Poush Mela

সম্পাদক সমীপেষু: ফিরুক মেলা

পৌষ মেলা বন্ধ থাকবে কেন? মেলা যেমন সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের পীঠস্থান, তেমনই এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অসীম।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৫০
Share:

‘পৌষ মেলার জন্য চিঠি’ (২৩-১১) শীর্ষক সংবাদ প্রসঙ্গে এই চিঠি। পৌষ মেলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে শান্তিনিকেতন, শ্রীনিকেতন, কবির স্বপ্নের বিশ্বভারতী। আর স্মৃতির দুয়ারে ভেসে ওঠে ভুবনডাঙার মাঠ, পূর্বপল্লির মাঠ। এই মেলা এখন শুধু বীরভূম বা বোলপুরবাসীর নয়, দেশ-কালের সীমানা পেরিয়ে এ এখন আন্তর্জাতিক। একে বলা হয় বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীদের মিলনমেলা, যাঁরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন। দেশ-বিদেশের কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীরা দিন গোনেন। এটি বাউল-ফকিরদের মিলনমেলাও বটে। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর সঠিক সময় নির্বাচন করেছিলেন। ৭ পৌষ, মানে ডিসেম্বরের শেষে বাতাসে থাকে শীতের আমেজ। আগে ভুবনডাঙার মাঠে তিন দিনের ছোট্ট মেলা হত। ধীরে ধীরে মেলার আয়তন, দিনের সংখ্যা অনেক গুণ বেড়েছে। এখন মেলা বসে পূর্বপল্লির মাঠে আর এক মাসের আগে মেলা ভাঙেই না।

Advertisement

১৮৯৪ থেকে ধারাবাহিক ভাবে আয়োজিত পৌষমেলা দীর্ঘ ১২৭ বছরের ইতিহাসে তিন বার বন্ধ থেকেছে। ১৯৪৩ সালে মন্বন্তরের কারণে, ১৯৪৬-এ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে এবং ২০২০ সালে করোনার কারণে মেলা আয়োজন সম্ভব হয়নি। ২০১৯-এ কোভিড পরিস্থিতির জন্য অত্যন্ত ছোট করে অল্প দিনের জন্য পৌষ মেলা হয়েছিল। কোভিড বিধি মেনে সমস্ত পরিবহণ চলছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে, বইমেলার দিন ঘোষণা করা হয়েছে। তা হলে পৌষ মেলা বন্ধ থাকবে কেন? মেলা যেমন সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের পীঠস্থান, তেমনই এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অসীম। বোলপুরের বহু মানুষের সারা বছরের আয় হয় এই মেলা থেকে। কোভিড বিধিকে মান্যতা দিয়ে এ বছর এই মেলা হোক।

গৌতম পতি

Advertisement

তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর

নারীর সম্মান

কিছু দিন আগে আমার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নেমন্তন্ন ছিল, তাঁর পুত্রবধূর সাধের অনুষ্ঠান। হবু মাকে নিয়ে নানা ধরনের স্ত্রী আচার করানো হচ্ছে। এর পর এল আশীর্বাদের পালা। উপস্থিত মহিলাদের অনেকের সঙ্গে আমিও আশীর্বাদ করলাম। কিন্তু আর এক বধূ, সম্পর্কে আমার জা, যেই ধান-দূর্বা নিয়ে আসন্নপ্রসবার মাথায় ঠেকাতে যাবে, ঠিক সেই সময়ই এক জন বয়স্ক ভদ্রমহিলা বলে উঠলেন, “এই আর দরকার নেই; অনেক তো হল। বৌমা অনেক ক্ষণ বসে আছে। এ বার ওকে ভিতরে নিয়ে যাও।” তিনি আশীর্বাদের থালাটা হাত থেকে কেড়ে নিলেন। পরে কারণটা জানতে পারলাম। আমার সেই জায়ের যে হেতু তিন বছর হল বিয়ে হয়েছে অথচ কোনও সন্তান হয়নি, তাই তাকে এই শুভ অনুষ্ঠান থেকে বিরত করা হল।

এমনই চিন্তাধারা আমাদের সমাজের। আমরাই আবার বড়াই করে বলি আমরা কত উদার, কত আধুনিক। মা না-হওয়ার পিছনে তো নানা কারণ থাকতে পারে। হয়তো ওরা স্বামী-স্ত্রী এখনও সন্তান নেওয়ার কথা ভাবেনি। বা হয়তো মেয়েটির স্বামীর শরীরে কোনও অসুবিধা আছে। অথচ, বাড়ির ছেলের কোনও দোষত্রুটি না দেখে, বৌকেই নানা কথা শুনিয়ে শুভ অনুষ্ঠান থেকে তাকে বয়কট করে দেওয়া হল। এক নারী হয়ে আর এক নারীর পাশে না দাঁড়িয়ে, তাকে অপমান করতে আমরা যেন সিদ্ধহস্ত। অথচ, কেবল নারী হয়ে জন্মানোর জন্যই তো গর্বিত হয়ে আমরা বাঁচতে পারি।

পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় চক্রবর্তী

শিলিগুড়ি

সহায়তার দায়

মাঝে মাঝেই আমরা পড়ি বা খবরে শুনি যে, পথে কোনও মানুষ দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পড়ে আছেন দীর্ঘ ক্ষণ ধরে, কিন্তু তাঁকে উদ্ধার করতে কেউ এগিয়ে আসছেন না। উপরন্তু, এই সময়ের রীতি অনুযায়ী, মোবাইলে সেই ঘটনার ছবি তোলা হচ্ছে আর পাঠানো হচ্ছে, কিন্তু মানুষটির চিকিৎসা পাওয়ার ব্যাপারে কেউ উদ্যোগী হচ্ছেন না। এমন অমানবিক আচরণ দেখে যারপরনাই নিন্দা করি। কিন্তু এই ‘মুখ ঘুরিয়ে থাকা’ মনোভাবের পিছনে আসল কারণটাও জানা যায়। অধিকাংশ মানুষ দূরে সরে থাকেন এই ভেবে যে, পরে পুলিশের একগাদা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। হয়তো বা নিজের কাজকর্ম বন্ধ করে, কোর্টেও হাজিরা দিতে হবে। কে যেচে এই সব ঝামেলা নিজের ঘাড়ে নিতে চান? সাহায্য করতে হয়তো অনেক মানুষই চান, কিন্তু তার পরে এই সব ঝামেলার ভয়ে আর এগোতে চান না। তাই আবেদন রাখতে চাই যে, উদ্ধারকারীদের যাতে পরবর্তী কালে অহেতুক ঝামেলায় পড়তে না হয়, সেই ব্যাপারে সরকার যেন এক উপযুক্ত আদেশনামা জারি করে। তা হলে রাস্তায় পড়ে থাকা অনেক আহত মানুষের বিশেষ উপকার হবে।

সন্দীপ চক্রবর্তী

মকদুমপুর, মালদহ

শিশুর স্থান

2 ‘সন্তান কোলে হাউসে নয়, চিঠি এমপিকে’ (২৫-১১) শীর্ষক খবরের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি। ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি স্টেলা ক্রিসি তাঁর তিন মাসের শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বিতর্ক সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন। ছোট্ট শিশুটি এখন শুধু মায়ের দুধ খায়। সে দিনের বিতর্ক সভায় শিশুটি পুরো সময়টাই ঘুমিয়ে কাটায়। তবু দিনের শেষে কর্তৃপক্ষ স্টেলাকে ভবিষ্যতে শিশু সন্তানকে নিয়ে হাউস অব কমন্সের বৈঠকে না-আসার জন্য ইমেল করেন।

স্টেলা জানিয়েছেন, এর আগেও তিনি সন্তানকে নিয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। এই প্রথম তাঁকে নিয়ম ভাঙার অভিযোগের মুখে পড়তে হল। ২০১৮ সালে প্রাক্তন ডেমোক্র্যাট এমপি জো সুইনসো দুধের শিশুকে নিয়ে হাউসের বিতর্ক সভায় যোগ দিয়েছিলেন। ছেলেকে নিয়ে হাউসের কাজে তাঁকে নিরুদ্বেগে যোগ দিতে বলেছিলেন স্পিকার হয়েল। প্রয়োজনে হাউসেই শিশুকে দুধ খাওয়ানোর অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল। তিন বছর পর হাউসের প্রেক্ষাপট কী এমন বদলে গেল যে, শিশু সন্তান-সহ কর্মরত মায়েরা পার্লামেন্টে আর আসতে পারবেন না! তা হলে ধরেই নেওয়া যায়, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট মায়েদের কথা আর
শুনতে চায় না, মায়েদের আর দেখতে চায় না।

উন্নত দেশ, উন্নয়নশীল দেশকে পথ দেখাবে, এমনই মনে করা হয়। কিন্তু বাস্তবে আমরা এ কী দেখছি? মায়েদের আরও বেশি করে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক দিন ধরেই অনলাইনে প্রচার চালিয়ে আসছেন স্টেলা ক্রিসি। নেট দুনিয়ায় স্টেলা ক্রিসির ক্রমাগত প্রশংসাই জুটছে, বরং যাঁরা তাঁকে আসতে নিষেধ করেছেন তাঁরাই সমালোচনার ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়েছেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হাউসের এই ধরনের ফতোয়ার নিন্দা করি।

শুভ্রা অধিকারী

বুঁইচা, নদিয়া

একটিই ছবি

2 সাল ১৯৬৬। পরিচালক তপন সিংহ এক জন নতুন অভিনেতাকে মুখ্য চরিত্রে নিয়ে বানালেন গল্প হলেও সত্যি। রিলিজ় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ছবি হিট। সে দিনের নতুন মুখ রবি ঘোষের পায়ের তলায় বাংলা সিনেমার জগতের মাটি শক্ত হতে শুরু হল।

গল্পটি হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের বেশ মনে ধরেছিল। তিনি পাঁচ বছর বাদে সেই গল্পটির স্বত্ব কিনে নিয়ে বানালেন হিন্দি ছবি, নাম বাবর্চি। মুখ্য চরিত্রে নিলেন রাজেশ খন্না ও জয়া ভাদুড়িকে। বাবর্চি ছবির প্রায় সব ক’টি চরিত্রই বেশ বলিষ্ঠ ছিল, তাই হৃষীকেশবাবুও ছবিতে হরিন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, এ কে হাঙ্গল, দুর্গা খোটে, ঊষা কিরণ, আসরানির মতো অভিনেতা ছাড়াও সই করান এই বাংলার কালী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এইটিই ছিল কালী বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম ও একমাত্র হিন্দি ছবি। এর পরে তিনি আর কোনও হিন্দি ছবি করেননি। করলে হয়তো তাঁরও উৎপল দত্তের মতো হিন্দি ছবির জগতে বেশ নামডাক হত। সম্ভবত তাঁর বাংলার টানে হিন্দি বলার কারণেই হিন্দি ছবিতে তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেননি।

অভিজিৎ রায়

জামশেদপুর

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement