সম্পাদক সমীপেষু: আসল দাদা একেই বলে

এমনিতে এক জন খেলোয়াড় অবসর নেওয়ার পর আর তিনি বিশেষ লাইমলাইটে থাকেন না।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এমন এক জন মানুষ, যাঁর কেরিয়ারের শেষ অধ্যায় কখনওই লেখা যায় না। কল্পনা করা যায় না, এই নিয়ে কত বার তিনি কামব্যাক করলেন। ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর মহাকাব্যিক কামব্যাক যদি ছেড়েও দিই, আইপিএল-এ কলকাতা নাইট রাইডার্স থেকে বাদ পড়ার পরেও তিনি অন্য দলের খেলোয়াড় হয়েছেন, মেন্টরও হয়েছেন এবং সম্মানের সঙ্গে সে কাজ করেছেন। এমনকি টিভিতে রিয়েলিটি শো-এর কুইজ়মাস্টার হয়েও তিনি এমন স্বাতন্ত্র্য ও অভিনবত্বের ছাপ রেখেছেন, সেই অনুষ্ঠানের টিআরপি অচিরেই তুঙ্গবিন্দু স্পর্শ করেছে। এ ছাড়া তিনি সিএবি-র প্রধান হিসেবেও চমৎকার কাজ করে চলেছেন গত কয়েক বছর। আর তিনি যখন খেলার ধারাবিবরণী দেন বা বিশেষজ্ঞের মতামত প্রকাশ করেন, তখন তা প্রত্যেকের নজর কেড়ে নেয়। তাঁর বিশ্লেষণ ও ইংরেজি ভাষার দখল, দুইই চিত্তাকর্ষক।

Advertisement

এমনিতে এক জন খেলোয়াড় অবসর নেওয়ার পর আর তিনি বিশেষ লাইমলাইটে থাকেন না। থাকলেও তা শুধুমাত্র টিভিতে ভাষ্যকার হিসেবেই। সৌরভ যেন যা-ই ছুঁচ্ছেন তাতেই সোনা ফলাচ্ছেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবেও তিনি সফল হবেন, এ কথা এখনই বলে দেওয়া যায়। বাঙালিরা নাকি লড়াইয়ের আগেই হেরে বসে থাকেন। এক জন বাঙালি বর্তমান সময়ে সেই কথাকে বারে বারে ভুল প্রমাণ করছেন, ভাবলেই গর্বে বুক ভরে যায়।

অবন সরকার

Advertisement

কলকাতা-৬৬

ভারতের কাগজ
‘জেলে গেলেন সম্পাদক’ (রবিবাসরীয়, ১৫-৯) শীর্ষক নিবন্ধ প্রসঙ্গে এই চিঠি। জেমস অগস্টাস হিকি শুধুমাত্র মাত্র সম্পাদক নন, তিনি ছিলেন একধারে প্রেসের মালিক, সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠাতা-মালিক-সম্পাদক-প্রকাশক ও মুদ্রাকর। এ জন্য তাঁকে প্রচণ্ড খাটতেও হত। কিন্তু তাঁর ছিল এক অদম্য স্বাধীন সত্তা। তিনি নিজের সংবাদপত্র সম্বন্ধে লিখেছিলেন, "I take a pleasure in enslaving my body in order to purchase freedom of my mind and soul."
হিকির ‘বেঙ্গল গেজ়েট’ কাগজের শিরোনামের নীচেই লেখা থাকত, ‘‘আ উইকলি পলিটিক্যাল অ্যান্ড কমার্শিয়াল পেপার ওপন টু অল পার্টিজ় বাট ইনফ্লুয়েন্সড বাই নান।’’ এই লেখা থেকেই বোঝা যায় হিকি তথা এ দেশের প্রেস জন্মের সময় থেকেই স্বাধীন মতামত প্রকাশে আগ্রহী ছিল।
প্রথম থেকেই হিকি তাঁর কাগজে সরকারি নীতি ও কাজকর্মের সমালোচনা করতেন। ফলে শুরুর থেকেই হিকির সঙ্গে সংঘাত বাধে হেস্টিংসের। হেস্টিংস ১৭৮০ সালের ১৪ নভেম্বর আদেশ জারি করে কলকাতার জিপিও থেকে হিকির সংবাদপত্র পাঠানো নিষিদ্ধ করে দেন। ১৭৮০ সালের নভেম্বর মাসে কলকাতা থেকে ভারতের দ্বিতীয় সংবাদপত্র ‘ইন্ডিয়া গেজ়েট’ প্রকাশ করতে শুরু করেন বি মেসিংক ও পিটার রিড। তাঁরা ছিলেন হেস্টিংসের সমর্থক ও হিকির বিরুদ্ধবাদী। জিপিও-র মাধ্যমে ডাকযোগে কাগজ পাঠানোর সুবিধাটা ‘ইন্ডিয়া গেজ়েট’ সরকারের কাছ থেকে পেয়ে গেল। অবশ্য তাতে হিকিকে দমানো যায়নি। তিনি ওই আদেশ সম্পর্কে মন্তব্য করেন, ‘‘এটা শাসক গোষ্ঠীর স্বৈরাচারী ক্ষমতার ও জুলুমবাজির সবচেয়ে বড় প্রমাণ।’’ হিকি এর পর নিজস্ব পিয়ন দিয়ে তাঁর কাগজ বিলি করতে লাগলেন।
হিকির দেখানো পথে ১৭৮০ থেকে ১৭৮৬ পর্যন্ত কলকাতা থেকে মোট পাঁচটি সাপ্তাহিক ও একটি মাসিক সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। তবে হিকির সঙ্গে সরকারি আমলাদের লড়াই ও তার ফলাফল দেখে উভয় পক্ষেরই চোখ খুলেছিল। সরকারি আমলারা দেখলেন, সংবাদপত্রের জনপ্রিয়তা তাঁরা ঠেকিয়ে রাখতে পারবেন না, সুতরাং তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করাই ভাল। আর সংবাদপত্রের সম্পাদক ও মালিকরা দেখলেন, সরকার-বিরোধিতার ফল বড়ই মর্মান্তিক। ফলে ১৭৮৫ সালে প্রকাশিত ‘বেঙ্গল জার্নাল’-এর মালিক টমাস জোনস বিনামূল্যে সরকারি বিজ্ঞাপন ছেপে দিতে রাজি হলেন এবং তার প্রতিদানে ওই কাগজের জন্য সরকারের কাছে ডাক মাসুলের ছাড় চাইলেন। তখনকার নবজাত সংবাদপত্রগুলির মধ্যে প্রায় সকলেই এই পথ ধরেছিল। সরকারও তাদের উৎসাহ, আর্থিক সাহায্য ও ছাপার যন্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্য করতে লাগল।
এ ভাবে ভারতীয় সংবাদপত্রের শৈশবকালে এক দিকে যেমন সরকারের সমালোচনা করা, অন্য দিকে তেমনই সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করা— এই দুটো ধারাই পাশাপাশি চলতে থাকে। আজও বোধ হয় সেই ধারা অব্যাহত।
সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা-৫৯

বাগজোলা খাল
কামারহাটি পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বিটি রোডের ধারে ‘নরেন্দ্রনগর’, ছোট্ট একটা এলাকা। প্রায় হাজার দুয়েক মানুষের বাস। এলাকার উত্তর দিকে বাগজোলা খাল, যা আপার বাগজোলা নামে খ্যাত। সংস্কারের অভাবে আপার বাগজোলার খালের অবস্থা আজ ভীষণ করুণ।
গত ৮/১০ বছর এই খালের সংস্কার হয়নি। অল্প বৃষ্টিতেই নরেন্দ্রনগরে হাঁটু-সমান জল। কয়েক বছর আগেও পরিস্থিতি এতটা খারাপ ছিল না। বাগজোলা খালের ধারে, কেন্দ্র, রাজ্য, কেএমডিএ ও কামারহাটি পুরসভার আর্থিক সহায়তায় তৈরি হয়েছে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন। এই প্রকল্পে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা খরচা করা হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকার জল হাইড্রেনের সাহায্যে পাম্পিং স্টেশনের জলাধারে জমা হচ্ছে, আর পাম্প করে পাইপের সাহায্যে বাগজোলা খালে ফেলা হচ্ছে। যে হেতু খালের ধারণক্ষমতা সংস্কারের অভাবে খুবই সীমিত, তাই খাল উপচে নোংরা নাইট সয়েল মিশ্রিত দুর্গন্ধময় পাঁকযুক্ত জল পুরো পাড়াকে ভাসিয়ে দিচ্ছে।
কথা ছিল, বৃষ্টির জল পাম্পের মাধ্যমে প্রকল্পের জলাধারে ধরে রাখা হবে। পরে বাগজোলা খালের জলস্তর বুঝে জল ছাড়া হবে। বাস্তবে কী ঘটছে? বৃষ্টির সময় দশ মিনিটও জল ধরে রাখতে পারছে না, তখন রাস্তাঘাটও প্রায় আর একটা খালের চেহারা নিচ্ছে। আর দুর্গন্ধময় জমা জল বেরোতে দুই থেকে তিন দিন লাগে। এই সময় নরেন্দ্রনগরের অধিবাসীদের অসহনীয় দুর্দশায় কাটে। তা হলে পাম্পিং স্টেশনের প্রয়োজনীয়তা কি? কোটি কোটি টাকা পাম্পিং স্টেশনের জন্য খরচা না করে, সেই টাকা খাল সংস্কারে লাগালে উপকার হত।
রবি শঙ্কর রায়
কলকাতা-৫৬

পদবি লোপ
যত দিন আমাদের পদবিগুলো আমাদের ধর্ম এবং বর্ণের প্রতীক হয়ে থাকবে, তত দিন বর্ণবৈষম্যের শিকার হবেন নানা স্তরের মানুষেরা। রাজীব চট্টোপাধ্যায়ের ‘ধর্ম-চিহ্ন মুছতে পদবি বিসর্জন’ (১০-১০) পড়ে মনে হল, অবশেষে কিছু মানুষ সচেতন হয়েছেন। পদবি, যা কিনা
বহু ক্ষেত্রে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার উৎস, তা বর্জন করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন।
এই ধারণা সর্বপ্রথম দক্ষিণ ভারতে, বিশেষত তামিলনাড়ুতে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন প্রসিদ্ধ সমাজকর্মী এবং রাজনীতিবিদ ই ভি রামস্বামী, যিনি সাধারণত ‘পেরিয়ার’ নামে পরিচিত। তিনি বর্ণপ্রথাকে নির্মূল করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর উদ্যোগে গড়ে ওঠা আত্মমর্যাদাবোধ আন্দোলনের কারণে ওখানকার মানুষেরা প্রথম নিজেদের পদবি ত্যাগ করেছিলেন, কারণ পদবি বর্ণের ভিত্তিতে নির্মিত।
উত্তর ভারতে অন্য রূপ দেখতে পাওয়া যায়। ওখানকার প্রধানত তফসিলি জাতির লোকেরা পদবি নিষিদ্ধকরণ প্রথা অবলম্বন করেছেন। কিন্তু উচ্চ বর্ণের লোকেরা যথারীতি ধর্ম এবং বর্ণ নির্দিষ্ট পদবি ব্যবহার করে থাকেন।
আমি অতসী
কলকাতা-২৭

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement