দেবদূত ঘোষঠাকুরের লেখা ‘রাজনীতির চাপে জলের আকাল’ (৩-৮) নিবন্ধের প্রেক্ষিতে কিছু কথা। ২০০৪ ও ২০১০ সালে পশ্চিমবঙ্গের সেচ ব্যবস্থা নিয়ে পঞ্চাশোধিক গ্রামে মাঠ সমীক্ষা ও তৎপরবর্তী গবেষণা কাজের মধ্য দিয়ে দেখেছিলাম, এই রাজ্যে সেচের জন্য বেশির ভাগ কৃষিজীবী মানুষ সেচ-পাম্পের ওপর নির্ভরশীল। ২০০১ সাল পর্যন্ত রাজ্যের মোট সেচ-পাম্পের মাত্র ১২% ছিল বিদ্যুৎ-চালিত (সর্বভারতীয় স্তরে যার পরিমাণ ছিল ৫০%) আর বাকি ৮৮% ছিল ডিজেল বা কেরোসিন-চালিত, দ্রুত হারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যে পাম্পগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ছিল। ফলে কৃষি উৎপাদনে আশির দশকে যে অগ্রগতি শুরু হয়েছিল, নতুন শতকের শুরুতে তাতে ভাটার টান পরিলক্ষিত হল। অন্য দিকে ডিজেল পাম্প অলাভজনক হয়ে পড়ার ফলে বেড়ে চলল সেচের জল নিয়ে ব্যবসা। স্বাভাবিক ভাবেই, বিদ্যুৎ-চালিত পাম্পের মালিকরা ভূগর্ভস্থ জলের ওপর একচেটিয়া অধিকার কায়েম করে জল-ব্যবসায় মোটা মুনাফা ঘরে তুলতে শুরু করলেন। ২০০৪ সালের সমীক্ষা দেখিয়েছিল, ৭০ শতাংশের ওপর কৃষক জল কিনে চাষ করছেন। সন্দেহ নেই, এঁদের প্রায় সকলেই প্রান্তিক বা ক্ষুদ্র চাষি।
২০০৫ সালে ভূগর্ভস্থ জল সংরক্ষণ আইন করে ইলেকট্রিক পাম্প বসানোর জন্য সরকারি দফতরের অনুমতির বন্দোবস্ত মোটেই চিত্রটায় বিশেষ পরিবর্তন আনল না। যে সরকারি দফতরের ওপর মাঠ-পরিদর্শন করে সার্টিফিকেট দেওয়ার ভার বর্তাল, পরিকাঠামোর অভাবে সেখানে গুচ্ছ গুচ্ছ দরখাস্ত এসে জমা হতে লাগল, জেলা সদরে অবস্থিত সেই দফতরে ছোটাছুটি করে চাষিরা হয়রান হলেন, সমর্থ চাষি উৎকোচ দিয়ে সার্টিফিকেট বার করলেন, এমনকি জাল সার্টিফিকেট বিক্রির অভিযোগও শোনা গেল। বস্তুত এই আইন ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন নিয়ন্ত্রণে যতটা না কাজে লাগল, তার চেয়ে বেশি কাজে লাগল ভূজলের ওপর পাম্প-মালিক মুষ্টিমেয় সম্পন্ন ব্যক্তির অধিকার কায়েমে।
২০১১ সালে ভূজল নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন মারফত ভূজলের অবস্থা যে-সব অঞ্চলে নিরাপদ (সেফ জ়োনে), সেখানে সরকারি সার্টিফিকেট সংগ্রহের বিধি তুলে দেওয়ার পাশাপাশি স্বল্পমূল্যে বিদ্যুৎ-সংযোগ ও পাম্প কেনার বন্দোবস্ত করা হল। ফলে নিম্নবিত্ত কৃষিজীবী পরিবারের পক্ষেও বিদ্যুৎ-চালিত পাম্প কেনা সম্ভব হল, এবং রাজ্যের কিছু জেলায় বহু সংখ্যক বিদ্যুৎ-চালিত পাম্প বসল। কিন্তু এই নতুন পাম্পগুলো মূলত বিপুল সংখ্যক ডিজেল পাম্পকে প্রতিস্থাপিত করল। এ ছাড়া যাঁরা জল কিনে চাষ করতেন, এমন নিম্নবিত্ত কৃষিজীবীরাও অনেকে বিদ্যুৎ-চালিত পাম্প কিনলেন। এই ভাবে নতুন বিদ্যুৎ-চালিত পাম্পগুলো প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষি পরিবারে সেচের খরচ কমিয়ে বাড়তি আয়ের বন্দোবস্ত করল।
এর ফলে নতুন করে ভূজল উত্তোলন যে বিরাট পরিমাণে বাড়ল— এমন বলার খুব ভিত্তি নেই। কারণ এই সময়ে সেচ-নিবিড় বোরো ধানের এলাকা বাড়ার বদলে কমে গিয়েছে— ২০১০-১১ সালে ১৩.৭ লক্ষ হেক্টর থেকে ২০১৪-১৫ সালে ১২.৯ লক্ষ হেক্টরে। বোরো ধানের চাষ বৃদ্ধিই তো ভূজলের নিম্নগামী হওয়ার মূল কারণ। তাই নতুন নীতির ফলে চাষিরা ঢালাও জল তুলে ভূজলের ভাণ্ডার নিঃশেষ করে দিচ্ছেন, এটা বলা সত্যের অপলাপ হবে। শেষে বলব, এ রাজ্যের কৃষিজীবী মানুষের মধ্যে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের নিম্নগামিতা নিয়ে উদ্বেগ কারও থেকে কম দেখিনি।
অদিতি মুখোপাধ্যায় ও পার্থ সারথি
কলকাতা-১০৪
আবর্জনা
হাওড়ার বাজেশিবপুর শিবতলা মোড়ের কাছেই অপরিসর মেন রাস্তা মন্দিরতলা— সেখানে একটি ভ্যাট হয়েছে, সেখানে এলাকার বাইরেরও আবর্জনা সারা দিন জমতেই থাকে। সেখানে কুকুর-বিড়াল-ইঁদুরের উৎপাত তো আছেই, মশামাছির উপদ্রবও সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। ভ্যাটের কাছেই পানীয় জলের কল, প্রাইমারি স্কুল। কয়েক ফুটের মধ্যে জনবসতি, দোকান। বাড়ির দরজা-জানালা সারা দিন বন্ধ রাখতে হয়।
প্রণব চট্টোপাধ্যায়
শিবপুর, হাওড়া
কলেজ চাই
তেঁতুলবেড়িয়া, কালাঞ্চী, সুবিদপুর নামের ছোট্ট ছোট্ট গ্রামগুলি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটা থানার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। এখন এই গ্রামগুলিতে শিক্ষার হার বাড়ছে। কিন্তু উচ্চশিক্ষার হার বাড়ছে না। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের পর বাধ্য হয়ে পড়া ছেড়ে দিচ্ছে এই প্রত্যন্ত এলাকার মেধাবী ছেলেমেয়েরা। এর প্রধান কারণ, গ্রামে প্রাইমারি বা মাধ্যমিক স্কুল থাকলেও, উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দিতে হয় প্রায় ২০ কিমি দূরে গোবরডাঙা কলেজে, অথবা ২৫ কিমি দূরে বনগাঁ কলেজে। এত দূরে গিয়ে উচ্চশিক্ষার পাঠ নেওয়া অনেকের পক্ষেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাই এলাকাবাসীদের দীর্ঘ দিনের দাবি, বেড়ি পাঁচপোতায় একটি কলেজ তৈরি হোক।
জ্যোতি প্রকাশ ঘোষ
বেড়ি পাঁচপোতা, উত্তর ২৪ পরগনা
পড়া হল না
আমি গ্রামের এক গরিব তফসিল জাতির দিনমজুরের কন্যা। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে ৮৮% পেয়ে পাশ করি। বহরমপুরে এক প্রাইভেট নার্সিং কলেজে জিএনএম-এ গত বার ভর্তি হই। বাবা খরচ চালাতে পারছেন না, তাই সরকারি কলেজে পড়ার জন্য নার্সিংয়ে দরখাস্ত করেছিলাম। গত ১০-৭-১৯ তারিখে রাত্রি ১০টার সময় মোবাইলে মেসেজ আসে, ১২-৭-১৯ বেলা ১০টায় মূল কাগজপত্র, প্রধানের সার্টিফিকেট এবং মেডিক্যালের কিট নিয়ে হাজির হতে হবে। এক দিনের মধ্যে সব কাগজ জোগাড় করার ক্ষমতা ও সময় কোনওটাই আমাদের ছিল না। উপরন্তু নার্সিংয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য কিছু অরিজিনাল কাগজ বেঙ্গালুরুতে পাঠিয়েছে কলেজ, সেগুলি পেশ করতে গেলে দু’চার দিন আরও বেশি লাগবেই। অ্যাটেস্টেড কপি নিয়ে দেখা করতে গেলাম, আমাকে বাতিল করে দেওয়া হল। আমার পড়া হল না।
সুচিত্রা কাহার
চন্দ্রহাট, বীরভূম
হাসপাতালে
কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের দিকটায় একটি ছাউনি বা শেডের দরকার। রোগী ও রোগীর পরিজনদের চড়া রোদে বা বৃষ্টিতে হাসপাতালের ভিতর যেতে হয়।
আর, কল্যাণীর গাঁধী মেমোরিয়াল হাসপাতালের প্রধান গেট থেকে ভিতরের দিকের রাস্তা দিয়ে জরুরি বিভাগে যাওয়া যায়। রাস্তাটা খুবই খারাপ এবং আলোর ব্যবস্থা নেই।
শিবপদ চক্রবর্তী
কাঁচরাপাড়া, উত্তর ২৪ পরগনা
পুকুর নোংরা
সোদপুর বঙ্কিমপল্লিতে সাড়ে তিন বিঘা জমির উপর একটি পুকুর আছে, যা ছিল এই পাড়ার প্রাণকেন্দ্র। দৈনন্দিন সব কাজেই পুকুরটি ব্যবহৃত হত। কিন্তু এখন পুকুরটি জঞ্জালের স্তূপে পরিণত। দুর্গন্ধে মাঝে মাঝে এর পাশ দিয়ে যাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে।
জয়ব্রত গুহ
সোদপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
পুকুর ভরাট
তমলুকের ১৩ নং ওয়ার্ডে চৌমাথার মোড়ে বিশাল জলাশয়টি অবৈধ ভাবে ভরাট করে বহুতল নির্মাণের চেষ্টা চলছে। বার বার তমলুক পুরসভাকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।
শৈবাল সরকার
পার্বতীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর