ভারতে থাকার সময়ই লেখালিখি শুরু তাঁর
তিনিই একমাত্র লেখিকা যিনি বুকার পেয়েছেন, দু’দুটো অস্কারও! রুথ প্রাওয়ার জাভালার নাম জড়িয়ে আছে জেমস আইভরি ও ইসমাইল মার্চেন্টের ছবির সঙ্গে। ‘হিট অ্যান্ড ডাস্ট’ উপন্যাসের জন্য বুকারজয়ী রুথ ২০১৩ সালে মৃত্যুশয্যায় মেয়েকে জানিয়ে যান তাঁর ইচ্ছে— তাঁর সব কাগজপত্র যেন ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে দেওয়া হয়। তাঁর পরিবারকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আশ্রয় দিয়েছিল ব্রিটেনই, এখানেই তাঁর ইংরেজি সাহিত্যপ্রীতির উন্মেষ। তাঁর পাণ্ডুলিপি, নোট, চিঠিপত্র খুব শীঘ্রই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। কোলোন-এর এক ইহুদি পরিবারে জন্ম হয়েছিল রুথের। বাবা পোলিশ, মা জার্মান। ১৯৩৯-এ যুদ্ধ শুরুর আগে তাঁরা পালাতে পেরেছিলেন। কিন্তু তাঁর পরিবারের ৪০ জন কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে মারা গিয়েছেন শুনে যুদ্ধের শেষে তাঁর বাবা আত্মহত্যা করেন। ভাবী স্বামী, ভারতীয় স্থপতি সাইরাস জাভালা-র সঙ্গে রুথের দেখা হয় ব্রিটেনে। পরে রুথ ভারতে আসেন। তাঁর লেখালিখির শুরুও এই সময়েই। ‘নীল গগন’ আর ‘সাধনা নোটবুক’ ব্র্যান্ডের খাতা, তাঁর নিউ ইয়র্কের ঠিকানায় ভারতীয় প্রকাশকদের পুরনো ডাকটিকিট-সাঁটা চিঠি তার সাক্ষী। দিল্লিতে থাকার সময়েই আইভরি-মার্চেন্টের সঙ্গে তাঁর সুদীর্ঘ বন্ধুতার সূত্রপাত। ১৯৮৬-তে ‘আ রুম উইথ আ ভিউ’ ও ১৯৯২-এ ‘হাওয়ার্ডস এন্ড’-ছবির চিত্রনাট্যের জন্য অস্কার পান রুথ। রুথ-স্মরণে ব্রিটিশ লাইব্রেরি আয়োজন করেছিল অনুষ্ঠানের, ছিলেন জেমস আইভরি, অনিতা দেশাই, ক্যাথরিন ফ্রিম্যান, ফেলিসিটি কেন্ডল ও সাইমন ক্যালো। সবাই উজাড় করে দিলেন রুথকে নিয়ে তাঁদের স্মৃতির ঝাঁপি।
স্মৃতিতে: রুথ প্রাওয়ার জাভালা
উইম্বলডনে মেয়েরা
উইম্বলডন শুরু হয়েছে। তাবৎ টেনিস-ভক্ত ও তাবড় সেলেব্রিটিদের ঠিকানা এখন দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের এই শহর। তিন বারের চ্যাম্পিয়ন ক্রিস এভার্ট বলেছেন, লেডিজ় সিঙ্গলস ফাইনালটা বরং রোববারে হোক, যাতে দু’সপ্তাহ ব্যাপী এই টুর্নামেন্টের মধুরেণ সমাপয়েৎ-এর সুযোগটুকু মেয়েরা পান। ঐতিহ্য অনুসারে পুরুষদের ফাইনাল ম্যাচ হয় দ্বিতীয় রোববার, ওই ম্যাচ দিয়েই টুর্নামেন্টের সমাপন হয়। এভার্টের মতে, পুরুষদের ফাইনালকে এই চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা ম্যাচ বলে দাগিয়ে দেওয়ার ধারাটা আসলে সেই সময়ের, যখন মেয়েদের দেখা হত ‘দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক’ হিসেবে। ১৯৩৩-১৯৬৮ পর্যন্ত মহিলাদের সিঙ্গলস ফাইনাল হত শনিবার, পুরুষদের ফাইনাল এক দিন আগেই হয়ে যেত। ‘ওপ্ন যুগ’ শুরু হওয়ার এক বছর পর, ১৯৬৯-এ এই ধারায় বদল আসে। মেয়েদের আরও অভিযোগ, সেই ১৯৩৪ থেকে উইম্বলডনের প্রথম ম্যাচ শুরু হয় সেন্টার কোর্টে, প্রথম সোমবার— পুরুষদের মধ্যে যিনি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, তাঁর ম্যাচ দিয়ে। মহিলাদের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন প্রথম সেন্টার কোর্টে নামেন তার পর দিন। এটাই বা কেন চলবে?
জল বাঁচাও
আগামী ক’সপ্তাহে উইম্বলডন আর লর্ডসে ঘাস সবুজ রাখাই কঠিন কাজ, কারণ ব্রিটেনে তাপপ্রবাহ চলছে। এখনও অবধি তাপমাত্রা কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গত পাঁচ বছরে এই প্রথম ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড— চারটে দেশেই জুলাইয়ে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। সাধারণ মানুষকে বলা হয়েছে জল ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে, গাড়ি না ধুতে, অল্প সময়ে স্নান সারতে, বাথটব, জলঝারি বা হোসপাইপ ব্যবহার না করতে। উত্তর আয়ারল্যান্ড গত ২৩ বছরে এই প্রথম হোসপাইপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে, ধরা পড়লে হাজার পাউন্ড জরিমানা!
শান্ত ষাঁড়ের গল্প
ছোটদের এই বই গাঁধীরও নাকি খুব প্রিয় ছিল। তারই বিরল প্রথম সংস্করণ লন্ডনের সদ্বি’জ়-এ নিলামে উঠছে ১০ জুলাই। ১৯৩৬ সালে মুনরো লিফ লিখেছিলেন ‘দ্য স্টোরি অব ফার্দিনান্দ’। বইয়ের অলঙ্করণ করেছিলেন রবার্ট লসন। স্পেনের একটা ষাঁড়ের গল্প, যে ষাঁড় বুলফাইটিং রিং-এ যেতে মোটেই আগ্রহী নয়, বরং গাছের নীচে আয়েশে বসে ফুলের গন্ধ নিতে মন চায় তার। স্পেনের গৃহযুদ্ধের কিছু আগে বইটি প্রকাশিত হলে আন্তর্জাতিক স্তরে বিতর্ক দানা বাঁধে। ‘ফার্দিনান্দ’ হয়ে ওঠে বৃহত্তর রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত সংলাপের প্রতীক। ‘ছোটদের বই’ তকমা ছাড়িয়ে বড়দেরও বই হয়ে ওঠে এটি। ‘রেড প্রোপাগান্ডা’, ‘ফ্যাসিস্ট প্রোপাগান্ডা’— অনেক কিছু বলা হয়েছে এই বইকে। স্পেন, জার্মানিতে নিষিদ্ধ হয়েছিল এই বই, হিটলার আদেশ দিয়েছিলেন, পুড়িয়ে ফেলো! পোলান্ডে একমাত্র ‘না-কমিউনিস্ট ছোটদের বই’ হিসেবে এই বইকে ঢুকতে দেন স্তালিন। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট উইলসন এক কপি আনিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসেও। জার্মানির পতনের পর এই বইয়ের ৩০,০০০ কপি সারা দেশে বিতরণ করা হয়েছিল। আমেরিকায় প্রকাশের এক বছরের মধ্যেই ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’-কে ছাপিয়ে বেস্টসেলার হয় ‘দ্য স্টোরি অব ফার্দিনান্দ’। ‘লাইফ’ ম্যাগাজিন একে বলেছে ‘উইনি দ্য পু’-এর পর শ্রেষ্ঠ কিশোর ক্লাসিক। নিলামে বইটির দাম আড়াই থেকে তিন হাজার পাউন্ড উঠতে পারে।