শ্রীমন্তী চৌধুরী (‘নিয়মভঙ্গ, তাই পদত্যাগ?’, ১৪-৮) নিউজ়িল্যান্ডের মানুষের সঙ্গে ভারতবাসীর তুলনা করে বলেছেন, আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে সহমর্মিতার অভাব এক ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে।
কিন্তু এটা সামগ্রিক চিত্র নয়। আমাদের দেশে এখনও রাতবিরেতে শ্মশানযাত্রীর অভাব হয় না। লকডাউনের সময় বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দুঃস্থ এবং প্রান্তিক মানুষের হাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিয়েছে। বহু জায়গায় কমিউনিটি কিচেন গড়ে উঠেছে অভুক্ত মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য। আমপান-বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের কাছেও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন বিবেকবান মানুষজন। অতিমারির সময় স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের প্রাণ বিপন্ন করে নিরলস ভাবে আক্রান্ত রোগীদের সেবা করে চলেছেন। নিউজ়িল্যান্ডের জনঘনত্ব আমাদের দেশের জনঘনত্বের চার শতাংশের কাছাকাছি। এমন একটি দেশের সঙ্গে ভারতের তুলনা চলে না।
সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ ভাইরাল হয়। জাপানে পড়তে যাওয়া এক ছাত্রী এক দিন ক্লাসে ড্রয়িং বক্স না নিয়ে যাওয়ায় শিক্ষক তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন। কারণ হিসেবে বলেন, তিনি ছাত্রীটিকে নাকি তেমন ভাবে বুঝিয়ে বলতে পারেননি যে, ড্রয়িং বক্স আনার কথা তাকে মনে রাখতে হবে। এত উন্নত চরিত্র গঠনের জন্য যে ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার প্রয়োজন, ভারতে কোনও দিনই তার চেষ্টা করা হয়নি। সেটা সম্ভব করতে হলে নীতিনির্ধারকদের বিবেকানন্দের উক্তি—“এডুকেশন ইজ় দ্য ম্যানিফেস্টেশন অব দ্য পারফেকশন অলরেডি ইন ম্যান’’ স্মরণে রেখে উপায় উদ্ভাবনের কথা ভাবতে হবে।
প্রসেঞ্জিত সাহা
দিনহাটা, কোচবিহার
গুরদয়াল
‘রবীন্দ্রতীর্থে পরিব্রাজক’ (৯-৮) নিবন্ধে শর্মিষ্ঠা দত্তগুপ্ত লিখেছেন “১৯২৩ সালে রবীন্দ্রনাথের করাচি ভ্রমণ কালে তাঁকে চমৎকার সুফি গান শোনানোর ব্যবস্থা করেন গুরদয়াল।” সে বার কবির করাচি ভ্রমণের সময় গুরদয়াল মল্লিকের সঙ্গে ছিলেন ক্ষিতিমোহন সেনও। তাঁরা থাকতেন জামশেদ মেটার বাড়ি। অত্যন্ত সুভদ্র, নিরামিষাশী জামশেদজি ছিলেন ক্ষিতিমোহনের ভাষায়, “প্রীতিতে, ভালোবাসায় শিশুর মতো সুকুমার ও ফুলের মতো শুভ্র।”
নিবন্ধে লেখা হয়েছে “ফারসি, উর্দু, পশতু, সিন্ধি ও গুজরাতি জানা এই আত্মভোলা শিক্ষক ভোরবেলা স্নান করে নিজের ঘরে ফেরার সময় গান গাইতেন এবং তাঁর গান শুনে ঘুম ভাঙত ছাত্রদের।” দু’টি অনুষ্ঠানে গুরদয়ালের গান গাওয়ার উল্লেখ মেলে। ১৩২৯ সালের ১৬ শ্রাবণ বিশ্বভারতীর সম্মিলনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। গুরদয়াল কয়েকটি গান গাইলেন, আর ক্ষিতিমোহন কবির সম্পর্কে প্রবন্ধ পাঠ করলেন। ১৯৩৭ সালের ১৭ নভেম্বর গুরু নানকের জন্মতিথি উপলক্ষে শান্তিনিকেতনে মন্দিরোপাসনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ক্ষিতিমোহন, নানকের তিনটি ভজন গেয়েছিলেন গুরদয়াল।
গুরদয়াল করাচির চাকরি ছেড়ে রবীন্দ্রনাথের কর্মযজ্ঞে শামিল হতে শান্তিনিকেতনে এসে রেখে গিয়েছেন বহুমুখী কর্মের স্বাক্ষর। বর্তমানে তাঁকে জানার ও বোঝার বড় প্রয়োজন। তাঁর হারিয়ে যাওয়া বক্তৃতামালা ‘মিসটেকস অব সিন্ধ’ খুঁজে বার করে পড়া দরকার। কারণ তিনি ভারতীয় ধর্মগুলির মধ্যে ওতপ্রোত সম্পর্কের সন্ধান করে গিয়েছেন।
পঙ্কজ পাঠক
শ্রীপল্লি, পূর্ব বর্ধমান
সেই বোমা
‘হিরোশিমা, প্রেমিকা আমার’ (রবিবাসরীয়, ৯-৮) নিবন্ধে জয়দীপ মুখোপাধ্যায় হিরোশিমার পরমাণু বোমাকে নাপাম বোমার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন, একাধিক বার। নাপাম বোমার স্মৃতিও যথেষ্ট দগদগে, কিন্তু ধ্বংসাত্মক ক্ষমতায় তা পরমাণু বোমার তুল্য নয়। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়, ১৯৭২-এ তার ব্যবহার নিয়ে শোরগোল হয়েছিল। যে ছবিটির প্রসঙ্গে এই প্রবন্ধ, তা তৈরি হয়েছিল ষাটের দশকের শেষে।
তরুণ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৪২
টিকিট
গত ২৩ মার্চ আমি এয়ার ইন্ডিয়ার কলকাতা অফিসে গিয়ে ২৭ এপ্রিলের তিনটি প্যারিস-কলকাতা টিকিট বাতিল করে আসি। বলা হয়, এক মাসের মধ্যে টিকিট বাতিলের টাকা পেয়ে যাবেন। কিন্তু সাড়ে চার মাসেও পাইনি। এয়ার ইন্ডিয়ার দিল্লি অফিসে মেল করলে ওরা রিবুকিং-এর জন্য চাপ দিচ্ছে, যার মেয়াদ আগামী বছর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই অতিমারি কত দিন চলবে, কেউ জানে না। পুনরায় বিদেশ সফর করলে তবেই বাতিল টিকিটের টাকার সদ্ব্যবহার করা যাবে। নয়তো এই লক্ষাধিক টাকা ফেরতের সম্ভাবনা থাকছে না। এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ, ভারতীয় রেলের মতো আপনারাও বাতিল টিকিটের টাকা ফেরত দিলে অসংখ্য যাত্রী উপকৃত হবেন, সংস্থার প্রতি আস্থা বাড়বে।
সিদ্ধার্থ মাঝি
মন্দিরতলা, হাওড়া
রক্তের আকাল
করোনা পরিস্থিতির জন্য ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের আকাল দেখা দিয়েছে। কলকাতা ও অন্য জেলাও ব্যতিক্রম নয়। সবচেয়ে সমস্যা থ্যালাসেমিয়া রোগীদের, যাদের বেশির ভাগ শিশু ও কিশোর। তাদের ১৫ দিন বা এক মাস অন্তর রক্ত দিতে হয়। সারা বছর রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। তাতে ঘাটতি অনেকটা মিটে যায়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কর্মসূচি বন্ধ। ফলে রক্ত গ্রহীতাদের চরম সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অবিলম্বে রক্তদান শিবির করার অনুমতি দেওয়া না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য
চুঁচুড়া, হুগলি
আর রাস্তা?
‘বর্ষায় সেতু ভাঙলে ইঞ্জিনিয়ারদের শাস্তি’ (১৫-৮) প্রতিবেদনটি তাৎপর্যপূর্ণ। সেতু-স্বাস্থ্য নিয়ে রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে স্বাগত। তবে সেটা শুধুই সেতুর ক্ষেত্রে কেন? এই ভরা বর্ষায় রাজ্যের প্রায় সর্বত্র রাস্তার যে দুর্দশার ছবি দেখতে পাই, তার গুরুত্ব কি সেতুর থেকে কম? রাজ্য সরকার যে ১৬০০ ছোট-বড় সেতুর কথা উল্লেখ করেছে, তা কোনও না কোনও রাস্তার সঙ্গেই যুক্ত। আরও জানা গেল, ছ’টি বিশেষজ্ঞ সংস্থা নিয়োগ করে রাজ্যের সমস্ত সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। অথচ রাজ্যে রাস্তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়ে একটিও বিশেষজ্ঞ সংস্থা নিয়োগ করা হয়েছে বলে কখনও শুনিনি। পর্যবেক্ষণ তো দূরের কথা। রাস্তা তৈরি বা সংস্কারের পর কেন তা দ্রুত খারাপ হচ্ছে এবং সে জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের ভূমিকা ঠিক কী ছিল, তা কি কখনও কঠোর ভাবে খতিয়ে দেখা হয়? এমন ক’জন ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ় কিংবা চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, ক’জন ঠিকাদারেরই বা লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে? উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার স্বার্থে নবান্ন সেতু ও রাস্তা দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখুক— এটাই মানুষের প্রত্যাশা।
বিভূতি ভূষণ রায়
হাবড়া, উত্তর ২৪ পরগনা
মুন্ডু
‘শস্যরোপণের উৎসবে...’ (রবিবাসরীয়, ২৩-৮) নিবন্ধে ওনাম প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, পুরুষদের ঊর্ধ্বাঙ্গের জামাকে বলে ‘মুন্ডু’। মুন্ডু আসলে কোমরে জড়ানো ধুতি বা একে লুঙ্গির মতো পরা হয়। কেরলে প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে।
অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা-১০৪
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।