উত্তর আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরে ৭০,০০০ বর্গ কিমি জুড়ে প্লাস্টিকের অস্তিত্ব চিহ্নিত করেছিল আমেরিকার ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। যা ‘গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচ’ নামেই পরিচিত। দক্ষিণ স্পেনের মুরসিয়া উপকূলে, ফিলিপিন্সের উপকূলে, ইটালির সার্ডিনিয়া উপকুলে তিমির মৃতদেহে প্লাস্টিক সংবাদ শিরোনামে এসেছে। সম্প্রতি ৩৫,৮৪৯ ফুট গভীর মারিয়ানা ট্রেঞ্চেও পাওয়া গিয়েছে প্লাস্টিক। এই নিয়ে তৃতীয় বার প্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেল পৃথিবীর গভীরতম বিন্দুতে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, সমুদ্র উপকুলের ১৯২টি দেশে তৈরি ২৭৫ মিলিয়ন টন প্লাস্টিকের মধ্যে প্রায় ৮ মিলিয়ন টন সমুদ্রে মেশে। এই দেশগুলির মধ্যে শুধু চিন থেকে প্রতি বছর ২.৪ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক নদীবাহিত হয়ে সমুদ্রের পৌঁছয়। এর পরই রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ড, মিশর, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া এবং বাংলাদেশ। আমাদের দেশ খুব একটা পিছিয়ে নেই। ২০১৭ সালে ‘নেচার কমিউনিকেশন’-এ প্রকাশিত, নেদারল্যান্ডসের ওশন ক্লিন-আপ ফাউন্ডেশনের ‘রিভার প্লাস্টিক এমিশন টু দ্য ওয়ার্ল্ড’স ওশনন্স’ রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, গঙ্গা প্রতি বছর ১ লক্ষ ২০ হাজার টন প্লাস্টিক বয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলছে। ‘ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিক সোসাইটি’র বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সমুদ্রে প্রায় ৫১ ট্রিলিয়ন প্লাস্টিক রয়েছে, যার ৯০% হল ‘মাইক্রোস্কোপিক’।
নন্দগোপাল পাত্র
সটিলাপুর, পূর্ব মেদিনীপুর
অন্য সমীকরণ
বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী নুসরত জাহানের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় (৩৩৭৯৯৫) স্পষ্ট করেছে, বিজেপির উগ্র হিন্দুত্ববাদে ভয় পেয়ে সংখ্যালঘু বাম সমর্থকরা তৃণমূলকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে বেছে নিয়েছেন। তা হলে বসিরহাটের মানুষের মতো, যদি বহরমপুর ও মালদহ দক্ষিণ লোকসভার অন্তর্ভুক্ত ভোটাররা, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ‘কংগ্রেস ও বামপন্থীদের সরকার গঠনের ক্ষমতা নেই, অতএব সব ভোট তৃণমূলকে দেওয়া ভাল’ মনে করেন, অবাক হওয়ার কিছু নেই। লক্ষণীয়, জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু সংবলিত আসন দু’টিতে তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ের ব্যবধান যথাক্রমে ২৪৫৭৮২ ও ২২৬৪১৭। অতএব এখানেও যে একটা বড় অংশের সংখ্যালঘু বাম ভোট রামের দিকে না গিয়ে তৃণমূলের দিকে গিয়েছে, তা স্পষ্ট। তাই ‘বামের ভোট রামে’ শীর্ষক সরল সমীকরণ যেমন খুব জনপ্রিয় হয়েছে, তেমনই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ‘সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলে’ শীর্ষক অন্য সমীকরণ যে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে না, কে বলতে পারে?
প্রণয় ঘোষ
কালনা, পূর্ব বর্ধমান
গোমাংস
‘ফেসবুকে পোস্ট করে গ্রেফতার আদিবাসী শিক্ষক’ (২৭-৫) পড়ে আতঙ্কিত বোধ করছি। এক আদিবাসী অধ্যাপক দু’বছর আগে আদিবাসীদের গোমাংস খাওয়ার অধিকার নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর তাঁকে গ্রেফতার করেছে বিজেপি শাসিত ঝাড়খণ্ডের পুলিশ। দেশব্যাপী ধারাবাহিক খাদ্য সন্ত্রাস আবহে এই গ্রেফতারি স্বাধীন মত প্রকাশে এক অশনি সঙ্কেত। অবশ্য হাল আমলে মুক্তচিন্তার বলি হয়েছেন কালবুর্গি, দাভলকর, গৌরী লঙ্কেশ প্রমুখ।
বাড়িতে অতিথি এলে তাঁকে গোমাংস দিয়ে আপ্যায়ন করতে হবে এবং সঙ্গে চার জন ব্রাহ্মণকেও আমন্ত্রণ করে গোমাংসে আপ্যায়িত করতে হবে, সুস্পষ্ট নির্দেশটি রয়েছে কৃষ্ণযজুর্বেদের মৈত্রায়নীয় শাখার অন্তর্ভুক্ত মানব গৃহস্থসূত্রে। সন্তানেচ্ছু দম্পতি যদি সর্বগুণাণ্বিত, সুদেহী, পূর্ণায়ুষ্মান পুত্রসন্তান লাভ করতে চায়, মিলনের আগে তাদের উচিত পূর্ণবয়স্ক গরু বা কচি বাছুরের মাংস খাওয়া, নিদান রয়েছে বৃহদারণ্যকে। লক্ষণীয়, সিন্ধু অববাহিকায় যবনদের আগমনের কিন্তু তখনও ঢের দেরি।
কৃষিপ্রধান অর্থনীতিতে ক্রমে মানুষ দুধ-ঘি-মাখনের জোগানদার ও হলকর্ষণের উপকরণ হিসাবে গরুর উপযোগিতা বুঝতে শেখে। প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক কারণে গোহত্যা বন্ধে ধর্মীয় মোড়কে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এক সময় ধর্মভীরু মানুষ গোমাংস খাওয়াকে চরমতম অহিন্দু কাজ ও গোহত্যা হিন্দুধর্মবিরোধী বলে বিশ্বাস করতে শেখে। যে হেতু গোহত্যা এবং গোমাংস বিক্রয় ও ভক্ষণ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত এক শ্রেণির মানুষের সহজাত, তাই উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত করার কাজে এই অবলা জীবকে যুগে যুগে ব্যবহার করে এসেছে মতলবি মানুষ।
সরিৎশেখর দাস
নোনা চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর
মোরারজি
‘ভোটের ধারা তা হলে পাল্টাচ্ছে’ (৩০-৫) শীর্ষক নিবন্ধে বলা হয়েছে, দেশের অকংগ্রেসি অবিজেপি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ভি পি সিংহ, চন্দ্রশেখর, দেবগৌড়া এবং গুজরাল। কিন্তু এ দেশে প্রথম অকংগ্রেসি অবিজেপি প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন জনতা পার্টির মোরারজি দেশাই। তিনি ২৪ মার্চ ১৯৭৭ থেকে ১৫ জুলাই ১৯৭৯ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন।
ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত
কলকাতা-৭০
ল্যান্ডলাইন
আমার বাড়ির ল্যান্ডলাইন আজ দু’মাস পুরো বন্ধ। অথচ প্রতি মাসের টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ইসিএস-এ কেটে নেওয়া হয়। যত বারই অভিযোগ জানাই, তিন-চার দিনের মধ্যে মেল আসে, আপনার ফোন ঠিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কিছুই হয় না। স্থানীয় টেলিফোন এক্সচেঞ্জের আধিকারিকের সঙ্গে একাধিক বার দেখা করেছি। কিছুই হয়নি। শেষে ক্যালকাটা টেলিফোনের সিজেএম-কে দু’বার মেল পাঠিয়েছি। প্রাপ্তিস্বীকার ছাড়া কিছুই পাইনি। যদি সারাতে না পারেন, লাইনটি কেটে দিন। কত দিন অকারণে টাকা দেব?
অমিতাভ দাশ
নবপল্লি, বারাসত
আরও রাজশেখর
‘নানা রকম রাজশেখর’ (৩০-৫) শীর্ষক চিঠিতে রাজশেখর বসুর ‘অনবদ্য হস্তাক্ষর’-এর কথা পড়ে, রাজশেখরের অন্য এক ভূমিকার কথা মনে পড়ল। বেঙ্গল কেমিক্যালে রাজশেখর যোগ দেন ১৯০৩ সালে এবং যুক্ত ছিলেন আমৃত্যু (১৯৬০)। কেমিস্ট হিসেবে শুরু করে, ক্রমে কোম্পানি সেক্রেটারি, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার এবং পরে অন্যতম ডিরেক্টর হন। কোম্পানি সেক্রেটারি হিসাবে ডিরেক্টর বোর্ডের বৈঠক ও কোম্পানির সাধারণ সভার কার্যবিবরণ স্বহস্তে ইংরেজিতে লিখতেন। তাঁর ইংরেজি হস্তাক্ষরও ছিল অনবদ্য, কাটাকুটি থাকত না।
ওই সংস্থায় রাজশেখর নতুন নতুন পণ্যের নামকরণ (ঊষসী, অশ্বন, মারকীট, বোরোলেপ) করতেন, ওই সব পণ্যের বিজ্ঞাপনের কপি লিখতেন, এমনকি ছবিও অাঁকতেন। পরে ছবি আঁকার দায়িত্ব দেন শিল্পী যতীন্দ্রকুমার সেনকে। যতীন্দ্রকুমার-রাজশেখর জুড়ির তৈরি বিজ্ঞাপন সাড়া ফেলেছিল। পরে যতীন্দ্রকুমার রাজশেখরের বিভিন্ন গল্পেরও অলঙ্করণ করেছিলেন। রাজশেখর নিজেই বলেছেন, যদি বিজ্ঞাপনের ‘কপি’ লেখা অথবা প্রাইস লিস্ট তৈরি করাকে সৃষ্টিশীল রচনা বলা যায়, তবে তাঁর সৃষ্টিশীল রচনার শুরু বেঙ্গল কেমিক্যালেই।
দেবব্রত মুখোপাধ্যায়
কলকাতা-১০৬
হেলমেট
বেপরোয়া মোটরসাইকেল এবং টোটো চালানো এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, পথচারীদেরই হেলমেট ব্যবহার করা দরকার।
তারাপদ মণ্ডল
কান্দি, মুর্শিদাবাদ