‘ঐতিহ্য’ (১১-৫) সম্পাদকীয়তে পড়লাম, ‘‘১৯২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় সমগ্র বাংলা ঘুরিয়া তাঁহার অর্থসংগ্রহ এবং ত্রাণকার্য ছাত্রদের মনে গভীর রেখাপাত করিয়াছিল। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সমাজমাধ্যমে জানাইয়াছে, প্রফুল্লচন্দ্রের স্থাপিত দৃষ্টান্তই তাহাদের ঐতিহ্য।’’ প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মূল মন্ত্র ছিল দেশসেবা। চিত্তরঞ্জন দাশের স্ত্রী বাসন্তী দেবীকে লিখছেন, ‘‘প্রিয় ভগিনী, আমি আপনাকে নিশ্চিতরূপে বলিতে পারি যে, যখন বিজ্ঞান চর্চা করি, তখন বিজ্ঞানের মধ্য দিয়া দেশকেই সেবা করি। আমাদের লক্ষ্য একই, ... আমার জীবনের অন্য কোনও উদ্দেশ্য নাই।’’ শুধু ১৯২২ নয়, তার আগের বছর চতুর্থ বার ইংল্যান্ড ভ্রমণ শেষে দেশে ফেরার পর, খুলনা জেলার সুন্দরবন অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের খবর পান। আত্মচরিতে তিনি লিখছেন, ‘‘...দুর্গতদের সেবাকার্যের ব্যবস্থা এবং দেশবাসীর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিবার দায়িত্ব আমি গ্রহণ করিলাম। দেশবাসী সর্বান্তকরণে সাড়া দিল— যদিও গবর্নমেন্ট সরকারীভাবে খুলনার দুর্ভিক্ষকে স্বীকার করেন নাই।’’
খুলনার রেশ কাটতে না কাটতেই ২২ সেপ্টেম্বর ১৯২২ থেকে অতিবর্ষণে আত্রেয়ী নদীতে জলস্ফীতির জন্য বগুড়া, পাবনা ও রাজশাহিতে বন্যা হয়। দুর্গতদের সাহায্যার্থে গঠিত হল বেঙ্গল রিলিফ কমিটি। আচার্য রায় হলেন সভাপতি। আত্মচরিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘বিজ্ঞান কলেজের প্রশস্ত গৃহে বন্যা সাহায্য সমিতির অফিস করা হইল এবং অপূর্ব উৎসাহের চাঞ্চল্যে ঐ বিদ্যামন্দিরের নীরবতা যেন ভঙ্গ হইল। দলে দলে নরনারী ঐ স্থানে যাতায়াত করিতে লাগিল। প্রায় সত্তর জন স্বেচ্ছাসেবক— তাহার মধ্যে কলিকাতার কলেজসমূহের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকও ছিলেন— প্রত্যহ সকাল হইতে মধ্যরাত্রি পর্যন্ত অনবরত কার্য করিতেন।’’
আচার্য সেবাকর্মে বিপুল সাড়া পেয়েছিলেন। কারণ, সর্বত্যাগী মানুষটির প্রতি দেশবাসীর বিশ্বাস ও আস্থা। প্রত্যেকেই জানতেন, তাঁদের দানের সদ্ব্যবহার হবে, একটুও এদিক ওদিক হবে না। বন্যাত্রাণে আচার্য রায়ের সাফল্যের কথা লোকমুখে প্রচারিত হতে থাকে। কিন্তু তিনি বলেন, ‘‘এই ব্যাপারে আমার নাম যে সমধিক প্রচারিত হইয়াছে, এজন্য আমি কুণ্ঠিত। প্রকৃতপক্ষে আমি নামমাত্র কর্তা ছিলাম।’’
এর পরও ১৯৩১-এ ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় ভয়াল বন্যাতেও আচার্য রায় ৭০ বছর বয়সে সেবাকার্যের হাল ধরেছিলেন। আত্মচরিতে লিখেছেন, ‘‘প্রধানতঃ কাঁথি ও তমলুক হইতে আগত একদল স্বেচ্ছাসেবক আমাদের কার্যে বিশেষরূপে সাহায্য করিয়াছিলেন। বন্যার প্রথম অবস্থায় বিধ্বস্ত অঞ্চলে কলেরা ও ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব হইয়াছিল। কিন্তু এই সমস্ত ত্যাগী কর্মীরা “অজ্ঞাত যোদ্ধার” মতই সে বিপদ গ্রাহ্য করেন নাই।’’
নন্দগোপাল পাত্র, সটিলাপুর, পূর্ব মেদিনীপুর
ফুটপাত গায়েব
দমদম সেভেন ট্যাঙ্কস (সাত পুকুর) মোড় থেকে চিড়িয়ামোড়ের দিকে যাওয়ার বাঁ দিকের ফুটপাতের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। পায়রার খাঁচা, হাঁস-মুরগির খাঁচা ছাড়াও অন্যান্য অনেক কিছুর সাহায্যে ফুটপাতটি প্রায় সম্পূর্ণ রূপে দখল করে রাখা হয়েছে। এমনকি ফুটপাতের উপর প্রায়ই একটি বাঁদরও বাঁধা থাকে।
অমিত দাস, কলকাতা-৩০
নিজের টাকা
গত ২৩ মার্চ আমার ম্যাচিয়োর্ড ফিক্সড ডিপোজ়িট নিয়ে, ভাঙাবার উদ্দেশ্যে, ব্যাঙ্কে যাই। জানতে পারি, আপাতত এই সব পরিষেবা বন্ধ আছে। আজও এই পরিষেবাগুলি বন্ধ। কিছু দিন কোনও রকমে সব চালিয়ে নিলেও, এখন আর্থিক ভাবে যথেষ্ট অসুবিধেয় পড়তে হচ্ছে।
ডাকঘরগুলির অবস্থাও তথৈবচ। সেখানেও এনএসসি-র টাকা আজ তোলা যাচ্ছে না। নিজের টাকাই যদি এই অসময়ে না পাই তা হলে কী অবস্থা হয় তা সহজেই অনুমেয়।
সৌমেন চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা-৮৪
ট্রেনের স্টপ
আলিপুরদুয়ার এনএফ রেলওয়ের বিভাগীয় সদর এবং এই বিভাগের সমস্ত কাজ এই সদর থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এই রুটে যখনই কোনও বিশেষ ট্রেনের ঘোষণা করা হয়, তার স্টপ নিউ আলিপুরদুয়ারে দেওয়া হয় না, দেওয়া হয় নিউ কোচবিহারে। এর যুক্তিটা কী?
হরিশংকর সরকার, শচীন্দ্র সরণি, আলিপুরদুয়ার
চেকার নেই?
কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২ মে থেকে ১৫ জোড়া কোভিড স্পেশাল ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করেছে ভারতীয় রেল। সেখানে কতগুলি নিয়ম মানার জন্য ফরমানও জারি করেছেন কর্তৃপক্ষ, টিকিট বিক্রি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আইআরসিটিসি-কে, সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। প্রশ্ন গুরুতর, এই যে ৩০টি ট্রেন চলবে, সারা রাস্তায় কোনও টিকিট চেকিং স্টাফ থাকবে না, শুধুমাত্র গার্ড, ড্রাইভার ও আরপিএফ-দের মাধ্যমে ট্রেনগুলিকে যাতায়াত করানো হবে, সেটা কি ঠিক কাজ? দূরপাল্লার গাড়িতে শুধু টিকিট পরীক্ষা করার জন্যই টিটিই/চেকার-রা থাকেন না, নানাবিধ সমস্যায় যাত্রীরা তাঁদের খোঁজ করেন।
বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বহু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে ভেঙে দিচ্ছে, তারই অঙ্গ হিসেবে রেলেও বিভিন্ন বিভাগে কর্মী ছাঁটাই চলছে। ইতিমধ্যেই রেলের প্রিন্টিং প্রেস তুলে দেওয়া হয়েছে ২০১৮ সালে, বহু বিভাগকে ধীরে ধীরে বেসরকারিকরণের দিকে এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই আশঙ্কা, ‘শ্রমিক স্পেশাল’ বা ‘কোভিড স্পেশাল’ ট্রেন চালানোর পাশাপাশি আরও কিছু বিভাগ তুলে দেওয়ার মহড়া হচ্ছে না তো? টিকিট চেকার ব্যতিরেকে ট্রেন চালানোর অভূতপূর্ব আদেশে বহু রেল কর্মচারীই ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছেন।
সৌমিত্র মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-৬১
দিন বাড়ান
আমি ত্রৈমাসিক রেল টিকিটের গ্রাহক। আমার বর্তমান টিকিটের ভ্যালিডিটি মার্চ থেকে জুন অবধি। মার্চ মাসে কয়েক দিন ব্যবহারের পরেই, সারা দেশে রেলযাত্রা স্থগিত হয়ে যায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ এড়াতে। রেল দফতরকে অনুরোধ, তাঁরা যখন আবার গাড়ি চালাবেন, তখন যেন, যে ক’দিন এই টিকিট অব্যবহৃত ছিল, তা হিসেব করে, স্থানীয় স্টেশনমাস্টারের সই ও সিল সহ টিকিটের ওপর সমসংখ্যক দিন বর্ধিত করার নির্দেশ দিয়ে দেন। তা হলে নিত্যযাত্রীরা উপকৃত হবেন।
জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা-১৪৬
কেমন বিল?
লকডাউনে স্পট মিটার, বিল না পাওয়ায় মোবাইল মেসেজের ভিত্তিতে ১১ মে, বিদ্যুতের বিলের টাকা জমা দেওয়ার সময়, কাউন্টার থেকে মে, জুন, জুলাই ২০২০-র বিল বাবদ ৪৩০০ টাকা দিতে বলা হয়। জানতে চাইলে বলা হয়, এটা ‘অ্যাভারেজ বিল’। অথচ ২০১৯ সালের মে, জুন, জুলাই মাসের জন্য ৩৮০০ টাকা বিল জমা দিয়েছিলাম।
গত ২৩ মার্চ থেকে অশোকনগর স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন অফিস পুরোপুরি বন্ধ। মাঠে ক্রিকেট খেলা না হওয়ার দরুন পাম্প চালিয়ে ক্রিকেট পিচে ও মাঠে জল দিতে হচ্ছে না। তা সত্ত্বেও বিদ্যুতের বিল দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৪৭০ টাকা।
এটা কেমন হিসেব? কেমন ‘অ্যাভারেজ’?
সুনীল আচার্য চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ, অশোকনগর স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।