Indian Railways

সম্পাদক সমীপেষু: যাত্রী-স্বার্থ জলাঞ্জলি

পূর্ব রেল, দক্ষিণ-পূর্ব রেল, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল’সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চালাকি করে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২২ ০৪:৩৮
Share:

আমজনতার প্রধান পরিবহণ মাধ্যম রেলকে ঘিরে যে সব পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ, অবিলম্বে তা বন্ধ হোক। এই পরীক্ষার বলি হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। এই পরীক্ষার সর্বশেষ সংযোজনটি হল পূর্ব রেলের কয়েকটি মেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে সময়সূচি এবং স্টপ অপরিবর্তিত রেখে হঠাৎ এক্সপ্রেস তকমা লাগিয়ে দেওয়া। পূর্ব রেল, দক্ষিণ-পূর্ব রেল, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল’সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ ভাবেই চালাকি করে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রেল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে। অথচ, এখনও প্রবীণদের জন্য ছাড়-সহ বিভিন্ন ধরনের ছাড় বন্ধ রয়েছে। সেগুলো ফেরানোর কোনও উদ্যোগও করা হয়নি। রানিং স্টাফের অভাবের অজুহাতে প্রচুর লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকছে, অথচ ‘সামার স্পেশাল’ ট্রেনগুলো চালাতে কিন্তু রেলের কর্মীর অভাব হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, এই সব সামার-স্পেশাল, পুজো-স্পেশাল, হোলি স্পেশাল ট্রেনের ভাড়া সাধারণ মেল, এক্সপ্রেস, সুপারফাস্ট ট্রেনের থেকে অনেকটাই বেশি। বিভিন্ন লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকার ফলে চালু থাকা ট্রেনগুলোয় অসম্ভব ভিড় হচ্ছে। আশ্চর্য ভাবে, ঘুরপথে এই ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে জনপ্রতিনিধিরাও চুপ। পেট্রোপণ্যের দাম নিয়ে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক চললেও রেলের ঘুরপথে ভাড়া বৃদ্ধি, ছাড় বন্ধ ইত্যাদি নিয়ে কারও কোনও বক্তব্য চোখে পড়ছে না।

Advertisement

আবার, রেল আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রীদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করে রেখেছে। মজার বিষয়। সেই সব কমিটিতে সাধারণ যাত্রীদের মতামত প্রতিফলিত হয় না। কারণ, ওই কমিটিগুলোতে যাত্রী সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রায় কেউই থাকার সুযোগ পান না। বদলে, সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী কিংবা সরকার মনোনীত কিছু ব্যক্তিকে সেখানে স্থান দেওয়া হয়, যাঁদের বেশির ভাগই রেলযাত্রী নন। রেলের এই সব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সর্বস্তরে প্রতিবাদ প্রয়োজন। সাধারণ মানুষের থেকে রেল যদি নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয়, সেটা শুধুমাত্র যাত্রী কিংবা রেলের ক্ষতি নয়, সার্বিক ভাবে সমাজ এবং দেশেরও ক্ষতি।

প্রীতম ভৌমিক

Advertisement

কালীনারায়ণপুর, নদিয়া

চাকরি কই

অন্য সংরক্ষিত প্রার্থীদের থেকেও সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার পান ‘ল্যান্ড লুজ়ার’ ক্যাটেগরির অন্তর্ভুক্ত বেকার ছেলেমেয়েরা। ল্যান্ড লুজ়ার হলেন তাঁরা, যাঁদের কাছ থেকে সরকার তার কাজের জন্য জমি নিয়ে থাকে। নোটিস অনুযায়ী যতটুকু জমি নেওয়ার কথা ছিল, তার থেকে অনেক বেশি জমি দখল করেছে রাজ্য সরকার। নীতি অনুসারে, এ ক্ষেত্রে পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা থাকলেও, তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। কলকাতার বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের ডায়রেক্টরেট অব এমপ্লয়মেন্ট অফিস থেকে ‘একজ়েম্পটেড ক্যাটেগরি’ (ইসি) কার্ড দেওয়া হয় এই জমিহীনদের।

কিন্তু এইটুকুতেই শেষ। ওই অফিসে বছরের পর বছর জমে থাকছে অসংখ্য বেকারের ইসি কার্ড। চাকরি না পেয়ে প্রতি বছর কত যে বেকারের চাকরির বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে, সে খবর রাখছে না কোনও সরকার। সমস্ত নিয়োগের ক্ষেত্রেই দুর্নীতি চোখে পড়ছে। এমপ্লয়মেন্ট অফিস থেকে ঠিকমতো পরীক্ষার কল দেওয়া হয় না। যদিও কল দেওয়া হয়, সেই পরীক্ষার পর ফল বেরোতে বছরের পর বছর লেগে যায়। ২০১৬-১৭ সালে একটি কল পেয়ে তার পরীক্ষা দিই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রেজ়াল্ট বেরোয়নি। আমাদের মতো ইসি ক্যাটগরির জন্য একটা-দুটো করে সিট রাখা হয় নিয়োগের ক্ষেত্রে। পরীক্ষার আবেদন করতে ৫০০-৬০০ টাকা লাগে। আমাদের মতো বেকারদের কাছে এত টাকা দিয়ে চাকরির আবেদন করাও খুব কঠিন। তাই প্রশাসনের কাছে একান্ত অনুরোধ, ইসিদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হোক।

অনিমেষ বন্দ্যোপাধ্যায়, নদিয়া

অপচয়

নিউ টাউনে যে ভাবে বিদ্যুৎ ও জলের অপচয় হচ্ছে, তা জানাতেই এই চিঠির অবতারণা। এলাকায় রাস্তার আলোগুলো এই প্রখর গ্রীষ্মেও বিকেল পাঁচটায় জ্বেলে দেওয়া হয়। সেগুলি সন্ধে ছ’টা বা সাড়ে ছ’টায় জ্বালালে বিদ্যুতের বেশ কিছুটা সাশ্রয় হত। তা ছাড়া রাস্তার পাশে যে সমস্ত আবাসনের নির্মাণকার্য হচ্ছে এবং যে সব আবাসনে কেয়ারটেকার পরিবার-সহ বাস করেন, সেখানে বড় পাইপের মাধ্যমে নির্দ্বিধায় জল নষ্ট করা হয়। প্রতি দিন সকালে প্ৰাতঃভ্ৰমণের সময় এঁদের সতর্ক এবং জল অপচয়ের বিপদ সম্বন্ধে অবহিত করা সত্ত্বেও এ কাজ থেকে তাঁরা বিরত থাকেন না। এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রতাপ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-১৫৬

টাকা দিতে রাজি

প্রথম সারির এক সরকারি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্ত্রী-র (বর্তমানে প্রয়াত) চিকিৎসার জন্য যাতায়াত করতে হয়েছিল। সেখানে প্রথমে চিকিৎসার জন্য দু’টাকা মূল্যের ওপিডি পেশেন্ট কার্ড করাতে হয়। পরবর্তী কালে ওই কার্ডে যত ক্ষণ লেখার জায়গা থাকবে, তত ক্ষণ ওই টাকাতেই চিকিৎসা করা যায়। কার্ডে লেখার জায়গা না থাকলে আবার টাকা দিয়ে নতুন কার্ড করাতে হয়। অর্থাৎ, দু’টাকা দিয়ে পাঁচ থেকে সাত বার ডাক্তার দেখাতে পারা যায়। এ ছাড়া, হাসপাতালে বিনা পয়সায় ওষুধ দেওয়ারও ব্যবস্থা আছে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওষুধ পাওয়া যায় না। দীর্ঘ দিন যাতায়াত করে বিভিন্ন রোগী ও পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি, তাঁরা এই চিকিৎসাব্যবস্থার পরিবর্তন চান। বিভিন্ন ধরনের সাধারণ ও ব্যয়বহুল পরীক্ষানিরীক্ষা বিনামূল্যে হাসপাতালে হয়ে থাকে। যে হেতু সঙ্গত কারণে এই সব পরীক্ষা হাসপাতালে তাড়াতাড়ি করা সম্ভব হয় না, তাই অনেকেই বাইরের পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে এগুলি করিয়ে নেন। বোঝাই যাচ্ছে, দু’টাকার বেশি অর্থ দেওয়ার ক্ষমতা মানুষের আছে। অনেকেই যখন বেশি টাকা দিতে রাজি, তখন সুচিকিৎসার স্বার্থে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে ওই কার্ডের পুনর্বিন্যাস করা উচিত।

এ প্রসঙ্গে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডের বিষয়েও কিছু বলতে চাই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলো বেড-এর অপ্রতুলতার মিথ্যা অজুহাতে রোগী ফিরিয়ে দিচ্ছে। এই কার্ডে বছরে এক হাজার টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে যদি পাঁচ লক্ষ টাকার সুনিশ্চিত চিকিৎসা পাওয়া যায়, তবে আশা করা যায় কার্ড প্রাপকদের অনেকেই সানন্দে এক হাজার টাকা দিতে রাজি হবেন।

অশোক রায়, কলকাতা-১৫৯

বিকল্প ব্যবস্থা

লাইন পারাপারের সময় দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য বিভিন্ন স্টেশনে এখন ভূ-গর্ভস্থ পথের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে তা সাধু উদ্যোগ। কিন্তু সরাসরি রেললাইন পারাপারের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় কিছু মানুষকে যে চরম অসুবিধার শিকার হতে হচ্ছে, তা নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা দেখি না। পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে কিংবা বয়সের ভারে ঝুঁকে পড়া বহু মানুষ অতগুলো সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠতে নাজেহাল হন। এঁদের কি স্টেশনে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না? শুধু ট্রেন নয়, লাইনের এ-পার থেকে ও-পারে যেতেও তো সেই সিঁড়িই ভাঙতে হবে।

ভূগর্ভস্থ পথ বানানো সত্ত্বেও কিছু মানুষ ঝুঁকি নিয়ে প্ল্যাটফর্ম টপকে লাইন পারাপার করে থাকেন। এই মানুষদের স্বভাব রাতারাতি বদলানোর নয়। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভূগর্ভস্থ সিঁড়ি ছাড়াও লাইন পারাপারের জন্য রেল কিছু বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবলে কিছু মানুষের উপকার হয়।

জয়ী চৌধুরী, সোদপুর, উত্তর ২৪ পরগনা

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement