প্রতীকী ছবি।
বিগত কয়েক বছর ব্যাঙ্কে জমা টাকার উপর সুদের হার নেমে চলেছে। কর্মজীবনে কষ্টার্জিত টাকার উপর গোনাগুনতি সুদের টাকায় কোনও মতে মানসম্ভ্রম বজায় রেখে দিন গুজরান করেন যাঁরা, নাভিশ্বাস উঠছে তাঁদের। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সুদের হার (রেপো রেট) আরও এক দফা কমায় কালো মেঘ দেখছেন তাঁরা। সুদ কমানোর প্রভাব পড়বে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির প্রদত্ত সুদের হারে।
বরিষ্ঠ নাগরিকদের জন্য জমাতেও সুদের হারে অধোগতি। জীবনের অপরাহ্ণবেলায় ন্যূনতম আয় বজায় রাখতে অনিশ্চয়তার পথে বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে বেশির ভাগ মানুষের স্নায়ু সায় দেয় না। কোথায় দাঁড়াবেন তাঁরা? সুগত মারজিৎ-এর প্রতিবেদনটির প্রতি (‘সুদ কমানোর ভুল পথ’, ১৫-৬) পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে, সাধারণ সঞ্চয়ী শ্রমজীবী মানুষের পক্ষ থেকে দু’একটি কথা বলতে চাই।
পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে এ দেশের মানুষ ভোগবাদের প্রতি উৎসাহী হলেও সনাতন ভারতবাসীর জীবনদর্শন ভিন্ন। এক-আধ দিন পোলাও-কালিয়া হলে ভাল, নয়তো ডাল-ভাতেই দিব্যি চলে যায় তার। গড় আয়ু বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশে ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। নিরুপদ্রবে জীবন কাটানোর জন্য ক্ষুদ্র আমানতের উপর সুদে ঘাটতি পড়ায় তাঁরা শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
আশপাশ থেকে কানে আসে, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের আহ্বান। রোজগারের হার বাড়াতে কেউ কেউ সে দিকে হাত বাড়িয়ে লাভবান হয়েছেন। কিন্তু শেয়ার বাজারের অন্ধিসন্ধি না জেনে সম্যক অভিজ্ঞতা ছাড়াই শেষ ভরসার টাকা বিনিয়োগ করে হাত পুড়িয়েছেন বেশির ভাগ সীমিত সামর্থ্যের মানুষ।
মুক্তির অলীক স্বপ্ন দেখিয়েছিল চিটফান্ডগুলি। স্বপ্নভঙ্গে কোমর ভেঙে গিয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষের, অনিশ্চিতের গর্ভে চলে গিয়েছে কষ্টার্জিত মূলধন। সাধারণ মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা প্রদান করার সঙ্গে সঙ্গে সুদের হারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু সে পথে না হেঁটে সরকার কলকাঠি নাড়াচ্ছে এক বিশেষ সুবিধাভোগী শ্রেণির স্বার্থে, যাতে মাদারির খেলায় অর্থের গতিমুখ সেই বিশেষ শ্রেণির থলিমুখে ধাবিত হয়। সরকারি প্রচারযন্ত্রের ঢক্কানিনাদে চাপা পড়ে যায় সাধারণের যন্ত্রণারব।
উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সুদের হারে যত কেরামতি করতে চান করুন। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি আমানতকারীর ভাতের থালায় থাবা মারবেন না। মনে রাখবেন, ব্যাঙ্ক-পোস্ট অফিসে সুদের হারে অবনমন ঘটলে সীমিত সামর্থ্যের লোকজনের কেনাকাটাও কমে আসে। তাতে জাতীয় অর্থনীতির ক্ষতি বই লাভ হয় না।
বিশ্বনাথ পাকড়াশি, শ্রীরামপুর, হুগলি
পতাকা
সম্প্রতি ভারতীয় রেল পরিচালিত হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে, রেল এলাকায় একটি করে বিশালাকার জাতীয় পতাকা স্থাপন করা হয়েছে। দিনরাত নির্বিশেষে ওই দুই স্থানেই জাতীয় পতাকা দু’টি সব সময়েই উত্তোলিত অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। যা সম্ভবত 'The Flag Code of India'-র নির্দেশ মেনে চলে না। ওই কোড অনুযায়ী, যে কোনও সরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা শুধুমাত্র সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়েই উত্তোলিত অবস্থায় থাকার কথা। সূর্যাস্ত হয়ে গেলে জাতীয় পতাকা নামিয়ে নেওয়াই বিধিসম্মত।
দেবপম চক্রবর্তী কোন্নগর, হুগলি
দুই অঞ্চল
হাওড়া জেলার বালি অঞ্চল বরাবরই দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। একটি অংশ এখন হাওড়া পুরসভার অধীনে। আগে বালি মিউনিসিপ্যালিটি ছিল। আর একটি অঞ্চল পঞ্চায়েত হয়ে রয়েছে। আগে লোকসভা ছিল হাওড়া সদর, বর্তমানে পঞ্চায়েত অঞ্চল শ্রীরামপুর লোকসভায় যুক্ত হয়েছে। বহু বছর ধরে শুনে আসছি, পঞ্চায়েত অঞ্চল পুরসভা অথবা হাওড়া পুরসভার অধীনে সংযুক্ত করা হবে।
এই অঞ্চল জুড়ে অসংখ্য লোকবসতি গড়ে উঠেছে, এ ছাড়াও অজস্র ফ্ল্যাট তৈরি করা হচ্ছে দিনের পর দিন। এখানে স্থায়ী কোনও দমকলের ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। কোনও কলেজ নেই। নর্দমা তৈরি হলেও, নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। বিস্তীর্ণ অঞ্চল ব্লক হাসপাতালের ওপর নির্ভর করে থাকে। এখনও জমি বাড়ির পরচা অনলাইন দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে, কিন্তু সেই ভাবে রাস্তা চওড়া করা হয়নি। এলাকার অনেক পুকুর বা ডোবার অস্তিত্ব পুরোপুরি হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ বালির অন্য প্রান্তে এত সমস্যা নেই।
অভিজিৎ দাস, বালি, হাওড়া
স্কুল ও বদলি
আমি প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি সরকারি স্কুলে ইংরেজি পড়াই। দীর্ঘ ১৪ বছর দমদম থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে নিত্য যাতায়াত। এই এত পথ পেরিয়ে যে স্কুলে পৌঁছই, তা আজও পরিকাঠামোহীন। দুটো ক্লাসরুম, সেখানে চলে চারটে ক্লাস (পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম)। নেই শৌচালয়, পানীয় জল, বিদ্যুতের বন্দোবস্ত। সুতরাং কিছু ক্ষেত্রে নির্ভর করতে হয় সামনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওপর। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বহু বার স্মারকলিপি বা মৌখিক ভাবে জানিয়েও অবস্থার কোনও সুরাহা হয়নি। এই ভয়ঙ্কর গরমে হাতপাখা সঙ্গী করে আমরা ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞান বিতরণ করি।
এ অবস্থায় চাকরি করে এখন আমি রীতিমতো অসুস্থ। আর ভাগ্যের কী অদ্ভুত পরিহাস, বদলির জন্য দরখাস্ত করতে গেলে এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) পাওয়া যায় না, আপস বদলি তো দূরস্থান, নতুন করে পরীক্ষায় বসারও আর উপায় নেই, কারণ আমি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কেলে নিযুক্ত।
প্রগতি ভট্টাচার্য, মিনাখা, উত্তর ২৪ পরগনা
হাসপাতাল পাড়া
৬০নং জাতীয় সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। এতে এখানকার মানুষের চিকিৎসার খুব ভাল বন্দোবস্ত হয়েছে। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজের পয়ঃপ্রণালী ও
পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনিক করতে হবে। এখন এগুলির অবস্থা এতই খারাপ যে একটু বৃষ্টি হলেই নৌকা চলাচলের অবস্থা হয়। ৬০নং জাতীয় সড়কের দু’পাশে নালা-নর্দমায় ভেসে আসে নানা আবর্জনার স্তূপ।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় গেটের বিপরীত দিকে নতুন হাসপাতাল পাড়া, যেখানে বাস করেন হাসপাতালের ডাক্তার-সহ নানা কর্মী ও সেবিকা। এখানেও পুরোপুরি পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা আধুনিক করতে হবে। নতুন হাসপাতাল পাড়ায় পানীয় জলের ভাল ব্যবস্থাও নেই।
গৌর গোপাল সরকার, রামপুরহাট, বীরভূম
থানা দূরে
উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সীমান্তবর্তী সুটিয়া পঞ্চায়েত-সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের গ্রামগুলি গাইঘাটা থানার অন্তর্ভুক্ত। সুটিয়া পঞ্চায়েতের প্রান্তীয় গ্রামগুলি থেকে গাইঘাটা থানার দূরত্ব কমবেশি ২২ থেকে ২৫ কিমি। এত দূরে থানার অবস্থান হওয়ায়, কোনও কিছু ঘটলে, পুলিশের ঘটনাস্থলে পৌঁছতে অনেক সময় লেগে যায়। এ ছাড়াও সর্বদা
এত দূরবর্তী এলাকাগুলিতে নজরদারি চালানোও পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। এলাকার মানুষকে বিভিন্ন কাজে থানায় যাওয়ার জন্য অনেকটা সময় ও পয়সা ব্যয় করতে হয়।
এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি, সুটিয়া পঞ্চায়েত-সহ আশপাশের বেশ কিছু পঞ্চায়েত নিয়ে একটি আলাদা থানা গড়ে উঠুক। এ জন্য সুটিয়াতে অবস্থিত গ্রামীণ পুলিশ ফাঁড়িটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকাঠামোর পুলিশ থানাতে পরিণত করা হোক।
জ্যোতি প্রকাশ ঘোষ, বেড়ি পাঁচপোতা, উত্তর ২৪ পরগনা