‘বাংলায় বিজ্ঞান চর্চা কেন নয়?’ (১৫-০১) শীর্ষক প্রবন্ধের সূত্রে বলি, ২০১৪ সাল থেকে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞানপ্রেমীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে ‘বিজ্ঞান’— যার মূল ঠিকানা ইন্টারনেট বা আন্তর্জালে, bigyan.org.in-এ। এখনও পর্যন্ত ২০০-টির বেশি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নিউটনের সূত্রের মতো ধ্রুপদী বিজ্ঞান নিয়েও আলোচনা হয়েছে, মেশিন লার্নিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আলঝাইমারস রোগ, অটিজম, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ইত্যাদি বিষয়ে প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। গুগল অ্যানালিটিক্স-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাসে সাত থেকে দশ হাজার পাঠক। এখনও পর্যন্ত ছ’লক্ষ বারের বেশি ওয়েবসাইটটি পড়া হয়েছে (‘পেজ ভিউ’)। এই চিঠিতে ‘বিজ্ঞান’ উদ্যোগের কয়েকটি দিক তুলে ধরছি।
প্রথমত, আধুনিক বিজ্ঞানের নানা দিকের উপর গভীর অথচ সহজবোধ্য আলোচনা কোনও এক বা দু’জন বিজ্ঞান লেখকের পক্ষে সম্ভব নয়। ‘বিজ্ঞান’ উদ্যোগের মূল স্তম্ভ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে আন্তর্জালের মাধ্যমে তৈরি হওয়া বিজ্ঞানীদের এক নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কে আছেন বাংলাভাষাপ্রেমী বাঙালি বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান লেখক, আবার তাঁদের পরিচিত অন্যান্য বিজ্ঞানী, যাঁরা বাংলাভাষী নন, বা বাংলায় লিখতে পারদর্শী নন। ‘বিজ্ঞান’-এ প্রকাশিত অধিকাংশ লেখাই লিখেছেন সেই বিষয়ের গবেষকেরা, যাঁদের ঠিকানা দেশ-বিদেশের সেরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
দ্বিতীয়ত, ‘বিজ্ঞান’-এ প্রকাশিত প্রবন্ধগুলো গবেষণা জগতে প্রকাশিত সহকর্মী পর্যালোচনা বা peer review পদ্ধতি অনুযায়ী সম্পাদিত। অর্থাৎ, প্রতিটা লেখার বৈজ্ঞানিক সত্যতা ও ভাষাগত দিক যাচাই করার পরেই লেখা প্রকাশিত হয়। এই যাচাইয়ের জন্য বেছে নেওয়া হয় সেই বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতামত অনুযায়ী বহু ক্ষেত্রেই লেখার আমূল পরিমার্জনা করতে হয়। এই হোয়াটসঅ্যাপ ফরওয়ার্ডের যুগে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে লেখানো ও পিয়ার রিভিউ-এর মতো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
তৃতীয়ত, স্কুল বা কলেজে শিক্ষার উন্নতিতে সাহায্য করার চেষ্টা হচ্ছে বিজ্ঞানের তরফে। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি এলাকার কিছু মাস্টারমশাইয়ের সাহায্যে ‘বিজ্ঞান’-এর মুদ্রণ সংস্করণ বার করা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে, বিজ্ঞানশিক্ষার আধুনিক পদ্ধতি, যা পাশ্চাত্যের স্কুল-কলেজে বর্তমানে প্রয়োগ করা হয়, তা বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলোতে প্রয়োগ করার কিছু চেষ্টাও শুরু হয়েছে। আমেরিকার ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের কার্টুনের মাধ্যমে পদার্থবিদ্যায় শিক্ষাদানের একটা চলতি উদ্যোগ বাংলায় অনুবাদ ও কিছু স্কুলে প্রয়োগও সম্ভব হয়েছে।
রাজিবুল ইসলাম
ইমেল মারফত
ভিআরপি
আমরা গত ২০১৩ সালে সামাজিক নিরীক্ষা স্বেচ্ছাসেবকের কাজে সরকারি নিয়ম মেনেই নিযুক্ত হয়েছিলাম। এবং দক্ষতার সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পের সামাজিক নিরীক্ষার কাজ ২০১৫ সাল পর্যন্ত করেছিলাম।
পরবর্তী কালে ৫-১২-২০১৭ তারিখ অনুসারে, ডাইরেক্টর, সামাজিক নিরীক্ষা বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নির্দেশ দেন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সামাজিক নিরীক্ষা করার জন্য ব্লক ভিত্তিক ভিআরপি (ভিলেজ রিসোর্স পার্সনস) বা গ্রামীণ সম্পদ কর্মী প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০ জন করে নিয়োগ করতে হবে। এবং বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার উল্লেখ করা আছে, ১) মহিলা ও এসসি/এসটি-দের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হবে। ২) স্ব-সহায়ক দলের সদস্য বা সদস্যাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। ৩) সামাজিক নিরীক্ষার কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে তাঁদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।
এই নির্দেশ মেনেই ঝাড়গ্রাম জেলা বাদ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত ডিএম এবং ব্লক অফিস সোশ্যাল অডিট ভলান্টিয়ারদের যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে অগ্রাধিকার দিয়ে ভিআরপি নিয়োগ করেন। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলার সাতটি (সাঁকরাইল, ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর-১, গোপীবল্লভপুর-২, জামবনী, বিনপুর-১, বিনপুর-২) ব্লকের প্রায় ৩০০-৩৫০ জন সোশ্যাল অডিট ভলান্টিয়ারগণকে উক্ত সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়। ঝাড়গ্রাম জেলায় মোট ৮টি ব্লক, তার মধ্যে কেবলমাত্র নয়াগ্রাম ব্লক এই সুযোগ পায়। সেখানে প্রত্যেকটি সোশ্যাল অডিট ভলান্টিয়ারকে ভিআরপি পদে নেওয়া হয়। আমরা এ বিষয়ে অনেক বার ডিএম অফিসে যোগাযোগ করি, কিন্তু কোনও সমাধান হয়নি। ডিএম অফিসে ডেপুটেশনও দিয়েছিলাম, কিন্তু লাভ হয়নি।
আমরা অনশনও করেছিলাম। ডিএম ম্যাডাম বলেন, আপনারা অনশন তুলে নিন, আমি আপনাদের বিষয়ে ভাবছি। আমরা সেই আশ্বাস পেয়ে অনশন ভঙ্গ করি। কিন্তু পরবর্তী কালে দেখা যায়, তিনি আমাদের কথা ভাবেননি। আমাদের কোনও অনুরোধই ঝাড়গ্রাম ডিএম অফিস ও ঝাড়গ্রাম জেলার সোশ্যাল অডিট ইউনিট বিভাগ রাখেনি।
আমরা যখন জানতে চাই, আমাদের অন্যান্য জেলার মতো ভিআরপি পদে নিয়োগ করা হল না কেন? তখন সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলা হয়, তোমাদের তো আর কাজ নেই, তোমরা ব্রয়লার ফার্ম করো, হাঁস মুরগির চাষ করো, ইত্যাদি। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, আমরা পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য ব্লকের ছেলেমেয়েদের মতো কাজ পাব না কেন?
সুশীল কুমার মাহাতো
ঝাড়গ্রাম
সমবায় সমিতি
আমি এক জন সমবায় সমিতির কর্মচারী। রবি ঠাকুরের চিন্তায় প্রতিটি গ্রামে গ্রামে যে সমবায় সমিতিগুলি গড়ে উঠেছিল এবং বর্তমানে আছে, তার কিছু করুণ কথা না বলে থাকতে পারছি না।
আগে সমবায় সমিতিগুলি কেবল গ্রামীণ চাষিদের চাষবাস করার জন্য শুধু কৃষিঋণ দাদন করত। কিন্তু বর্তমানে সমবায় সমিতিগুলির কার্যকলাপ বহু দূর বিস্তৃত। শুধু কৃষিঋণ দাদন করা নয়, ব্যাঙ্কিংয়ের যাবতীয় কাজ, সাধারণ জনসাধারণের জীবনধারণের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র, এমনকি জীবনদায়ী ওষুধও সমবায় সমিতিগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। এ ছাড়াও
সরকার বাহাদুর নির্দেশিত বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সমবায় সমিতি পালন করে আসছে।
এত ক্রিয়াকলাপের মধ্যে থেকেও সমবায়ী কর্মচারীরা সরকারি স্বীকৃতি পাচ্ছেন না। যদিও সরকার অনিয়মিত ভাবে কর্মচারীদের অ্যাড হক গ্র্যান্ট-এর ব্যবস্থা করেছে, তাও অপ্রতুল। আমরা সরকারি কর্মচারী নই, কিন্তু সরকারি কর্মচারীদের মতো ৬০ বছরে অবসর নিতে হবে। এ দিকে না আছে পেনশন, না আছে অবসরকালীন এককালীন সরকারি অনুদান।
সমবায়ের কর্মচারীরা যখন অবসর নেবেন, পরিচালকমণ্ডলী একটি ফুলের স্তবক, এক বাক্স
মিষ্টি দেবেন, খুব ভাল ভাল প্রশংসাসূচক কথাও বলবেন, কিন্তু তাতে ভর করে অবসর-জীবনটা আমাদের ভাল কাটবে কি? সরকার যদি সমবায় কর্মচারীদের দিকে একটু দৃষ্টি দেয়, আমার মতো বহু কর্মচারী উপকৃত হবেন।
শীতল মাল
সিংটী, হাওড়া
দূষণ চেক-আপ
গত ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে আমার দ্বিচক্রযানটির পলিউশন চেক-আপ করাতে পারছি না। পলিউশন সেন্টার থেকে আমাকে বলা হয়, দুর্গাপুর আরটিও-তে আপডেট করাতে। দু’দিনের মধ্যেই যাই, সেখানে এক জন কর্তাব্যক্তি আমাকে বলেন, দুপুর দুটো বেজে গিয়েছে, আজ আর কাজ হবে না, কাল আসবেন। আমি বার বার অনুরোধ করায় তিনি খুব বিরক্ত হন এবং বলেন, আমার যানটির বিক্রেতা সংস্থার কাছ থেকে ‘কনসার্ন লেটার’ আনতে হবে। মুশকিল হচ্ছে, সেই সংস্থা তো ২০০৮ সালের ‘সেল লেটার’, রসিদ ইত্যাদি দেখতে চাইছে। ওগুলি এখন আর আর আমার কাছে নেই। তা হলে এখন কী করে পলিউশন চেক-আপ হবে?
বিদ্যুৎ মুখোপাধ্যায়
সোঁয়াই, পূর্ব বর্ধমান