আমি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করি। গত ১৭ অগস্ট দেখলাম ওই ব্যাঙ্কের একটি এসএমএস, যাতে ১১ লক্ষের কিছু বেশি টাকা খরচ হয়েছে। চমকে উঠে দেখলাম, এই রকম ১০টি মেসেজ রয়েছে। মোট ১ কোটি ১০ লক্ষ। আমার ক্রেডিট লিমিট অত নয়। এ বার দেখলাম, এই ট্রানজ়্যাকশন হয়েছে ভিয়েতনাম কারেন্সিতে (ভিএনডি)। আমি রয়েছি বীরভূমের সিউড়িতে, খরচ হল ভিয়েতনামে। ব্যাঙ্কের লোকাল শাখার পরামর্শে সিউড়ি সাইবার ক্রাইম থানায় রিপোর্ট করলাম। তাদের পরামর্শমতো রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বর থেকে কাস্টমার কেয়ার-এ জানালাম। একটি রেফারেন্স নম্বরও পেলাম।
মেল করলাম, আবার একটি রেফারেন্স নম্বর এল। পর দিন ‘ডিসপিউট ফর্ম’ ভরে আবার পাঠালাম। আবার একটি নম্বর। এত দ্রুত এত কিছু করার পরও ১৯ অগস্ট আমার ক্রেডিট কার্ডে ওই টাকার বিল তৈরি হল। প্রতিবাদ জানিয়ে মেল পাঠালাম। আবার একটি রেফারেন্স নম্বর পেলাম। অর্থাৎ মেল কেউ পড়ে না, অটো রেসপন্স।
আমার কার্ড আমার কাছে। বিগত এক মাস কার্ড ব্যবহার হয়নি। কার্ড-সম্পর্কিত কোনও তথ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করিনি। তার পরও এ-রকম ঘটনা কী ভাবে ঘটল? ব্যাঙ্কের সাইবার নিরাপত্তা কোথায়? ডিজিটাল ইন্ডিয়া নিয়ে ভাবার আগে নিরাপত্তার দিকটি ভাবা উচিত ছিল।
পীযূষ কান্তি চট্টোপাধ্যায়
সিউড়ি, বীরভূম
শিলান্যাসই সার
এ রাজ্যে শিক্ষার অগ্রগতির মানচিত্রে পূর্ব মেদিনীপুর একেবারে সামনের সারিতে, সমস্ত জেলাবাসী যা নিয়ে গর্ব অনুভব করেন। প্রায় ৫০০-র বেশি হাইস্কুল ও ১৮টি ডিগ্রি কলেজে লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী পড়াশুনা করছে। অথচ, জেলায় কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নেই। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করতে কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী জেলায় যেতে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে, ঠিকই। কিন্তু সিমেস্টার নিয়মের গেরোয় ও উচ্চতর শিক্ষায় অস্বাভাবিক বর্ধিত ফি-র চাপে জেলার গরিব ও প্রান্তিক পরিবারের মেধাবী পড়ুয়া স্নাতক স্তরেই শিক্ষা শেষ করতে বাধ্য হচ্ছে। সেভ এডুকেশন কমিটি, এআইডিএসও-র মতো বেশ কিছু ছাত্র ও শিক্ষক সংগঠন বিষয়টি নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বহু বার দরবার করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বর্তমান রাজ্য সরকার বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয়েছিল। ২০১৮ সালে কেন্দ্রের নির্দেশে মহাত্মা গাঁধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মহিষাদল-সংলগ্ন কাপাসএড়ার সরকারি জমিতেই মহাত্মা গাঁধী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস হয়। ইউজিসি-র তিন জনের প্রতিনিধি দল সরেজমিন তদন্ত করে ২০১৯-এর শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান শুরুর ঘোষণাও করেন জেলার শিক্ষা প্রশাসনের উপস্থিতিতে।
কিন্তু পাঠদান তো দূর অস্ত্, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চিহ্নিত জমিতে আজ পর্যন্ত একটা ইটও গাঁথা হল না। অথচ, অনেক পরে উদ্যোগ গ্রহণ করেও বাঁকুড়া কিংবা পুরুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে, ক্লাসও শুরু হয়েছে। আর কত দিন হতাশায় কাটাতে হবে এ জেলার পড়ুয়াদের!
স্বপন জানা
পূর্ব মেদিনীপুর
জমি দখল
সম্প্রতি পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে জবরদখলকারীদের শ্রীরামপুর রেলওয়ে মালগুদামের পাশে রেলের জমি খালি করার নোটিস দেওয়া হয়। অন্যথায় উচ্ছেদ করা হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়। বিগত তিন দশকের অধিক সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি জমি জবরদখল করার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে পিডব্লিউডি, রেল, কর্পোরেশন, মিউনিসিপ্যালিটি-র জমির নাম করা যায়। এই কুকর্মের প্রধান মদতদাতা শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক দল, পুলিশ প্রমুখ। এর ফল হিসেবে নাগরিকদের প্রাপ্তি যান চলাচলের সরু রাস্তা, ফুটপাতে হাঁটার অধিকার লুট এবং অবশ্যই সর্বপ্রকার বেআইনি কার্যকলাপ।
রেলের নোটিসের পর কালক্ষয় না করে তৃণমূল কংগ্রেস জবরদখলকারীদের পক্ষ নিয়ে চড়া সুরে শ্রীরামপুরে রাস্তায় নামে। বিজেপি-ই বা বাদ যায় কেন, তারাও নামে রাস্তায়। সরকারি জমি দখল হয়ে যাচ্ছে, আর শপথবাক্য পাঠ করে দায়িত্ব নেওয়া কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল তাতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। দেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।
সৌম্যেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
শ্রীরামপুর, হুগলি
ফিরুক ডাকঘর
কয়েক মাস হল আমাদের পোস্ট অফিসটি লেক স্টেডিয়ামের কাছে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এত দিন যে বাড়িতে পোস্ট অফিসটি ছিল, সেটির জরাজীর্ণ অবস্থা। ধারকাছে অন্য কোনও বাড়ি পাওয়া যায়নি।
কিন্তু পোস্ট অফিস সরিয়ে নেওয়ার পর থেকেই এক বিরাট অঞ্চলের জনগণ ঠিকমতো পরিষেবা পাচ্ছেন না। চিঠি বিলিও অনিয়মিত, স্পিডপোস্ট করতে অসুবিধে হচ্ছে, এমনকি যে সব প্রবীণ নাগরিক ওখান থেকে বিভিন্ন স্কিমের মাসিক সুদ সংগ্রহ করেন, তাঁদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনুরোধ, পোস্ট অফিসটি আবার আমাদের এলাকায় ফিরিয়ে আনা হোক এবং এলাকার মানুষ যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, সে দিকে নজর দিক কর্তৃপক্ষ।
মলয় দাস
কলকাতা-৩১
বন্ধ ফেরিঘাট
বজবজ-বাউড়িয়া ফেরিঘাট পাঁচ মাসের ওপর বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। প্রথমে লকডাউনের জন্য, ও পরে বানের তোড়ে বাউড়িয়ার দিকে জেটি ভেঙে যাওয়ার জন্য হুগলি নদী জলপথ পরিবহণের এক গুরুত্বপূর্ণ এবং লাভজনক ফেরিটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বজবজ, মহেশতলা, সন্তোষপুর ও হাওড়ার বাউড়িয়া, পাঁচলা-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ আজ সমস্যার সম্মুখীন। আনলক প্রক্রিয়া শুরুর পর হাওড়ার বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম এই ফেরিপথ। একটা জেটি সারাতে পাঁচ মাস সময় লাগা কি উচিত? একে ট্রেন বন্ধ, অন্যান্য পরিবহণ অপ্রতুল, ভাড়াও দ্বিগুণ। অনেক যাত্রী জীবিকার সন্ধানে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অনেকটা দূরে ঝাউতলা ঘাটের ছোট ছোট ভুটভুটিতে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়ায় (৪/৫টি বাইক ও সাইকেল-সহ) যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছেন। সেখানে সন্ধের পর ঘুটঘুটে অন্ধকারে হাঁটুজলে নামা-ওঠা খুবই দুরূহ, যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অবিলম্বে এই ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।
রাধারমণ গঙ্গোপাধ্যায়
বজবজ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
স্বাস্থ্যকেন্দ্র
বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়র ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে কোয়রান্টিন পরিষেবা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত কক্ষ নেই। ফলে গ্রামে বা পাড়ায় ফিরে পরিযায়ী শ্রমিকরা ক্রমাগতই হেনস্থার মুখে পড়ছেন। অথচ এই ব্লকের অন্তর্গত বালসি গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ২০১০ সাল থেকে তৎকালীন শাসক দল ও বর্তমান শাসক দলের রাজনৈতিক হিংসা, সংঘর্ষের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই ভবনটি। পরে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র আর চালু হয়নি। আজ হাসপাতাল চত্বরটি নেশার ঠেক ও বেআইনি অধিগ্রহণের শিকার। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ক্যাম্পাসে সরকারি আবাসনগুলিও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পড়ে রয়েছে। এখানে দু’এক জনকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু ভাঙাচোরা ঘরে বেশি দিন থাকা সম্ভব হয়নি। পঞ্চায়েতও এ বিষয়ে উৎসাহ দেখায়নি। সাধারণ মানুষ আজ প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবাটুকু গ্রামে ঠিক মতো পাচ্ছেন না।
সৌমেন কোনার
পাত্রসায়র, বাঁকুড়া
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।