Editorial News

এত বেহুঁশ কেন!

যদি পায়ে হেঁটে পার হতেই হয় রেল ট্র্যাক, তা হলে কানে মোবাইল বা হেডফোন কিছুতেই নয়, এ কথা নিবিড় প্রচার কর্মসূচির মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে। শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি উদ্যোগেও অনেক সচেতনতা প্রসার কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ছবিটা বিন্দুমাত্র বদলাচ্ছে না।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

নিজেদের জীবনকে আমরা ভালবাসি না, এমন নয়। অবশ্যই অত্যন্ত ভালবাসি। ভালবাসি বলেই প্রতিটা মুহূর্তকে সাজিয়ে রাখতে চাই কোনও না কোনও ভাল লাগার উপাদানে। কিন্তু জীবনের আনন্দ নিঃশেষে উপভোগের তাড়নায় এতটা বেপরোয়া হয়ে ওঠাও তো উচিত নয়, যাতে জীবনই নিঃশেষিত হয়ে যায়।

Advertisement

বার বার ঘটছে একই ঘটনা। ঘটনা না বলাই ভাল, প্রত্যেকটিই আসলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। কখনও মোবাইল কানে নিয়ে রেললাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়া। কখনও ছুটন্ত ট্রেনের সামনে নিজস্বী নিতে গিয়ে শেষ হয়ে যাওয়া। কয়েক দিন আগে দেখলাম, রেল ট্র্যাকের উপরে ভিডিও শুটিংয়ে বুঁদ হয়ে গিয়ে দুই পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু। সাম্প্রতিকতম সংযোজন উত্তরপ্রদেশের ছয় কিশোর, কানে হেডফোন গুঁজে লাইন বরাবর হাঁটতে হাঁটতে যাঁরা চিরতরে মুছে গিয়েছে।

আর কত? আরও কতগুলো প্রাণ এ ভাবে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ার পরে আমাদের হুঁশ ফিরবে? হুঁশ ফেরানোর চেষ্টা যে হচ্ছে না, তা তো নয়। প্রশাসনিক স্তরে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। রেলওয়ে ট্র্যাক ধরে হাঁটা বা পারাপার করা যে বিপজ্জনক, সে বিষয়ে বার বার সচেতন করা হচ্ছে। যদি পায়ে হেঁটে পার হতেই হয় রেল ট্র্যাক, তা হলে কানে মোবাইল বা হেডফোন কিছুতেই নয়, এ কথা নিবিড় প্রচার কর্মসূচির মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে। শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি উদ্যোগেও অনেক সচেতনতা প্রসার কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ছবিটা বিন্দুমাত্র বদলাচ্ছে না। নিয়মিত দুর্ঘটনার খবর আসছে। প্রতিটি দুর্ঘটনা প্রায় একই ভাবে ঘটছে।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

শুধু রেলওয়ে ট্র্যাকে নয়, সড়কেও একই ছবি। হেলমেট পরে বাইক চালান, গাড়িতে সিটবেল্ট বেঁধে বসুন, বেপরোয়া গতিতে ছুটবেন না, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না, ফোন কানে গাড়ি চালাবেন না— নিবিড় প্রচার কর্মসূচির মাধ্যমে এই কথাগুলো বার বার বলা হচ্ছে। শুনতে শুনতে কথাগুলো মুখস্থ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শুধু মুখস্থই হচ্ছে, আত্মস্থ হচ্ছে না। গাড়ি বা বাইক চালানোর সময় কিছুই মনে থাকছে না, অথবা মনে রাখছি না। স্বাভাবিক ভাবেই বার বার রক্তাক্ত, বীভত্স হয়ে উঠছে সড়ক।

আরও পড়ুন: কানে ইয়ারফোন, লাইন ধরে হাঁটতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত ৬ কিশোর

এই রক্তস্রোত থামা সত্যিই জরুরি। জীবন বড় বহুমূল্য, তার এমন অঢেল অপচয় কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement