প্রতিষেধকে ছাড়পত্র দিয়ে তারকা তিনি
আমজনতা এত দিন তাঁর নাম শোনেনি। অথচ, ফাইজ়ারের কোভিড টিকাকে রেকর্ড সময়ে ছাড়পত্র দিয়েছেন তিনিই। ব্রিটেনের চিকিৎসাব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক এমএইচআরএ–র প্রধান ডাক্তার জুন রেন। প্রচারবিমুখ রেনের বয়স এখন ৬৮। ২০১৯ সালে অবসরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখনই কোভিড-১৯’এর আক্রমণ। কাজ বাড়ল, ল্যাবরেটরিগুলির পাঠানো বিস্তারিত রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখা শুরু করলেন। টিকা প্রদানের মানচিত্রে প্রথম দেশ হিসেবে ব্রিটেনের নাম নিশ্চিত করলেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের নজর ঘুরল তাঁর দিকে। ইউরোপের রাজনীতিকরা, এমনকি আমেরিকার খ্যাতনামা স্বাস্থ্যকর্তাও টিকার দ্রুততা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। উত্তর দেননি রেন। সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট বলেছেন, “জনসাধারণের নিরাপত্তা সর্বাগ্রে।”
জনস্বাস্থ্যক্ষেত্রে জীবনের ৩৫টি বসন্ত সঁপেছেন রেন। চাপ সামলেছেন আগেও। সয়েছেন গভীর ক্ষত। ১৯৯৫-এ মাত্র ৪৬-এই কোলন ক্যানসার কেড়ে নেয় তাঁর প্রতিভাবান স্বামী টনি রেনকে। কলেজের প্রেম, বলা হত ‘সেরা দাম্পত্য’। রেন কাজে ঢেলে দেন নিজেকে। এমএইচআরএ-র ওষুধ বিভাগের ভিজিল্যান্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট-এর ডিরেক্টর হন ২০০৬ সালে। দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনও এখন এই শান্ত বিজ্ঞানীর সম্মতির অপেক্ষায়।
মূলভূমিকায়: জুন রেন
ম্যালেরিয়ার টিকা?
কোভিড টিকা নিয়ে গবেষণারত অক্সফোর্ড জেনার ইনস্টিটিউট। ম্যালেরিয়ার একটি টিকা আবিষ্কারেরও শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে তারা। মানবদেহে সেটির পরীক্ষা সফল হলে উন্নয়নশীল বিশ্বে শিশু-সহ অন্তত ৫ লাখ মৃত্যু রুখে দেওয়া যাবে। আফ্রিকার পাঁচ জায়গায় ৪,৮০০ শিশুর উপরে টিকার পরীক্ষা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর এড্রিয়ান হিল জানিয়েছেন, এ বছর আফ্রিকায় কোভিডের চেয়ে দশ গুণ বেশি লোক ম্যালেরিয়ায় মারা যেতে পারতেন। টিকার দাম কম রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ট্রায়ালের দিকে তাকিয়ে আছে ভারতও।
আদার ব্যাপার
বেকিং-এ তুমুল আগ্রহের জেরে প্রথম লকডাউনে ইংল্যান্ডের দোকানগুলোয় ময়দা ফুরিয়ে গিয়েছিল। এই লকডাউনে আদার আকাল পড়েছে। কারণ, সকলে বড়দিনে নিজেরাই জিঞ্জারব্রেড কুকিম্যান বানাতে চান। সুপারমার্কেটগুলো আদাগুঁড়ো জোগান
দিতে হিমশিম খাচ্ছে। অনেকের কাছে তাজা আদাও নেই! কেন, জানতে হলে জাহাজের খবর নিতেই হবে। পৃথিবীর আদা রফতানির অর্ধেকটাই করে চিন। সেখানে এ বার ফলন খারাপ, শ্রমিক কম। কোভিডের কারণে জোগান শৃঙ্খলও বিপর্যস্ত। যাঁরা বেকিং করতে চান, তাঁদের জন্য ঘোর দুঃসংবাদ বইকি। শীতে আদা দেওয়া মশলা চা-ও তো মিলবে না।
সিংহী সমাচার
৩১ ডিসেম্বর ব্রেক্সিটের মেয়াদ ফুরোনোর আগেই লন্ডন চিড়িয়াখানার তিন সিংহীকে জার্মানির চিড়িয়াখানায় পৌঁছতে হবে। লন্ডনের ভারতীয় সিংহ ভানুর সঙ্গে তাদের ভাব জমেনি। তাই সঙ্গীর খোঁজে এবং বন্দরের লরি পার্কে বন্দিদশা এড়াতে ২১ ডিসেম্বরই জার্মানি রওনা দেবে সঙ্কটাপন্ন প্রজাতিভুক্ত তিন গির সিংহিনি। লন্ডন চিড়িয়াখানায় ভানুর মন ভোলাতে আসছে নতুন সিংহী আর্যা।
বিপন্ন: লন্ডনের চিড়িয়াখানায় এশীয় সিংহী
একান্তে বড়দিন
রানি ও প্রিন্স ফিলিপ বড়দিন কাটাবেন একলা, উইনসর কাসল-এ। অন্য বার বড়দিনে তাঁরা স্যান্ডরিংহ্যামে থাকেন। ছেলেমেয়ে, নাতিপুতিদের সঙ্গে উপহার দেওয়া-নেওয়া, খেলাধুলা চলে। বক্সিং ডে (২৬ ডিসেম্বর) কাটে আশপাশের জঙ্গলে শিকার করে।
শুধুই ডেভিল?
পানশালায় জটলা ঠেকাতে সরকারের ঘোষণা, পর্যাপ্ত খাবার অর্ডার দিলে তবেই সুরা পরিবেশন করা যাবে। ‘পর্যাপ্ত খাবার’ কী, তাই নিয়ে শুরু হইচই। মধ্যমণি ‘স্কচ এগ’। সেটাও নাকি ‘পর্যাপ্ত খাবার’! এতে ডিমসেদ্ধকে সসেজ মাংসের আস্তরণে মুড়ে, পাউরুটিগুঁড়োয় মাখিয়ে ডুবো তেলে ভেজে তোলা হয়। ব্রিটিশের কল্যাণে এই পদটি বাংলায় এসে ‘ডিমের ডেভিল’ হয়েছে। ডেভিলে সুসিদ্ধ ডিমটির উপর সসেজ মাংসের বদলে কিমা ও আলুসেদ্ধর পুরু পরত পড়ে। কিন্তু সে তো চায়ের সঙ্গে টা! তাকে নৈশভোজ ভাবতে বাঙালির মর্যাদায় বাধবে। লকডাউনের আইনকানুনই সর্বনেশে!