সম্প্রতি ভারতীয় জীবন বিমা নিগমকে দেওয়া হাবরা শহরের রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাঙ্কের চেক হাবরা জীবন বিমা কর্তৃপক্ষ আমাকে ফেরত পাঠানোর পর জানতে পারি, স্বাক্ষর না মেলার অজুহাতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ চেকটি বাতিল বলে গণ্য করেছেন। এ বিষয়ে আমি ওই ব্যাঙ্কের সিজিআরএস (কাস্টমার গ্রিভান্স রিড্রেসাল সিস্টেম)-এ অভিযোগ জানানোর পর হাবরা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক আমার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। সৌজন্যমূলক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি আমার অভিযোগের যৌক্তিকতা পরোক্ষ ভাবে স্বীকার করে নিয়ে ব্যাঙ্কের মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে এ ধরনের লেনদেন করতে পরামর্শ দেন। যদিও, নেট ব্যাঙ্কিং-এ আগে থেকেই আমি অভ্যস্ত এবং যথেষ্ট সাবলীল।
এই ঘটনার কিছু দিন আগে আমার স্ত্রী-র স্বাক্ষরিত জীবন বিমা নিগমকে দেওয়া ভারতীয় ডাক বিভাগের একটি চেক একই কারণে ফেরত আসে। সে ক্ষেত্রেও, কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রকের অধীন ডাক বিভাগের পোর্টালে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। স্থানীয় পোস্ট অফিসের আধিকারিক, অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এবং এই ক্ষেত্রেও অনলাইন পেমেন্ট-এর পরামর্শ পাই।
পর পর এ ধরনের ঘটনা ঘটায়, স্বভাবতই মনে কিছু প্রশ্ন জাগে। জীবন বিমা নিগমের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে প্রদেয় গ্রাহকের নিজের অ্যাকাউন্টের নিজের স্বাক্ষর করা চেক, স্বাক্ষর না মেলার অজুহাতে বাতিল করা কতটা যুক্তিসঙ্গত? প্রদেয় চেকের অঙ্ক যথেষ্ট কম হওয়া সত্ত্বেও, এ বিষয়ে সন্দেহের উদ্রেক হয় কী ভাবে? সন্দেহ যদি বা হলও, তবে চেকের পিছনে একাধিক ফোন নম্বর দেওয়া সত্ত্বেও চেক বাতিলের কথা গ্রাহককে প্রথমেই জানানো হল না কেন? অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ফোন নম্বরের সংযুক্তি এবং এসএমএস পাঠানোর সুবিধা থাকা সত্ত্বেও এসএমএস সতর্কতা পাওয়া যায়নি কেন? এর ফলে নির্দিষ্ট সময়ের পর প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার কারণে জরিমানার দায় কেন গ্রাহককে বহন করতে হবে? ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ ধরনের চেক তাঁদের অ্যাপেক্স বডি (সংস্থার শীর্ষ স্থানীয় অফিস) থেকে ক্লিয়ার করা হয়। চেক বাতিলের দায় অ্যাপেক্স বডি নামক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। কিন্তু যাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে একেবারেই অন্ধকারে, শাখা অফিসগুলোর সেই সকল আধিকারিকদের উপর এ ধরনের অভিযোগের জবাবদিহি এবং নিষ্পত্তির দায় বর্তায় কেন? এতে খাতায়-কলমে অভিযোগের নিষ্পত্তি হলেও, গ্রাহকদের সমস্যার সমাধান আদৌ হয় কি?
নোট বাতিল, কালো টাকা উদ্ধার, ডিজিটাইজ়েশন ইত্যাদির স্বপ্ন দেখানো ফেরিওয়ালারা চাইছেন যেন তেন প্রকারেণ সাধারণ মানুষকে ডিজিটাল লেনদেনে বাধ্য করতে। হয়তো তেমন কোনও নির্দেশেই, রাষ্ট্রায়ত্ত অর্থনৈতিক সংস্থার অ্যাপেক্স বডির এ-হেন আচরণ। স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তির অমৃত মহোৎসবে, সাধারণ এক জন ভারতবাসী হিসেবে এইটুকুই আমার পরমপ্রাপ্তি বলে স্বীকার করে নেওয়া ছাড়া মনে হয় আর কোনও উপায় নেই।
অরিন্দম দাস, হরিপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
গাছপালার ক্ষতি
পুজোর মুখে বিলবোর্ডের জন্য জায়গা তৈরি করতে সারা কলকাতা জুড়ে গাছ ছাঁটাই করা হয়। এটা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রতি বছর এই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে গাছের এক পাশের সব ডালপালা ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। তার ফলে গাছের অন্য দিকটা ভারী হয়ে উঠেছে এবং সেটির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই অবৈজ্ঞানিক এবং অপরিকল্পিত গাছ ছাঁটাই যাতে বন্ধ হয়, তার জন্য কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট বিভাগের উপযুক্ত ব্যবস্থা করা দরকার বলে মনে করছি। পুজোয় রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো দরকার, বিজ্ঞাপনও জরুরি, কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি করে নয়।
স্নেহেন্দু কোঙার, কলকাতা-১৯
লটারির ফাঁদ
রাজ্য জুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে লটারি টিকিট কাউন্টার। এতে হয়তো এক শ্রেণির মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। অন্য দিকে, দরিদ্র শ্রেণি, বিশেষত, খেটেখাওয়া মানুষ প্রত্যহ প্রচুর লটারি টিকিট কিনছেন। ধনী হওয়ার প্রলোভনে বিভিন্ন স্টেট লটারির টিকিট কিনে এঁদের অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছেন। তা ছাড়া, রাজ্যের মানুষ এই সব লটারির টিকিট কেনার ফলে পশ্চিমবঙ্গের টাকা অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছে। তা সাধারণ মানুষ ও রাজ্য— দুইয়ের পক্ষেই ক্ষতিকর।
জগন্নাথ দত্ত, সিউড়ি, বীরভূম
অপরিচ্ছন্ন
রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য, জমা জল ও ডেঙ্গির লার্ভা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর, পরিবেশ আয়োগ একযোগে প্রচার চালাচ্ছেন। বিধাননগরে পুজো উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ময়লার ভ্যাটের দুর্গন্ধ পেয়ে যথারীতি তিরস্কারও করেছেন। কিন্তু বহু মানুষের প্রবেশদ্বার হতভাগ্য বিধাননগর স্টেশনের উপর কারও নজর পড়ছে না। ভুক্তভোগী মাত্রেই জানেন এবং সহমত হবেন যে, বিধাননগর স্টেশন চত্বর, টিকিট কাউন্টারের সামনের ফ্লোর এবং স্টেশনে ঢুকতে যাওয়ার ঠিক ডান দিকের কোণে ডাঁই করা নোংরার পাহাড় স্টেশনটিকে নরকে পরিণত করেছে। টিকিট কাউন্টারের সামনে যেখান দিয়ে এক নম্বর এবং দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ধরতে হয়, সেটি নোংরা, দূষিত জলে জলময় হয়ে থাকে। স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের স্টলগুলোর পিছনের দিকটায় বর্জ্য পদার্থে ভর্তি। এই সব জায়গার সংস্কার হওয়া আশু প্রয়োজন।
বীরেন শাসমল, খড়দহ, উত্তর ২৪ পরগনা
দন্ত চিকিৎসক
মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের অধিকাংশই উচ্চতর শিক্ষার জন্য ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি বেছে নেন। জয়েন্ট এন্ট্রান্স, নিট ইত্যাদি রাজ্য অথবা জাতীয় স্তরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তবেই তারা পড়াশোনার সুযোগ পায়। এমবিবিএস পাশ করা হবু ডাক্তারদের সরকারি নিয়োগও মাঝে মাঝেই হয়। কিন্তু বিডিএস পাশ করা দন্ত চিকিৎসকদের জন্য সরকারের উদাসীনতা সত্যি অবাক করে। গত সাত-আট বছর এই রাজ্যে কোনও দন্ত চিকিৎসক নিয়োগ হচ্ছে না। মনে রাখতে হবে এমবিবিএস ও বিডিএস-এ একই সিলেবাস এবং একই পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পেতে হয়।
এই পরিস্থিতিতে বহু বিডিএস চিকিৎসক ভাগ্য অন্বেষণে অন্য রাজ্যে পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছেন। রাজ্যের ডেন্টাল কাউন্সিলে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নীরবতা আগামী দিনে দন্ত চিকিৎসকদের পেশাগত ভাবে নিরুৎসাহিত করবে বলে মনে হয়। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ও অনতিবিলম্বে দন্ত চিকিৎসক নিয়োগ করার দাবি জানাচ্ছি।
কমল ভট্টাচার্য, দক্ষিণ গোবিন্দপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
পার্কিং বেনিয়ম
সেক্টর ফাইভে ওয়েবেল বিল্ডিং-এর সামনে রাস্তায় গাড়ি কিছু ক্ষণ দাঁড় করালেই পার্কিং-এর নামে টাকা নেওয়া হচ্ছে এবং কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। আদৌ এই সংস্থাগুলো সরকারি কি না, তার কোনও প্রমাণ নেই। শুধু তা-ই নয়, পার্কিং মূল্য কোনও নির্ধারিত তালিকার ভিত্তিতে হচ্ছে না। যখন যা চাইছে, তা-ই দিতে হচ্ছে। একটু জোর করে চাইতে একটা খালি রসিদ ধরিয়ে দেওয়া হয় আর কুড়ি টাকা নিয়ে নেওয়া হয়। এর প্রতিকার কী?
অর্ণব চক্রবর্তী, কলকাতা-৫১