন ভারতীয়েরা। টিভিতে দেখে সময় নষ্ট করেনি ব্রিটিশ শিখদের দানসংস্থা ‘খালসা এড’। ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ২০০টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর ভরে ভার্জিন এয়ারলাইন্সের উড়ানে দিল্লি পাঠিয়েছে। তহবিল সংগ্রাহক, যশপাল সিংহই ছিলেন নিখরচার উড়ানটির চালক। দুটো মালবাহী বিমানে সংস্থাটি আরও ৫০০ অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর পাঠিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীর কথায়, দ্রুততা জরুরি। এক মুহূর্ত দেরিতেও একটি প্রাণ মুছে যেতে পারে।
রাজদণ্ডের প্রায়শ্চিত্ত
লন্ডনের কিউ গার্ডেনসের বড় আকর্ষণ ভিন্দেশি বিচিত্র ক্রান্তীয় উদ্ভিদে সাজানো কাচের পাম হাউস। আছে কলা, আখ, অর্কিড, পদ্মের সরোবর। বিশ্ব জুড়ে জাদুঘরগুলির মতোই রাজোদ্যান কিউ-ও সংগ্রহগুলির ঔপনিবেশিকতার তকমা ঝেড়ে ফেলতে চায়। তাই উদ্যানে এ বার সাম্রাজ্যবাদী অতীতের আলোচনাও থাকবে। দেশীয়রা কোন কাজে উদ্ভিদটি ব্যবহার করতেন, কী ভাবে তা ব্রিটেনে এল, কতটা জটিল ছিল বাণিজ্যের সেই ঐতিহাসিক ও সামাজিক অভিযাত্রা। যেমন অতলান্তিক মহাসাগরের বাণিজ্যতরীর অন্যতম পণ্য আখ। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে আখ চাষের জন্য ব্রিটিশরা আফ্রিকা থেকে দাস, ভারত থেকে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক নিয়ে যেতেন। আখের সঙ্গে দাসত্বের এই সম্পর্কের কাহিনি শোনাবেন ভারত ও ফিজি বংশজাত অভিনেতা প্রযোজক অজয় ছাবরা। পরে তা পাম হাউসের ভিতরে লিখে রাখা হবে।
জনসনের বিপত্তি
গৃহসজ্জা কেলেঙ্কারিতে ফেঁসেছেন বরিস জনসন। প্রধানমন্ত্রী ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের ফ্ল্যাট সাজাতে আশি হাজার পাউন্ড খরচ করেছেন। অভিযোগ, দলের দাতা-তহবিল থেকে বাহান্ন হাজার পাউন্ডেরও বেশি অনুদান নিয়েছেন, সদস্যদের প্রয়োজনের খাতে উল্লেখও করেননি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে তিনটে তদন্ত হচ্ছে। অন্দরসজ্জা নিয়ে সমাজমাধ্যমেও কাঠগড়ায় তিনি। তাঁর বাগদত্তা ক্যারি সাইমন্ডস ডাউনিং স্ট্রিটের পূর্বতন সাজ নিয়ে ‘জন লুইস’ ব্র্যান্ডটিকে ঠুকেছিলেন, তারাও পাল্টা বিপণন কৌশলে ক্যারি ও জনসনের দিকে বাঁকা মন্তব্য ছুড়ছে, ভক্তরা হেসে অস্থির। পকেটসই দামের ওয়ালপেপার দেখছেন— ইঙ্গিতপূর্ণ ছবি তুলেছেন লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টার্মার। জনসনের সোনা রঙের ওয়ালপেপারের দাম যে নাকি মিটার প্রতি ৮০০ পাউন্ড!
আড়ম্বর: বরিস জনসনের পছন্দের সাজ।
আত্মনির্ভর ঋষি
অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনকের দফতর জানিয়েছে, মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী অক্ষতামূর্তি নিজ খরচেই ১১, ডাউনিং স্ট্রিটের ফ্ল্যাটটি সাজিয়ে নিয়েছেন। তবে, ঋষির স্ত্রী অবশ্য ধনকুবেরের মেয়ে।