সম্পাদক সমীপেষু: আধুনিক কালিদাস

গাছেদের এই ‘মৃত্যু’ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এলাকার অন্যান্য রাস্তার ধারেও। পাণ্ডুয়া থেকে মহানাদের রাস্তা বা কালনা যাওয়ার রাস্তাতেও চোখে পড়ছে গাছেদের কঙ্কাল। আমরা জাগব কবে?

Advertisement
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ০০:০১
Share:

জিটি রোড ধরে হুগলির মগরা থেকে বৈঁচি পর্যন্ত গেলে, দেখা যাবে কোনও অজানা কারণে রাস্তার দুই ধারে শয়ে শয়ে গাছ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। গাছের মড়ক? তা বোধ হয় নয়। কারণ আশ্চর্যজনক ভাবে শুধুমাত্র মোটা গুঁড়ির গাছগুলিই মরেছে, যেগুলির কাঠ বেচে ভাল রকমের ফায়দা উঠে আসবে। রাজ্যের বৃক্ষ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, জীবন্ত গাছ কাটার অনেক ঝক্কি। প্রশাসনের অনুমতি চাই, গাছ কাটার বদলে নতুন গাছ রোপণ করা চাই। তার চেয়ে কোনও কূটকৌশলে জ্যান্ত গাছটিকে মেরে ফেলতে পারলেই কেল্লা ফতে। মরা গাছের আইনের কবচ নেই, অথচ তার কাঠের দাম আছে যথেষ্ট। প্রশ্ন হল, এই লাভের কড়ি কোন বাঘে খায়? শুধুই কি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী? না রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় প্রশাসনেরও বখরা আছে?

Advertisement

স্থানীয় মানুষও গাছেদের এই রহস্যমৃত্যু নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ। তাঁদের অনেকের মতে, রাতের অন্ধকারে ছেনি মেরে বা ড্রিল মেশিন দিয়ে বড়সড় গাছের গায়ে প্রথমে কয়েকটি গর্ত করা হয়। তার পর হিং আর তুঁতের সমপরিমাণ মিশ্রণ তৈরি করে সেই গর্তের মধ্যে দিয়ে গাছের গুঁড়িতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তার পর সেই গাছের মৃত্যু নাকি সময়ের অপেক্ষা। উল্লেখ্য, এই একই উপায়ে সাত-আট বছর আগে খোদ কলকাতার ভিআইপি রোডের দু’পাশের অসংখ্য গাছকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল।

যদি ধরে নিই, গাছের কোনও অদ্ভুত অসুখ হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হোক। বর্তমানে জিটি রোড বরাবর পাণ্ডুয়া থেকে খন্যানের মধ্যে এই মরা গাছের সংখ্যা অন্তত ৩০-৪০টি, বৈঁচি থেকে মগরা ধরলে সংখ্যাটা ১৫০ ছাড়াবে। গাছেদের এই ‘মৃত্যু’ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এলাকার অন্যান্য রাস্তার ধারেও। পাণ্ডুয়া থেকে মহানাদের রাস্তা বা কালনা যাওয়ার রাস্তাতেও চোখে পড়ছে গাছেদের কঙ্কাল। আমরা জাগব কবে? শোনা যায় মহাকবি কালিদাস জীবনের শুরুতে এতটাই নির্বোধ ছিলেন, এক বার গাছের যে ডালে বসে ছিলেন সেটিকেই কাটতে শুরু করেন। আধুনিক কালিদাসদের বোঝাবে কে?

Advertisement

শ্রীধর বন্দ্যোপাধ্যায়

জামগ্রাম, হুগলি

হঠকারী

উত্তর ২৪ পরগনায়, রাস্তা সম্প্রসারণের কাজে গত ১০ বছরে ৩৭ হাজারেরও বেশি গাছ কাটা পড়েছে (‘নিয়ম মানে কে, উধাও তাই...’, ৮-৭)। কৈখালি ভি আই পি রোডের বুলেভার্ড থেকে ২০টি পাম গাছ রাতের অন্ধকারে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে (‘চোখের আড়ালে কাটা পড়ল...’, ১১-৭)। বড় বড় গাছকে প্রযুক্তির কৌশলে না কেটে স্থানান্তরের পদ্ধতি উন্নত দেশে অনুসরণ করা হয়ে থাকে। ইউটিউব খুলে দেখলে তাক লেগে যায়।

এক দশক আগে, দমদম ব্যারাকপুর মেট্রো রেল সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি হওয়ার আগেই, টিটাগড় থেকে ব্যারাকপুর চিড়িয়ামোড় পর্যন্ত বিটি রোডের দু’ধারে বড় বড় গাছ রাতারাতি কেটে সাফ করে ফেলা হয়। পরবর্তী কালে জানা যায়, পলতা থেকে টালা ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনের কারণে রেল নাকি ভিন্ন পথ অনুসন্ধান করছে।

এ রকম হঠকারী ,আত্মঘাতী আচরণ আমরাই পারি। একই সঙ্গে ‘গাছ লাগাও বা জল বাঁচাও’ পদযাত্রায় শামিলও হতে পারি, আবার আষাঢ় শেষে বাদলধারা না পেয়ে গজগজ করে বলে উঠতে পারি, ‘‘হবে না? ঘোর কলি!’’

সরিৎশেখর দাস

সুকান্ত সরণি, ব্যারাকপুর

চারা লাগাতে

বর্তমানে নদী, রাস্তা, রেলপথের দু’ধারে চারাগাছ লাগানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বাড়ি, দোকান, কারখানা, শৌচাগার ইত্যাদি থাকায়, রাস্তার দু’ধারে চারাগাছ লাগানোর জায়গা খুব একটা থাকে না। আবার নতুন করে বাড়ি, দোকান ইত্যাদি তৈরি করার জন্য, রাতের অন্ধকারে গাছ মেরে ফেলার নানা কৌশল করে এক শ্রেণির মানুষ। রাস্তা, রেলপথের পাশে অনেক সময় ওভারহেড তার থাকায় বৃক্ষ জাতীয় গাছ লাগানো যায় না। কোথাও স্ট্রিটলাইট বা বৈদ্যুতিক তারের জন্য গাছের ডাল বা গাছ কাটতে হয়। কোথাও রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেন, জলের পাইপলাইন থাকায়, সমস্যা হয়। গ্রামাঞ্চলে রাস্তার পাশে নয়ানজুলি, পুকুরের অংশ কংক্রিটের করায় সেখানেও বৃক্ষ জাতীয় গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে সমস্যা। কোথাও আবার গরু-ছাগলে চারা খেয়ে ফেলে। অনেক সময় রাস্তার পাশের যে যার দখল-করা অংশে গাছ লাগালে তাকে মেরে ফেলে।

দিলীপ কুমার পাত্র

চংরা, পূর্ব মেদিনীপুর

পৃথক ফল

রাজ্যের শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার নিয়োগে অনিয়ম চলছে। একই প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত প্রায় ২০০০ প্রার্থীর মধ্যে, অর্ধেক এমপ্যানেল্‌ড প্রার্থী স্কুল জয়েন করে ৫ মাস বেতন পাচ্ছেন, অথচ তাঁদের থেকে ভাল র‌্যাঙ্ক করা ব্যক্তিরা ওই একই প্যানেলে থেকেও বঞ্চিত, এটা কী ধরনের ন্যায়...! ২৮-০১-২০১৯ ও ৩০-০১-২০১৯ দু’টি দিনে জেলা অনুসারে জয়েনিং লেটার দেওয়ার ব্যবস্থা করে, কমিশন ২৯-০১-২০১৯ তারিখে হাইকোর্ট স্টে দেয়। তার ফলে ৩০ তারিখে যাঁদের জয়েনিং লেটার পাওয়ার কথা তাঁরা তা পাননি, অথচ যাঁরা ২৮ তারিখ জয়েনিং লেটার পেয়েছিলেন, তাঁরা স্কুলে যোগ দেন এবং বেতন পাচ্ছেন নিয়মিত। আদালত ৬ মাস ধরে শুধু তারিখ দিয়ে যাচ্ছে, স্কুল সার্ভিস কমিশন শুধু মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে।

এক যাত্রায় পৃথক ফল কী ভাবে হতে পারে!

শৈবাল সামন্ত

ঝোড়হাট, হাওড়া

প্রতিশ্রুতি

বর্তমান সরকার নন গভর্নমেন্ট এডেড স্কুলগুলিকে গভঃ স্পনসর্ড করেছে। আমরা শিক্ষক হিসেবে অনেক প্রতিশ্রুতি শুনেছিলাম। আমরা নাকি আর্নড লিভ, ৮/১৬/২৫ বছরে পরবর্তী বেতনক্রমে যাওয়ার সুবিধা, প্রোমোশন পাব। স্কুলগুলি নাকি আরএমএসএ থেকে প্রচুর আর্থিক সুবিধা পাবে। বাস্তবে আমরা উক্ত সুযোগ-সুবিধা কিছুই পাইনি। মাত্র ৫০,০০০ টাকা পাচ্ছে স্কুলগুলি আরএমএসএ থেকে অনিয়মিত ভাবে। শিক্ষা দফতর অর্ডার বার করেছে যে, প্রেসিডেন্ট ও শিক্ষানুরাগী হিসাবে কোনও ইন-সার্ভিস শিক্ষক আসতে পারবেন না। ইদানীং হুগলি জেলায় বিভিন্ন স্কুলের পরিচালন সমিতিতে ইন-সার্ভিস শিক্ষকরাই প্রেসিডেন্ট/শিক্ষানুরাগী পদে আসছেন। সরকারের এ বিষয়ে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই।

আজিজুল রহমান

সিঙ্গুর, হুগলি

প্রশ্নপত্র

আজকাল অনেক চাকরির লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে, পরীক্ষার শেষে প্রশ্নপত্র নিয়ে নেওয়া হয়। ফলে পরীক্ষার্থীরা বাড়িতে এসে, কতটা ঠিক উত্তর দিয়েছে বা কত নম্বর পেতে পারে তা অনুমান করতে পারে না।

সব্যসাচী মণ্ডল

কলকাতা-১৫

মুদ্রার আকৃতি

এক টাকার কয়েনের সঙ্গে দু’টাকার কয়েনের আকৃতিগত পার্থক্য একেবারেই নেই। আমাদের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ ইংরেজি পড়তে পারেন না, তা ছাড়া অনেকেই দৃষ্টিহীন বা স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন। তাঁরা আঙুলের স্পর্শে মুদ্রার অঙ্ক অনুমান করেন। এমনিতেই মানুষ পকেটে হাত দিয়ে স্পর্শের মাধ্যমে কত টাকার কয়েন তা বুঝতে পারলে আশ্বস্ত বোধ করেন। তাই বিভিন্ন কয়েন বিভিন্ন আকৃতির হলে, অনেক সুবিধা হয়। ভুল করে এক টাকা ভেবে দু’টাকা দিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাও কমে। কয়েক বছর আগে দু’টাকার একটি হালকা কয়েন (১১ কোণা বিশিষ্ট) বাজারে এসেছিল, তাতে সকলেরই বেশ সুবিধে হয়েছিল।

আনন্দদুলাল রায়

উত্তরপ্রতাপবাগান, বাঁকুড়া

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement