স্বাস্থ্যসাথী পশ্চিমবঙ্গের বহু- আলোচিত প্রকল্প। সম্প্রতি মানসিক ভাবে অসুস্থ এক ভদ্রমহিলাকে আমরা হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করতে গিয়ে জানতে পারি, সরকার মানসিক রোগকে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনেনি। ভর্তি না হলে ভদ্রমহিলার খুব অসুবিধা হবে বুঝতে পেরে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও সহৃদয় চিকিৎসক তাঁকে অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। তাঁর যে হেতু আরও কিছু শারীরিক রোগ ছিল, তাই এটা সম্ভব হয়েছিল। একই সঙ্গে তাঁর মনোরোগের চিকিৎসাও তাঁরা করতে পারবেন বলে জানান। শুধুমাত্র মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ড কোনও কাজে লাগে না। অথচ, এই অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হলে যদি এই কার্ড সহায়ক হয়, তবে বহু মানুষ উপকৃত হবেন।
এই অভিজ্ঞতার পর প্রকল্পের নিয়মাবলি পড়তে গিয়ে জানা গেল, পরিবারের শারীরিক প্রতিবন্ধী সদস্যদের অসুস্থতার জন্য এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যায়। তার মানে কি বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধী সদস্যরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন? অথচ, অটিজ়ম, ডাউন সিনড্রোম বা অন্য ধরনের মানসিক প্রতিবন্ধীরা নানা রকমের শারীরিক অসুস্থতার সম্মুখীন হন। এই প্রকল্পটি সেই হিসেবে দেশের ‘মেন্টাল হেলথ কেয়ার অ্যাক্ট’ এবং ‘রাইটস অব পার্সনস উইথ ডিসেবিলিটিজ় অ্যাক্ট’-এর বিপরীত কথা বলছে। ফলে, কয়েক ধরনের প্রতিবন্ধী এর সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই প্রকল্পের নিয়মাবলির পরিবর্তন করা হোক।
শম্পা সেনগুপ্ত
আধিকারিক, শ্রুতি ডিসেবিলিটি রাইটস সেন্টার
নম্বরের ন্যায্যতা
মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল বিষয়ক দু’টি প্রতিবেদনের সূত্রে এই চিঠি। এর প্রথমটিতে (‘একশোয় একশো পাশ মাধ্যমিকে’, ২১-৭) স্বয়ং পর্ষদ সভাপতির বক্তব্যের ভিত্তিতে জানা গেল যে, ১৮ জন পড়ুয়া ৭০০-র মধ্যে ৭০০-ই পেয়ে যাচ্ছিল। পরে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির নবম শ্রেণির পাঠানো নম্বরে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এই ধরনের বেশ কিছু স্কুলের পড়ুয়ার নবম শ্রেণির নম্বর নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলেও পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছিল। অর্থাৎ, শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে রিপোর্ট পাঠায় ওই স্কুলগুলি। যারা ৭০০-র মধ্যে ৭০০ পেয়ে যাচ্ছিল, তাদের নম্বর নয় কিছু কমানো হয়েছে, কিন্তু যারা অত নম্বর পায়নি? স্কুল নিশ্চয়ই সকলের বা অনেকেরই নম্বর বাড়িয়ে দিয়েছিল। ৭০০ না পাওয়ায় ওই পড়ুয়াদের বেশি পাওয়া নম্বরে হয়তো কোপ পড়ল না, তারা ওই অন্যায্য বাড়তিটুকু নিয়েই নিঃশব্দে সামনের দিকে এগিয়ে গেল!
দ্বিতীয় প্রতিবেদনটির (‘নবম শ্রেণিতে কম নম্বরের জের মাধ্যমিকে, বিক্ষোভ নিবেদিতা স্কুলে’, ২২-৭) ক্ষেত্রে ঘটনাটি উল্টো। নিবেদিতা স্কুলে নবম শ্রেণিতে কড়া করে খাতা দেখায় নম্বর কম ওঠে শিক্ষার্থীদের। স্কুল কর্তৃপক্ষ ন্যায়সঙ্গত পথেই সেই নম্বর যেমনটা ছিল, তেমনটাই পাঠিয়ে দেন পর্ষদে। প্রশ্ন ওঠে, বেশি নম্বর না দিন, তা বলে কম দেবেন? বহু স্কুল, যাদের ফলাফল বোর্ডের পরীক্ষায় খুবই ভাল হয়, তারা কিন্তু নবম ও দশম শ্রেণির পরীক্ষায় নিজেদের ছাত্রছাত্রীদের খাতা একটু কড়া করে দেখে ছাত্রছাত্রীদেরই ভালর জন্য। কেননা নম্বর একটু কম পেলে আরও ভাল করার প্রচেষ্টা ও জেদ তাকে বোর্ডের পরীক্ষায় অনেকটা এগিয়ে দেবে। ফলাফলেও দেখা যায়, নবম-দশমের প্রাপ্ত নম্বরের তুলনায় এই সব স্কুলের পরীক্ষার্থীরা বোর্ডের পরীক্ষায় বেশ অনেক নম্বর বাড়াতে পেরেছে। দুর্ভাগ্যবশত, এ বছরে ফলাফল নির্ধারণ পদ্ধতিটি বদলে যাওয়ায় সেই প্রক্রিয়াটি আপাত ভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
এখন কথা হল, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত সাফল্য কারা চাইলেন— যাঁরা নম্বর বাড়িয়ে তাদের অন্যায় ভাবে সাফল্যের সুখ এনে দিলেন, না কি যাঁরা ঠিক নম্বর পাঠিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নম্বর কম হওয়ার কারণে বিক্ষোভের
মুখে পড়লেন?
অর্কমিতা মজুমদার
কলকাতা-৩
আয়া দৌরাত্ম্য
‘বেআইনি, সরকারি হাসপাতালে তবু চলছে আয়া রাজ’ (১৫-৭) শীর্ষক প্রতিবেদন পড়ে একটা অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ল। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে আমার এক আত্মীয়া জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির সময় থেকেই বিভিন্ন আয়া যোগাযোগ করতে থাকে। সফল অস্ত্রোপচারের পর রোগীকে বেডে দেওয়া হলে রোগীর বাড়ির লোকদের আয়া রেখে বাইরে চলে যেতে বলা হয়। আমরা বলি, আয়া বাবদ বাড়তি খরচ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। রোগীর কাছে বাড়ির লোকই থাকবেন। আয়ারা বলেন, “ও সব গ্রামের দিকে হয়, এখানে এ সব চলবে না। কী ভাবে স্যালাইন খুলতে হয়, কখন কী ওষুধ খাওয়াতে হবে এবং কোথায় কী ভাবে মলম লাগাতে হবে, এগুলো আপনারা জানেন?” আমরা বলেছিলাম, সে তো নার্সদের কাজ! তা শুনে এক আয়াদিদি বলেন, এ সব কাজ নার্সরা করেন না, ওঁদের অন্য অনেক কাজ আছে। নিখরচায় সরকারি চিকিৎসা পেতে এসে প্রতি দিন ৫০০ টাকা করে তিন দিনে আয়া বাবদ খরচ দিতে হয় ১৫০০ টাকা, যা মেটাতে আমার ওই আত্মীয়াকে তাঁর একমাত্র সাইকেলটিকে বেচে দিতে হয়। কারণ, তাঁকে অস্ত্রোপচারের আগে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা বাইরে থেকে করাতে হয়েছিল, যার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। গ্রাম থেকে শহরে নিখরচায় সরকারি চিকিৎসা করতে আসা এ রকম অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা আয়া, অ্যাম্বুল্যান্স এবং বাইরে থেকে বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার অর্থ জোগাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যান। আয়া সমস্যা মেটাতে সরকারকে অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে। তা না হলে সহায় সম্বলহীন প্রান্তিক মানুষেরা সরকারি চিকিৎসার সুবিধাটুকু নিতে পারবেন না। শূন্য পদে দ্রুত নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ করে এর সমাধান করা যেতে পারে। অথবা, আয়াদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও বেতন দিয়ে রাখা যেতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।
শ্রীমন্ত দাস
সিংটী, হুগলি
জাল ওষুধ
তুষারকান্তি চৌধুরীর লেখা ‘প্রতারণা চলছে’ (১২-৭) চিঠির বিষয়ে কিছু জানাতে চাই। বেশ কিছু মাস আগে হাওড়ার বেলুড়ে ওষুধের তারিখ পরিবর্তন করার একটা কারবার ধরা পড়ে। স্থানীয় দোকান বা অনলাইনে নামী অ্যাপ থেকে ওষুধ নিলে বাতিল ওষুধ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। ওষুধ বা দোকানের বিষয়ে সন্দেহ হলে বা যাঁরা এই ধরনের ওষুধ বিক্রি করছেন, তাঁদের থেকে কিনতে হলে সব সময় রসিদ নেওয়া দরকার। আর কোনও রকম অভিযোগ করতে হলে যোগাযোগ করতে হবে ডিরেক্টরেট অব ড্রাগস কন্ট্রোল-এ।
প্রণব কুমার কুন্ডু
হিন্দমোটর, হুগলি
ধোঁয়া পরীক্ষা
আমতা, উদয়নারায়ণপুর, জয়পুর ও পেঁড়ো থানার কোনও পেট্রল পাম্পে দু’চাকা বা চার চাকার গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা কেন্দ্র নেই। এই সব এলাকার চালকদের পরীক্ষা করতে ছুটতে হয় বাগনান বা উলুবেড়িয়ায়। তাই, আমতায় ধোঁয়া পরীক্ষা কেন্দ্র চাই।
দীপংকর মান্না
আমতা, হাওড়া
ফর্ম-১৬
আয়কর দফতরের স্ব-ব্যবস্থাপনায় যে ফর্ম-১৬ দেওয়া হচ্ছে, তাতে মোট আয়কর আর প্রদেয় আয়করের উল্লেখ থাকলেও প্রদত্ত ও ফেরতযোগ্য আয়করের কোনও উল্লেখ থাকে না। ওই বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকলে ফর্ম-১৬ আরও কার্যকর আর সহজ হবে বলে আমার মনে হয়।
দেবাশীষ চক্রবর্তী
কলকাতা-১১৫