Coronavirus

সম্পাদক সমীপেষু: আশা না মিটিল

আর এক ঘোষণা: অত্যাবশক পণ্য আইন সংশোধন করে দানাশস্য, ভোজ্য তেল, তৈলবীজ, ডাল, পেঁয়াজ, আলু ইত্যাদির মজুতের সীমা বা সরকারি নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে দেওয়া।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ০১:৩৫
Share:

অতিমারির মোকাবিলায় সরকারি ব্যবস্থার ভূমিকা প্রশংসনীয়। ২০০৮ বিশ্ব-অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে সরকারি ক্ষেত্রই উদ্ধার করেছিল ভারতীয় অর্থনীতিকে। পশ্চিমি ধনতান্ত্রিক উন্নত দেশগুলি কোভিড-১৯ বিপর্যয়ে সরকারি ক্ষেত্রের গুরুত্ব উপলব্ধি করে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। ভাবছিলাম ভারতেও এ বার বুঝি সরকারি ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে। অথচ ঠিক এই সময়ে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় শোনা গেল, প্রতিরক্ষা, খনি, কয়লা, বিমানবন্দর, মহাকাশ গবেষণা ও অভিযান, বিদ্যুৎ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের কথা। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় এই বেসরকারিকরণ কী কাজে লাগবে বুঝতে পারলাম না ।

Advertisement

উপরন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত আইনসভায় আলোচনা করে গৃহীত হওয়ার কথা। অথচ সিদ্ধান্ত নেওয়া হল হঠাৎ করে এমন দুর্যোগে। এই তাড়াহুড়ো ধনী উদ্যোগপতি বিনিয়োগকারীর উপকারে লাগবে। অসরকারি পুঁজি যত সরকারি ক্ষেত্র দখল করবে, ততই শ্রমিকের অধিকার আরও দুর্বল হবে।

আর এক ঘোষণা: অত্যাবশক পণ্য আইন সংশোধন করে দানাশস্য, ভোজ্য তেল, তৈলবীজ, ডাল, পেঁয়াজ, আলু ইত্যাদির মজুতের সীমা বা সরকারি নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে দেওয়া। কৃষিক্ষেত্র কার্যত কোভিড-১৯ বিপর্যয়ে অনাহারে মৃত্যুর আশঙ্কা কমিয়েছে। আশা করেছিলাম অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায়, কৃষিক্ষেত্রে প্রকৃত উৎপাদক উপকৃত হবেন। কৃষক যথার্থ সরকারি ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের মাধ্যমে তাঁর ফসলের উপযুক্ত দাম পাবেন। সরকারি বিপণি মান্ডি সমৃদ্ধ হবে। এই দিকগুলো উপেক্ষিত রয়েই গেল। সরকারি ব্যবস্থায় উদার উন্মুক্ত খোলাবাজারের উপকার পাবেন মজুতদার, ফড়ে ।

Advertisement

দুর্বল দরিদ্র ভারতবাসীর কী বা দিন, কী বা রাত্রি। রক্তাক্ত পায়ে কৃষক আবার মিছিল করবেন। শ্রমিককে খাটতে হবে এমন জায়গায়, যেখানে আট ঘন্টা সময়সীমা মানা হবে না। বেকাররা কাজের জন্য মাথা খুঁড়ে মরবেন। আমরা ফের আশা করব, অর্থমন্ত্রী দারুণ কিছু ঘোষণা করবেন!

শুভ্রাংশু কুমার রায়

ফটকগোড়া, হুগলি

কিছু ছলনা

সরকারের আর্থিক প্যাকেজে, আগামী তিন মাসে করদাতাদের টিডিএস কাটার ব্যাপারে ২৫% ছাড়ের যে সুবিধার কথা বলা হয়েছে, তা ছলনা ছাড়া কিছুই নয়! কারণ বছরশেষে সরকার করদাতার কাছ থেকে তাঁর আয়ের উপর প্রযোজ্য পুরো কর কড়ায়-গন্ডায় বুঝে নেবে। করদাতা কোনও সুবিধা পাবেন না।

এই প্যাকেজের সুবাদে এখন থেকে দেশে ছোট ও মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞার পরিবর্তন ঘটল। নতুন নিয়মে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসাকে মাঝারি শিল্প হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। প্রশ্ন জাগে, এ দেশে ক’টি মাঝারি শিল্প আছে, যার ব্যবসা ১০০ কোটি? অর্থাৎ সরকারি সৌজন্যে অতীতের বৃহৎ শিল্পপতিরা বর্তমানে সংজ্ঞা পরিবর্তনের সুবিধা নিয়ে মাঝারি শিল্পের আর্থিক সুবিধাগুলি ভোগ করবেন। নিঃসন্দেহে বৃহৎ শিল্পপতিদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলার এটি একটি উৎকৃষ্ট উপায়!

এ ছাড়া, যেখানে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং টার্নওভার ৫ কোটি, তা নতুন নিয়মে ক্ষুদ্র শিল্প হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বছরের ৫২টি রবিবার বাদ দিলে থাকে ৩১৩ দিন, অর্থাৎ দিনে গড়ে ১,৬০,০০০ টাকা বিক্রি থাকলে তবে বার্ষিক টার্নওভার ৫ কোটি হবে। কলকাতার ক’জন বড় ব্যবসায়ীদের দৈনিক বিক্রি এত টাকা? তাই এই সংজ্ঞা মেনে এ দেশে ক’টি ক্ষুদ্র শিল্প আর্থিক সুবিধা পাবে, এ প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই ওঠে।

কুমার শেখর সেনগুপ্ত

কোন্নগর, হুগলি

পেনশন

আমরা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী, ইপিএফও পরিচালিত পেনশন পাই। আমাদের মাসিক পেনশনের পরিমাণ বর্তমানে ১০০০ থেকে ২৫০০ টাকা। না, এর সঙ্গে আর কোন কিছুই যোগ হয় না। কয়েক কোটি বরিষ্ঠ নাগরিক এর আওতায় আছেন। ভেবেছিলাম, সরকার নতুন আর্থিক প্যাকেজে হয়তো আমাদের পেনশন কিছুটা বাড়াবেন। কারণ আমাদের অনেকের ছেলেমেয়ের চাকরি চলে গিয়েছে বা যাবে এই লকডাউনের ধাক্কায়। আমাদের মতো অনেক বুড়োবুড়িই হয়তো না খেতে পেয়ে শেষ হয়ে যাবেন। কিন্তু এক পয়সাও বরাদ্দ করা হল না। আমরাও তো দেশের জন্য ৩০-৪০ বছর শ্রম দিয়েছি।

তাপস ভট্টাচার্য

কৈলাসনগর, হুগলি

পিএফ

বর্তমানে প্রভিডেন্ট ফান্ডের নিয়ম অনুযায়ী, কর্মীরা মূল বেতন ও মহার্ঘভাতা (বেসিক ও ডিএ) যুক্ত করে যে বেতন পান তার ১২% পিএফ খাতে জমা দেন। নিয়োগকারীও সমপরিমাণ টাকা জমা দেন। অবসরের সময় কর্মীরা পিএফে জমা টাকা সুদ সমেত ফেরত পান। অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, মাসিক ১৫০০০ টাকার উপর বেতন পান, এমন বেসরকারি ক্ষেত্রের কর্মীদের এবং নিয়োগকর্তার ক্ষেত্রে প্রভিডেন্ট ফান্ডে মাসিক জমার হার ১২% থেকে কমিয়ে ১০% করা হল। আগামী জুন, জুলাই, অগস্ট এই নিয়ম চলবে।

সরকার এখানে পরের ধনে পোদ্দারি করল। কর্মীরা উপার্জিত অর্থ থেকে ২% টাকা প্রতি মাসে সঞ্চয় করতেন, তা তিন মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল। এই ২% অর্থ বেতনের সঙ্গে নগদে যুক্ত করে হাতে দেওয়া হবে। আপনার অর্থ আপনাকেই দিয়ে সদম্ভে ঘোষণা করা হল, আপনার আয় বেড়েছে এবং আপনি অতিরিক্ত খরচ করতে পারবেন। অন্য দিকে নিয়োগকর্তা যে ২% টাকা পিএফে কম জমা দিচ্ছেন, তা বেতন বাবদ কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনও নির্দেশ সরকার দিল না। এর ফলে শ্রমিকের আয়ের ২% ছাঁটাই হল। এই আর্থিক ক্ষতি পূরণের কোনও দায় নিয়োগকর্তার থাকছে না। এক কথায় এতে শ্রমিকদের আর্থিক ক্ষতি বাড়বে এবং শিল্পপতিদের আর্থিক জোগান বাড়বে।

শ্রমিকদের অর্জিত পিএফ থেকেই নিয়োগকর্তাকে ২% ছাড় দেওয়া হল এবং শ্রমিককে ২% অতিরিক্ত নগদ নিতে বাধ্য করা হল। এখানে দেখা যাচ্ছে আমানত ও বেতনে সরাসরি ২% কমে যাচ্ছে। ওই ২% -এর উপর ৮.৫০% হারে সুদ বাবদ আয়ও কমে যাবে। অবসরের সময় পিএফ ও পেনশনে অনেকটা কমে যাবে।

নবেন্দু দাশগুপ্ত

কলকাতা-৫৬

বিদ্যুৎ বিল

আমি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমবায় দফতরের গ্রুপ-এ সার্ভিসের সরকারি আধিকারিক, ২০১৪ সাল থেকে উত্তরবঙ্গে কর্মরত। আমার নিজস্ব ফ্ল্যাট রহড়া, খড়দহে, ২০১৪ থেকেই তালাবন্ধ। দীর্ঘ প্রায় ছ’বছর আমরা ফ্ল্যাটে বসবাস না করার দরুন, এত দিন মাসে মাত্র ৩০ টাকা করে বিল দিতে হত। কিন্তু হঠাৎ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি লিমিটেডের অধীন রহড়া গ্রুপ ইলেকট্রিক সাপ্লাই থেকে মে-জুন-জুলাইয়ের মোট ১০৫০৪ টাকার ত্রৈমাসিক বিল পাঠানো হয়েছে, মে মাসের বিল ৪৪১০ টাকা, জুনের ৩০৪৭ টাকা, জুলাইয়ের ৩০৪৭ টাকা— যা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক। লকডাউনের সময়ে বিদ্যুৎ কোম্পানির কোনও ব্যক্তি মিটার রিডিং নিতে আসেননি। নিজেদের ইচ্ছামতো বিল বানানো হয়েছে।

আশিস মুখোপাধ্যায়

কোচবিহার

নেশার মাশুল

বিড়ি প্যাকেট প্রতি দুই থেকে চার টাকা, খৈনি প্যাকেট প্রতি দুই থেকে পাঁচ টাকা, প্রতিটি সিগারেট তিন থেকে পাঁচ টাকা বেশি দামে পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে। এমআরপির বেশি দামে কিছু বিক্রি হয় কী করে? আর, নেশাড়ুদের থেকে জবরদস্তি নেওয়া টাকা মানবজাতির (না কি বিশেষ কিছু মানবের?) ঠিক কোন কল্যাণে ব্যয় হচ্ছে?

ইন্দ্রজিৎ ঘোষ

কলকাতা-১২৯

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,

কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement