টিকিট কাটাক লাইন। নিজস্ব চিত্র।
‘যাত্রার ৬০ দিন আগে মিলবে রেলের টিকিট’ (১৮-১০) সংবাদটি পড়লাম। যাত্রার ১২০ দিন আগে টিকিট দেওয়ার পরিবর্তে ১ নভেম্বর থেকে তা দেওয়া হচ্ছে ৬০ দিন আগে থেকে। রেলের টিকিটের কালোবাজারি বন্ধ করতে রেল কর্তৃপক্ষের এটি একটি সদর্থক পদক্ষেপ বলে মনে হয়। আশা করা যায়, রেল কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছতা বজায় রেখে এই নিয়ম কার্যক্রম করলে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে, কালোবাজারিও বন্ধ হবে। কিন্তু যদি সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে থাকে, তা হলে টিকিট দুর্নীতি রোধ করা যাবে কি? পূর্ব অভিজ্ঞতায় দেখেছি, টিকিট কাউন্টারের সামনে আগের দিন রাত থেকে দাঁড়িয়ে থাকেন কয়েক জন দালাল। এমনকি কাউন্টারের সামনে নিজেদের নামের লিস্টও টাঙিয়ে দেন তাঁরা। তাঁরাই সকালে সবার আগে দাঁড়াবেন এবং টিকিট দেওয়া শুরু হলে সব টিকিট কেটে নেবেন। সাধারণ যাঁরা লাইনের পিছনে থাকেন, তাঁরা কাউন্টারের সামনে আসার আগেই টিকিট শেষ হয়ে যায়। জিআরপি-র সামনেই দালাল চক্র এই অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর। তাই, সর্ষের মধ্যের এই ভূত না তাড়ালে নতুন পদক্ষেপ করেও লাভ হবে না। রেলের কিছু অসাধু কর্মী এই প্রক্রিয়ায় জড়িত না থাকলে টিকিটের কালোবাজারি সম্ভব হত না। দালালরা ন্যায্য দামের তুলনায় দুই-তিনগুণ বেশি দামে টিকিট বিক্রি করেন। আর এই রেলকর্মীরা সব দেখেও না দেখার ভান করেন মোটা রোজগারের আশায়।
অনলাইনে টিকিট কাটতে গিয়েও একই অভিজ্ঞতা। কাউন্টার খোলার সঙ্গে সঙ্গে টিকিট শেষ। তাই ৬০ দিন আগে টিকিট দেওয়ার ফলে টিকিটের কালোবাজারি বন্ধ হবে কি না, সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। তবে এক জনের নামে কাটা টিকিট যাতে কোনও ভাবেই অন্যকে হস্তান্তর করা না যায়, তার জন্য টিকিটে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ছবি ও আধার নম্বর দেওয়া যায় কি না, ভেবে দেখুক রেল কর্তৃপক্ষ। এক জনের টিকিট অন্য জন নিয়ে যাত্রা করলে এক বছরের কারাবাসের বিধান দেওয়া হোক।
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল, কোন্নগর, হুগলি
ওদের কষ্ট
শুক্লা সেনগুপ্তের ‘শব্দদানব’ (২১-১০) শীর্ষক চিঠিতে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ এবং অতিরিক্ত আলোর রোশনাইয়ের সমস্যার উপর আলোকপাত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, শব্দদূষণের সমস্যা শুধু আমাদেরই বিব্রত করে না, বাড়ির পোষ্যরাও এর বিশেষ ভুক্তভোগী। আমার মতো যাঁদের পোষ্য রয়েছে তাঁদের মহালয়া থেকেই আতঙ্কে কাটাতে হয়। কালীপুজো বা ছট এলে শব্দদানবের দাপটে বেচারা প্রাণীগুলি কখনও খাটের নীচে, কখনও সোফার তলায়, কখনও ড্রয়িং রুমে ছোটাছুটি করে। কোনও ভাবেই তাদের আশ্বস্ত করা যায় না। ঘরের ভিতরেই যখন এই দশা, তখন বাইরের প্রাণীগুলির কী হাল হয়, তা সহজেই অনুমেয়। সেই সঙ্গে বাড়ির শিশু-বৃদ্ধ-অসুস্থ মানুষজন তো আছেই।
উৎসবের মরসুমে শব্দদানবের অত্যাচার শুরু হলে প্রতি বছরের মতো কাগজে টিভিতে প্রচুর আলোচনা-লেখালিখি হয়। তার পর আবার সব ধামাচাপা পড়ে যায়। এই জুলুম যে আর কত দিন সহ্য করতে হবে, কে জানে।
উজ্জ্বল কুমার, কলকাতা-১৫৭
গ্রাহকের সুবিধা
কিছু দিন আগে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চৌরঙ্গি শাখায় ডেবিট কার্ড দিয়ে বেতনের টাকা তুলতে গিয়ে, অপ্রত্যাশিত এক ঘটনার সম্মুখীন হই। কার্ডে টাকা তোলার নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর কাউন্টারে বসা মহিলাকর্মী জানালেন যে, আমার মোবাইলে ওটিপি আসবে। যদিও আগে ওটিপি আসার বিষয়টি প্রযুক্ত ছিল না। যা-ই হোক, কার্ড রিডারে ওটিপি দেওয়ার পর ওই ব্যাঙ্ককর্মী আমায় জানালেন ‘নন কমপ্লায়েন্স অব কেওয়াইসি’-র কারণে আমার অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও প্রকার লেনদেন করা সম্ভব নয়। আমি যেন আমার ‘হোম ব্রাঞ্চ’-এ গিয়ে কেওয়াইসি জমা করে আসি। ব্যাঙ্ক থেকে প্রতিনিয়ত বিবিধ বিষয়ে এসএমএস এবং ইমেল বার্তা পেলেও, কেওয়াইসি আপডেটের কোনও নির্দেশ এখনও পর্যন্ত আমি পাইনি। এর পর অফিসে ফিরে আমি আমার ওই অ্যাকাউন্ট থেকে নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে আমার অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে একাধিক বার সঠিক ভাবে টাকা পাঠাতে সফল হই। পরে রাতে স্থানীয় এটিএম কাউন্টার থেকেও ওই ডেবিট কার্ড দিয়ে নগদ টাকা তুলতে পারি। পর দিন সকালে ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা প্রতিনিধির সঙ্গে ফোনালাপে জানতে পারি, আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনও সীমাবদ্ধতা আরোপ করা নেই এবং সার্বিক ভাবে সেটা সক্রিয় আছে।
এখানে প্রশ্ন হল, গ্রাহককে বিভ্রান্ত করে এ ভাবে হয়রান করার দায় কার? নিজের বেতনের টাকা তুলতে গিয়ে অনেক সময়ই ব্যাঙ্ককর্মীর বিবিধ প্রশ্নবাণের সম্মুখীন হতে হয়— ‘আমিই অমুক কি না’, ‘চেকের স্বাক্ষর আমারই কি না’ ইত্যাদি। বছর দুয়েক আগে এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেরই জীবনদীপ শাখার ক্যাশ কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা এক কর্মীর অশোভন আচরণের কারণে আমি অভিযোগ জানাই। তার ভিত্তিতে কাস্টমার কেয়ার-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ফোনে বিষয়টি সম্পর্কে দুঃখপ্রকাশ করেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করেন। ব্যাঙ্কের পরিকাঠামো ঝাঁ চকচকে বাতানুকূল কর্পোরেট অফিসের আদলে উন্নীত করার চেয়েও বেশি জরুরি গ্রাহক পরিষেবার মান উন্নয়নে নজর দেওয়া। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে উদ্যোগী হবেন আশা করি।
অরিন্দম দাস হরিপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
দেরি কেন?
গত মার্চে আমার বাবার বর্ধিত পেনশন সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র জমা পড়ে এ জি বেঙ্গলে। ওখান থেকে ছাড়পত্র পেলে তবেই পাওয়া যাবে বর্ধিত পেনশন। মে মাসে পি আর এ জি (এ অ্যান্ড ই) ডব্লিউ বি থেকে বাবার মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। তাতে বলা হয়, আপনার পেনশনের কেসটি ‘প্রোসেসিং’-এ আছে। তার পর, কেটে যায় ছ’মাস। কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এ জি বেঙ্গলের অনুসন্ধান অফিসে ফোন করে জানতে পারি, এপ্রিলেই কাজটি হয়ে গিয়েছে। চিঠি চলে গিয়েছে ডেসপ্যাচে। অফিসার আরও জানান, চিঠি না পৌঁছলে ওঁকে যেন ফোন করি। যথারীতি চিঠি না পেয়ে ফোন করে জানতে পারি, পেনশন কেসটিতে কিছু ত্রুটি আছে। সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে ফেরত পাঠানো হবে। এই বিষয়ে কোনও চিঠি যদি না পাই, তা হলে দশ দিন পরে আবার ফোন করতে হবে।
তত দিনে শারদ-উৎসবের আবহে গোটা রাজ্যের অফিস বন্ধ। তাই পুজোর পর পরই আবার এ জি বেঙ্গলে ফোন করলে অনুসন্ধান অফিস থেকে কোনও সদুত্তর পাইনি। কোনও ভাবে এক বার ওই আধিকারিকের সঙ্গে কথা হলেও তিনি ঠিকমতো কিছু বলতে পারেননি। আমার প্রশ্ন, অবসরপ্রাপ্ত এক জন কর্মচারীর বর্ধিত পেনশন আর কত দিন আটকে থাকবে? বয়সের ভারে যাঁরা আজ নানা সমস্যার শিকার, তাঁদের প্রতি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার কি আরও একটু উদার হতে পারে না?
সুতপা পাল মগরা, হুগলি
উচিত শিক্ষা
‘জরিমানায় আয়’ (২-১১) খবরটি পড়ে আনন্দিত হলাম। স্টেশন চত্বরে থুতু ফেলার জরিমানা বাবদ শুধু অক্টোবর মাসে ১৫ লাখ টাকার বেশি আয় করেছে পূর্ব রেল। রাজ্য সরকার যদি শুধু কলকাতা, হাওড়াতে এটি চালু করে, তা হলে মাসে কয়েক কোটি আয় নিশ্চিত। পরে অন্যান্য জায়গাতেও এটি চালু করলে সরকারের ‘স্বাস্থ্যসাথী’-র খরচটা এই আয় থেকেই হয়ে যাবে, রাজ্যটাও পরিষ্কার থাকবে।
অসিত মণ্ডল, হাওড়া